Red Fort Blast

‘পালাতে পারলেও লুকোতে পারবে না’! এক্স হ্যান্ডলে বার্তা জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের, তার ৪২ মিনিট পরই বিস্ফোরণ দিল্লিতে

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ দ্বিতীয় বার তাদের এক্স হ্যান্ডলে বার্তা দেয়— পালাতে পারলেও, লুকোতে পারবে না। আর এখান থেকেই তদন্তকারীরা মনে করছেন, পলাতক উমরের উদ্দেশেই এই বার্তা দিয়েছিল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৫ ১২:১৮
Share:

দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত উমর উন নবি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

১০ নভেম্বর, দুপুর ১টা ৪০

Advertisement

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ তাদের এক্স হ্যান্ডলে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে বলা হয়েছিল, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক-সহ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা হলেন আরিফ নিসার দার, ইয়াসিরউল আশরফ, মকসুদ অহমেদ দার, মৌলবি ইরফান আহমেদ, জমীর আহমেদ, চিকিৎসক মুজ়াম্মিল আহমেদ গনাই, চিকিৎসক আদিল। একই সঙ্গে ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, এই ঘটনায় জড়িত আরও কয়েক জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আন্তঃরাজ্য জঙ্গি মডিউল-এর খোঁজ মিলেছে। যাদের যোগ রয়েছে জইশ-ই-মহম্মদ এবং গজ়ওয়াত-উল-হিন্দ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে।

এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির ৪ ঘণ্টা পর জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ তাদের এক্স হ্যান্ডলে আরও একটি বার্তা দেয়। এই বার্তা দেওয়া হয়েছিল ১০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে। এক লাইনে সেই বার্তা দিয়েছিল পুলিশ। সেখানে বলা হয়েছিল— ‘ইউ ক্যান রান, বাট ইউ ক্যান নট হাইড’ অর্থাৎ তুমি পালাতে পারলেও, লুকোতে পারবে না। আর সেই বার্তার ৪২ মিনিট পর, অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে লালকেল্লার সামনে গাড়ি-বিস্ফোরণ হয়। আর এখান থেকেই প্রকাশ্যে আসে ‘ডক্টরস মডিউল’-এর বিষয়টি। দেখা গিয়েছে, যার সূত্র জুড়ে রয়েছে পুলওয়ামা, শ্রীনগর, ফরিদাবাদ এবং সহারনপুরের সঙ্গে।

Advertisement

তদন্তকারীদের একটি সূত্রের খবর, ১০ নভেম্বর দুপুর ১টা ৪০ মিনিট জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ যখন প্রথম প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে, সেই সময় বিস্ফোরকভর্তি হুন্ডাই আই ২০ গাড়ি নিয়ে দিল্লির এ রাস্তা-ও রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত চিকিৎসক উমর। তার ঠিক আগের দিন অর্থাৎ ৯ নভেম্বর রাতেই তিনি জানতে পেরে গিয়েছিলেন যে, ফরিদাবাদে তাঁর সঙ্গী তথা চিকিৎসক মুজ়াম্মিলের ঠিকানায় তল্লাশি চালায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। মুজ়াম্মিলের ঠিকানায় তল্লাশি অভিযানের খবর পেয়েই উমর গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। ১০ নভেম্বর যখন প্রথম বার বার্তা দেয় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, তত ক্ষণে উমর বুঝতে পেরেছিলেন যে কোনও সময় তিনি ধরা পড়তে পারেন। ফরিদাবাদ থেকে দিল্লি পৌঁছে প্রথমে ওখলা শিল্পাঞ্চলে যান উমর। সেখানে অনেক ক্ষণ গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করেন। তার পর সেখান থেকে কনট প্লেস পৌঁছোন দুপুরে। সেখান থেকে আবার দুপুর ৩টে ১৯ মিনিটে লালকেল্লার কাছে একটি মসজিদের সামনে গাড়ি পার্ক করেন। গাড়ির ভিতরেই বসে অপেক্ষা করছিলেন।

১০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ দ্বিতীয় বার তাদের এক্স হ্যান্ডলে বার্তা দেয়— পালাতে পারলেও, লুকোতে পারবে না। আর এখান থেকেই তদন্তকারীরা মনে করছেন, পলাতক উমরের উদ্দেশেই এই বার্তা দিয়েছিল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। কারণ, জইশের জঙ্গি মডিউলের হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ যে দাবি করেছিল, সেই মডিউলের নেতৃত্বে ছিলেন উমরই। হরিয়ানার ফরিদাবাদে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের অভিযান এবং তারও আগে চিকিৎসক মুজ়াম্মিল এবং চিকিৎসক আদিলের গ্রেফতারির খবর পেয়ে গিয়েছিলেন উমর। সূত্রের খবর, সঙ্গীদের গ্রেফতারির খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন উমর। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের দ্বিতীয় বার্তার ১৩ মিনিট পর অর্থাৎ ৬টা ২৩ মিনিটে লালকেল্লার পার্কিং থেকে গাড়ি নিয়ে উমর বেরিয়ে পড়েন। তদন্তকারীরা মনে করছেন, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের দ্বিতীয় বার্তা দেখেছিলেন উমর। সেই বার্তা দেখার আগে পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা ৪ মিনিট পার্কিংয়ে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। আর এখান থেকেই তদন্তকারীদের একাংশের সন্দেহ, আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন উমর। পার্কিং থেকে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে তাঁর গাড়িতে বিস্ফোরণ হয়।

দিল্লি পুলিশের পাশাপাশি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থারও (এনআইএ) একটি সূত্র দাবি করেছে, লালকেল্লার সামনে যে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটি ঘাতক উমরের আতঙ্কিত হয়ে পড়ার ফলেই হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার ওই সূত্রের দাবি, আই ২০ গাড়িতে যে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেই বিস্ফোরক পাকাপাকি ভাবে বিস্ফোরণের জন্য তৈরি ছিল না। তদন্তকারী সংস্থাগুলির পরিভাষায় ওই বিস্ফোরক ছিল ‘প্রিম্যাচিওর, নট ফুললি ডেভেলপড’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement