গুড়ের ভেষজ গুণের কারণে তা ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার হয়। ছবি: শাটারস্টক।
বাতাসে হিমেল ছোঁয়াচ আসা মানেই মানেই ঘরে ঘরে মোয়া, পায়েস, পিঠে-পুলির সম্ভার। আর শীতের মিষ্টি মানেই তাতে যোগ হবে নলেন গুড়! কিন্তু জানেন কি, কেবল রান্নায় স্বাদ বাড়াতেই নয়, নলেন গুড়ের ভেষজ নানা গুণের জন্য এটি নানা অসুখের প্রতিরোধক হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। এমনকি, আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এই নলেন গুড় দিয়ে তৈরি হয় নানা ওষুধও।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, শীতকালে প্রতি দিন ডায়েটে একটু নলেন গুড় রাখতে পারলে শরীরিক উপকার হয়। সে কথা মানে নিচ্ছেন পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহও। তাঁর কথায়, ‘‘নলেন গুড়ের আয়রন শরীরের নানা কাজে লাগে। শুধু তাই-ই নয়, চিনি বা কৃত্রিম চিনির চেয়ে অনেক বেসি উপতাকী গুড়। চিনিতে ক্যানসার হয় কি না, তা নিয়ে সারা দুনিয়ায় নানা গবেষণা চললেও ও চিকিৎসকরা দু’ভাগে ভাগ হলেও গুড় যে চিনির চেয়ে সার্বিক ভাবে বেশি উপকারী এ নিয়ে কারও কোনও দ্বিমত নেই।’’
খাদ্যে স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি নলেন গুড় আরও কী কী শারীরিক উপকারে আসে, জানেন?
আরও পড়ুন: ওজন নিয়ে চিন্তিত? এই কাজের জন্যই মেদ বাড়ছে না তো?
গুড় হজমে সাহায্যকারী উৎসেচকের শক্তি বাড়িয়ে দেয়। ফলে খাবার পর প্রতি দিন একটু করে গুড় খেলে খাবার দ্রুত হজম হয়, বদহজমজনিত সমস্যাও থাকে না। পিরিয়ডের সমস্যা মেটাতে গুড় খুব কার্যকর। পিরিয়ড শুরুর দিন কয়েক আগে ও পিরিয়ডের সময় যে নানা শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হন মেয়েরা, গুড় সে সমস্যার অন্যতম সমাধান। হরমোনের সমতা রক্ষা ছাড়াও গুড় এনডোরফিন্স বা ‘হ্যাপি হরমোন’-এর ক্ষরণ বাড়িয়ে এই সমস্যাগুলিকে দূরে রাখে।
আরও পড়ুন: কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে যা আপনাকে করতেই হবে
চিনির অন্যতম সেরা বিকল্প গুড়। চিনির কার্বোহাইড্রেট শরীরে জমে যায় বেশি। তা থেকে নানা অসুখএর সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু গুড়ের কার্বোহাইড্রেটের ক্ষেত্রে সে সমস্যা নেই। তা রক্তের সঙ্গে দ্রুত মিশে যেতে পারে আবার রক্তে বেশি ক্ষণ থাকতেও সক্ষম। তাই হঠাৎ গ্লুকোজ কমে যাওয়ার ভয় থাকে না। গুড় শীতকালে শরীরকে গরম রাখতেও সাহায্য করে। ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে লড়তে সুবিধা হয়। গুড়ে থাকা আয়রন আমাদের হিমোগ্লোবিনে আয়রনের ভারসাম্য বজায় রাখে। রক্তাল্পতার রোগীদের ডায়েটে তাই গুড় খুব উপকারী।