Pumpkin Seed

কেন এই সব্জির বীজ রাখতেই হবে ডায়েটে

ডায়েটে ওই বীজ থাকলে তা ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৮:১৪
Share:

এই সবজির বীজ বেটে ব্যবহার করতে পারেন রান্নাতেও।

করোনা আবহে আরও বেশি করে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানোর দিকে নজর দিতে বলেছেন চিকিৎসকেরা। বেশি করে শাকসব্জি খেতে বলছেন তাঁরা। কিন্তু এমন একটি সব্জি রয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যেটির বীজ ফেলে দেন অনেকে। পুষ্টিবিদরা কিন্তু বলছেন, ডায়েটে ওই বীজ থাকলে তা ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।

Advertisement

কুমড়ো। খেতে চান না অনেকেই। কুমড়োর বীজ এই সব্জিটির অন্যতম উপাদান। অনেকে আবার কুমড়ো খেলেও বীজ ফেলে দেন। কিন্তু এই বীজেই রয়েছে শরীরের অপরিহার্য ফ্যাট। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎস কুমড়োর বীজ। শরীরে নিজে থেকে এটি তৈরি হয় না। তাই খাবারের মাধ্যমে এটি যাতে শরীরে যায়, খেয়াল রাখতেই হবে সে দিকে। রোজ অল্প কয়েকটা কুমড়োর বীজ খেতে পারলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন সমৃদ্ধ এই বীজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রদাহ কমাতে এবং ওবেসিটি বা স্থূলত্ব রুখতেও সাহায্য করে।

কুমড়োর বীজে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে। মাত্র ১০০ গ্রাম বীজে থাকে ১৮ গ্রাম ফাইবার। এটি এক জন মানুষের দৈনিক চাহিদার ৭২ শতাংশই পূরণ করে। ফাইবার কোলনের ভাল ব্যাক্টিরিয়ার খাদ্যের জোগান দেয়। ‘মাইক্রোবিয়াল ব্যালান্স’ বা অণুজীবের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ক্রনিক রোগেরও উপশম করে এই বীজ।

Advertisement

আরও পড়ুন: আমার কি করোনা হয়েছে, বুঝব কী উপায়ে?​

ভাল কোলেস্টেরল, অর্থাৎ হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল) এবং খারাপ কোলেস্টেরল, অর্থাৎ লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এলডিএল)— এই দুই ধরনের কোলেস্টেরলই তৈরি হয় লিভারে। এলডিএল ধমনীর প্রাচীরে তৈরি হওয়ায় ব্লকেজ তৈরি হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। যেখানে এইচডিএল খারাপ কোলেস্টেরল সরিয়ে রিসাইকেলে সাহায্য করে। কুমড়োর বীজ এই দুইয়ের ভারসাম্য রক্ষা করে।

আরও পড়ুন: যক্ষ্মার টিকায় কি জব্দ হতে পারে করোনা? কী বলছেন বিজ্ঞানী ও ডাক্তাররা?​

পিইউএফএ এবং লিপোফিলিক অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকার কারণেও এই বীজ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকার কারণে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ধ্বংস করে এটি। পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী বলেন, “ফ্রি র‌্যাডিক্যাল কোষের প্রোটিন, ডিএনএ, সেল মেমব্রেনের ইলেকট্রন ‘চুরি’ করে, অক্সিডেশনের মাধ্যমে। এই ফ্রি র‌্যাডিক্যালের মোকাবিলা করে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট।” মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, বীজে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকলে সেটি রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। বিশেষ করে বর্ষার সময় ঠান্ডা লাগা, ফ্লু, ক্লান্ত হয়ে পড়া, এই সমস্যাগুলির হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

কুমড়োর বীজে থাকে সেরোটনিন, এই নিউরোকেমিক্যালকে বলা হয় প্রাকৃতিক ঘুমের ওষুধ। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ওষুধের পরিবর্তে এটি খেতে পারেন। এ ছাড়াও আর্থারাইটিসের ব্যথায় এই বীজের তেল মালিশ করলে খানিকটা উপশমও মেলে। এই বীজে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকার কারণে সেটি প্রস্টেটের সমস্যাকে দূরে রাখে। ইনসুলিনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রয়েছে কুমড়োর বীজের। কারণ এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।

তবে আরও একটা কারণে এই বীজের গুরুত্ব আছে। কুমড়োর বীজে রয়েছে কিউকারবিটিন, এ ছাড়াও ভিটামিন সি থাকার কারণে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এটি।

কী ভাবে খেতে হবে এটি?

কম ক্যালরি, ভরপুর পুষ্টিতে ভরা কুমড়োর বীজ ফেলে দেবেন না। বরং বীজ বেটে রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহার করতে পারেন কাঁচা স্যালাডে কিংবা সুপেও। বীজ অল্প সেঁকে স্ন্যাক্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারলে সব থেকে ভাল এমনটাই জানালেন পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন