Plane Crash in Ahmedabad

শেষ মুহূর্তে মরিয়া চেষ্টা, বিকল্প যন্ত্রও চালিয়ে দেন দুই পাইলট! ৩২ সেকেন্ডে কী কী ঘটেছিল? কী আছে ১৫ পাতার রিপোর্টে

এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং সংস্থার ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি অহমদাবাদ থেকে লন্ডনের অদূরে গ্যাটউইকের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। রানওয়ে ছাড়ার ৩২ সেকেন্ডের মধ্যে তা ভেঙে পড়ে। মৃত্যু হয় ২৬০ জনের।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫ ০৯:০১
Share:

অহমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। —ফাইল চিত্র।

এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১ বিমানটি গত ১২ জুন অহমদাবাদে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। রানওয়ে ছাড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিমানের দু’টি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত করছে এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। তারা শনিবার যে ১৫ পাতার তদন্ত-রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, শেষ মুহূর্তে কী ভাবে ইঞ্জিন চালু করার মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন দুই পাইলট। সক্রিয় করেছিলেন বিকল্প এক যন্ত্রও। কিন্তু লাভ হয়নি। একটি ইঞ্জিন চালু হলেও দ্বিতীয় ইঞ্জিনটি আর চালানো যায়নি। ফলে মুহূর্তের মধ্যে বিমানটি সামনের বহুতলে ধাক্কা খায় এবং ভেঙে পড়ে।

Advertisement

এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং সংস্থার ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি অহমদাবাদ থেকে লন্ডনের অদূরে গ্যাটউইকের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। যাত্রী এবং বিমানকর্মী-সহ তাতে ছিলেন মোট ২৪২ জন। বিমানটি নিকটবর্তী একটি ডাক্তারদের হস্টেল ভবনে ধাক্কা খায় এবং প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফারিত হয়। এই বিমানে ছিলেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিও। বিমানের এক জন মাত্র যাত্রী বেঁচে গিয়েছেন। সরকারি হিসাবে দুর্ঘটনায় মোট মৃতের সংখ্যা ২৬০। এএআইবি-র রিপোর্টে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা গিয়েছে।

  • বিমান রানওয়ে ছাড়ার পরেই ইঞ্জিন-১ এবং ইঞ্জিন-২ বিকল হয়ে যায়। ইঞ্জিনে জ্বালানি পৌঁছোনো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আচমকাই। জ্বালানির সুইচ ‘রান’ (চালু) থেকে ‘কাটঅফ’ (বন্ধ)-এ চলে এসেছিল এক সেকেন্ডের মধ্যে।
Advertisement
  • ককপিটের যে অডিয়ো রেকর্ডিং তদন্তকারীদের হাতে এসেছে, তাতে শোনা গিয়েছে, এক পাইলট অপরকে প্রশ্ন করছেন, ‘‘কেন তুমি বন্ধ করে দিলে (জ্বালানি)? অন্য জন উত্তর দেন, ‘‘আমি করিনি।’’ তবে কোন পাইলট কী বলেছিলেন, তা স্পষ্ট হয়নি। এর পর কোন পাইলট বিপদবার্তা (মে ডে কল) পাঠান, তা-ও বোঝা যায়নি।
  • ইঞ্জিন চালু করার জন্য এর পর ‘রাম এয়ার টার্বাইন’ চালু করা হয়। একটি ছোট একটি বিকল্প যন্ত্র। যা ইঞ্জিনে স্বয়ংক্রিয় ভাবে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ (হাইড্রলিক পাওয়ার) পৌঁছে দেয়। উড়ন্ত বিমানের বাইরে থেকে এই যন্ত্র দেখা যায়। ছোট পাখার মতো ব্লেড থাকে এতে। বিমানবন্দর থেকে যে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, তাতে এই যন্ত্র বেরিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে।
  • ইঞ্জিন দ্রুত চালু করার চেষ্টা করছিলেন পাইলটেরা। একটি ইঞ্জিন আংশিক চালু হয়েও গিয়েছিল। কিন্তু অন্য ইঞ্জিনটি কোনও ভাবেই চালু করা যায়নি।
  • বিমানের থ্রাস্ট লিভারগুলি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু ব্ল্যাক বক্সের তথ্য বলছে, বিমান ছাড়ার পর থ্রাস্ট ঠিকঠাকই ছিল। এটি আচমকা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার দিকেই ইঙ্গিত করে।
  • বিমান ওড়ার সময়ে জ্বালানি ঠিকঠাক ছিল। জ্বালানি ভরার সময়ে কোনও গোলমাল হয়নি। তদন্তে তেমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
  • বিমান ওড়ার সময়ে ফ্ল্যাপ সেটিং এবং গিয়ারের অবস্থাও স্বাভাবিক ছিল বলে মত তদন্তকারীদের। দুর্ঘটনার সময়ে বিমানের গতিপথে কোনও পাখি আসেনি। আবহাওয়াও পরিষ্কার ছিল। দৃশ্যমানতায় কোনও সমস্যা হয়নি।
  • দুই পাইলটই শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের শারীরিক দিক থেকে কোনও ত্রুটি ছিল না।
  • প্রাথমিক ভাবে অন্তর্ঘাতের কোনও প্রমাণও মেলেনি। তবে এফএএ জ্বালানির সুইচে গোলমাল সম্পর্কে পরিচিত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রেখেছিল। এয়ার ইন্ডিয়া তা পরিদর্শন করেনি। বিমানের ওজন এবং ভারসাম্য স্বাভাবিক ছিল। তাতে কোনও বিপজ্জনক পণ্যও ছিল না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement