ঘর গোছাতে সাহায্য করবে ‘চার বাক্স নীতি’। বিষয়টি কী ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
পুজো-পার্বণের আগে ঘর পরিষ্কারের ধূম পড়ে যায়। আর সে সব মিটতেই শুরু হয় আর এক চিন্তা। কোথায়, কোনটা গুছিয়ে রাখা হবে? অনুষ্ঠান মানেই নতুন পোশাক থেকে টুকিটাকি নতুন জিনিস। ফলে এক সময় পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, ঘরে লোকে থাকবে কোথায়, আর জিনিসই বা রাখা হবে কোথায়, তা ভাবা দুষ্কর হয়ে ওঠে।
এই সমস্যার সঙ্গে কম-বেশি সকলেই পরিচিত। উৎসব অনুষ্ঠানে নয়, জামা থেকে রকমারি জিনিস কেনা হয় বছরভর। পুরনো জিনিসটি নষ্ট হওয়া বা বাতিলের খাতায় নাম লেখানোর আগেই এসে যায় নতুন জিনিস। কিন্তু বাড়ি তো আড়ে-বহরে বাড়ে না। ফলে এক দিকে যেমন জায়গার সঙ্কুলান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তেমনই সেই সব জিনিস গোছানোও ঝক্কির বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
ঘরদোর গোছগাছের বিষয়ে পরামর্শদাতারা বলছেন, সমস্যা হয় যে জিনিসগুলি ফেলে দেওয়ার সেগুলিও ঘরে গুছিয়ে রাখলে। দোকান থেকে কেনা খাবারের সঙ্গে যে কৌটো, কাঁটা-চামচ দেওয়া হয়, সেগুলি কিন্তু ব্যবহারের পরে ফেলে দেওয়ার কথা। অথচ বেশির ভাগ বাড়িতেই হেঁশেল থেকে টেবিল এই সব জিনিসেই ভরে থাকে। ফেলে দেওয়ার যোগ্য জলের বোতলেই জল খাওয়া হয়, ফলের বাক্স থেকে আইসক্রিমের সুন্দর কোনও প্লাস্টিকের বাক্স— সবটাই রয়ে যায় ঘরের আনাচ-কানাচে। তার উপর যে কোনও জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখার প্রবণতা বাড়ি অগোছালো করে তোলে।
চার-বাক্স নীতি
কোনটি রাখবেন, কোনটি ফেলবেন, কোনটি থাকবে হাতের কাছে— এই ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে ‘ফোর বক্স’ পদ্ধতি। চারটি বাক্স দিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী জিনিস বাছাই এবং ব্যবহারের পন্থা ঘরদোর পরিচ্ছন্ন রাখতে তৈরি এই নীতি বলছে, চার ধরনের জিনিসের জন্য চারটি বাক্সের দরকার।
প্রথম বাক্স
এটি হল জরুরি জিনিস রাখার জন্য। দৈনন্দিন যে সমস্ত জিনিসপত্র দরকার হয়, সেগুলি গুছিয়ে একটি বাক্সে রাখতে হবে। পোশাক থেকে গ্যাজেট, মেকআপ, বাসনপত্র— সব ক্ষেত্রেই একই যুক্তি মাথায় রেখে জিনিস বাছাই করতে হবে। মোদ্দা কথা, নিত্যব্যবহার্য জিনিস থাকবে এতে। সেগুলি একটি বাক্সে বা এক জায়গায় বার করে প্রয়োজন মতো সেগুলি সাজিয়ে ফেলুন।
দ্বিতীয় বাক্স
যে জিনিস রোজ ব্যবহার হয় না, অথচ ভবিষ্যতে কাজে লাগবে বা যে জিনিসের সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে— সেগুলি রাখুন দ্বিতীয় বাক্সে। তার মধ্যে পছন্দের অলঙ্কার থাকতে পারে, পোশাক থাকতে পারে। আবার সন্তানের খেলনা, জামাও হতে পারে এই তালিকার অঙ্গ। এই ধরনের জিনিস গুছিয়ে আলমারির এক পাশে বা বাড়ির এমন কোথাও রেখে দিতে পারেন, যেখানে নিয়মিত হাত পড়বে না। এতে ঘর গোছানোর ঝক্কিও কমবে।
তৃতীয় বাক্স
তিন নম্বর বাক্সটি ভরতে হবে এমন জিনিস দিয়ে, যা হয়তো মায়াবশত রেখে দিয়েছিলেন। অথচ তা না থাকলেও ক্ষতি নেই। শখ করে কেনা জামা ছোট হয়ে গিয়েছে, আসবাব বাড়তি, কড়াই পুরনো হয়ে গিয়েছে। এগুলি যাঁদের প্রয়োজন, তাঁদের দিয়ে দিন। বিশেষত ছোটদের খেলনা থেকে বড়দের জামাকাপড়, শাড়ি, গয়না— এমন অনেক কিছু ব্যবহারের উপযোগী থাকলেও, বাড়িতে ব্যবহৃত হবে না। সেগুলি রেখে দেওয়া মানেই ঘর বোঝাই হওয়া। অথচ তা দিয়ে দিলে, অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারেন।
চতুর্থ বাক্স
শেষ বাক্সটি হল ফেলে দেওয়ার জিনিসের জন্য। রেস্তরাঁ থেকে আসা প্লাস্টিকের কৌটো, পানীয় জলের এক বার ব্যবহারযোগ্য বোতল, পুরনো হয়ে যাওয়া ননস্টিক বাসন, আর যা একেবারেই কাজে লাগবে না, সেগুলি ফেলে দিন। এমন অনেক জিনিস থাকে যেগুলি বার করে দিলে, বাড়িতে জায়গা বাড়বে। গোছানোর কাজও এতে হালকা হবে।