NERVOUS BREAKDOWN

টেনশনে হাত পা ঠান্ডা, কাঁপুনি বা ঘন ঘন বাথরুমে ছোটা? কী করে সামলাবেন?

পরীক্ষা বা কাজে অংশ নেওয়ার আগে কাঁপুনি দেয়, ভয় করে বা বারবার বাথরুমে ছুটতে হয়? এই সমস্যা যদি আপনার বা পরিচিত কারও থেকে থাকে, তবে এ থেকে বাঁচার উপায়ও কিন্তু খুব কঠিন নয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:১৬
Share:

নার্ভাস ব্রেকডাউন কাটাতে মনের পরিচর্যা বেশি প্রয়োজন। ছবি: আইস্টক।

গুরুত্বপূর্ণ কোনও পরীক্ষা বা কাজে অংশ নেওয়ার আগে কাঁপুনি দেয়, ভয় করে বা বারবার বাথরুমে ছুটতে হয়? কখনও বা হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, বা খুব ঘাম হতে থাকে? এই নিয়ে কি হীনমন্যতায় ভুগতে থাকেন অনেকেই। তবে চিকিৎসকদের মতে, এই নিয়ে অকারণ ভয়ের কিছু নেই। বরং যত না শারীরিক সমস্যা এটি, তার চেয়েও বেশি সমস্যা মনের। ‘নার্ভাস ব্রেকডাউন’-কে সহজেই জব্দ করতে পারবেন। যদি মেনে চলেন বিশেষ কিছু নিয়ম।

Advertisement

তবে তার আগে জেনে নেওয়া জরুরি, আপনি কেন শিকার হন এই সমস্যার? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘‘কর্মব্যস্ততার যুগে নানা বিষয় নিয়ে আমাদের মানসিক চাপ বেশি থাকে। তার উপর সকলের চাপ নেওয়ার ক্ষমতাও সমান হয় না। স্নায়বিক চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকলে নানা শারীরিক জটিলতা ঘটে। এই চাপ ক্রমশ বাড়তে বাড়তে হঠাৎই নার্ভ ফেল করেন মানুষ। নার্ভাস ব্রেকডাউনের ক্ষেত্রে তাই অত্যধিক চাপ, চাপজনিত স্নায়বিক সমস্যা এগুলোই দায়ী।’’

এই সমস্যা যদি আপনার বা পরিচিত কারও থেকে থাকে, তবে এ থেকে বাঁচার উপায়ও কিন্তু খুব কঠিন নয়। বরং চিকিৎসকদের মতে, এই ধরনের অসুখে একটু যত্নবান হতে পারলে, মানসিক দিক থেকে শক্তিশালী হতে পারলে অচিরেই ফল মেলে। দেখে নিন নার্ভাস ব্রেকডাউন থেকে বাঁচার উপায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: ক্যানসার-খরচে লাগাম টানবে সচেতনতাই

নার্ভাস ব্রেকডাউনে আক্রান্তের চার পাশের মানুষকেও হতে হয় অনেক সচেতন। ছবি:আইস্টক।

উপসর্গ

মাথার ভিতর নানা দুশ্চিন্তা পাক খেতে থাকলে তা স্নায়ুর উপর চাপ ফেলে। এ থেকে হতে পারে নার্ভাস ব্রেকডাউন। অনেকেরই নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা পরীক্ষার সময় ঘন ঘন পেটের সমস্যা দেখা যায়। এমন হলে বুঝতে হবে, নার্ভাস ব্রেকডাউনের খুবই প্রাথমিক স্তরে রয়েছেন। ঘন ঘন হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা, অজানা ভয় ও হৃদস্পন্দন বেড়ে গেলে তাও নার্ভাস ব্রেকডাউনের অন্যতম উপসর্গ। কোনও শক বা আঘাত থেকে কিংবা বড় কোনও কাজ এলে অনেকেরই মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়। ভয়ে বমি পর্যন্ত হতে পারে। কাঁপুনি দিয়ে জ্বরও আসে কোনও কোনও ক্ষেত্রে। টেনশনে খিদে কমে যাওয়া বা শ্বাসকষ্টও নার্ভাস ব্রেক ডাউনের লক্ষণ।

বাঁচার উপায়

প্রথমেই মনে জোর পাবেন এমন কোনও কিছু ভাবুন। এই সময় রোগীর চেয়েও তার চারপাশের মানুষদের ভূমিকা বড় হয়ে দাঁড়ায়। এই সময় আক্রান্তের সাফল্য নিয়ে কথা বলুন বেশি করে। যে কাজে তিনি যাচ্ছেন, তা তাঁর কাছে কোনও কঠিন বিষয়ই নয়, এই উপলব্ধি আসতে সাহায্য করুন। সন্তান এমন অসুখের শিকার হয় অনেক সময় তার উপর তৈরি হওয়া প্রত্যাশার চাপ থেকে। এটা আগে সরিয়ে ‌ফেলুন। যে কোনও সাফল্যের চেয়ে তার সুস্থ জীবন অধিক বাঞ্ছনীয়। মন ভাল করতে পারে অথবা চাপ কমাতে পারে এমন কিছুতে মন দিন। বিশেষ করে কোনও খেলা বা মজার ভিডিয়ো দেখুন। টেনশন হতে পারে এমন বিষয়ে যাতে আক্রান্ত ভাবতেই না পারেন, সে দায়িত্ব কিছুটা তাঁর নিজের মানুষদের উপরেও বর্তায়। তাঁর প্রতি প্রত্যাশার চাপ তৈরি না করে বরং নানা কাজে সে কতটা সফল এবং তার সাফল্যে আপনারা কতটা খুশি সেটা বোঝান। প্রয়োজনে ব্যর্থতাও যে খুব একটা সমস্যায় ফেলবে না— সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করুন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কিছুতেই টেনশন কাটছে না কিংবা এই ধরনের সমস্যার প্রকোপ দিনে দিনে বাড়ছে দেখলে মনোবিদের সাহায্য নিন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে যত দ্রুত চিকিৎসা করানো যায়, ততই এই অসুখ থেকে মুক্তি ঘটে। কারও কারও ক্ষেত্রে বিশেষ কিছুতে ভয় থাকে। জোর করে ভয় কাটাতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। বরং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সে পথে এগোন।

ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন