দীপাবলিতে পোষ্যের যত্ন। ছবি: সংগৃহীত।
দীপাবলি মানেই আলো, শব্দ আর উচ্ছ্বাস। কিন্তু আপনার কাছে যা আনন্দের, আপনার পোষ্যের কাছেই তা আতঙ্কের। বাজির শব্দে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পোষ্যেরা ভয়ে গুটিয়ে যেতে থাকে। পালিয়ে যায়, লুকিয়ে পড়ে কিংবা কাঁপতে থাকে, যা তাদের হার্টের জন্য আদপে ভাল নয়। তাই আগে থেকেই নিজের পোষ্যকে সেই সময়ের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। একটু যত্ন আর পরিকল্পনা পোষ্যের মানসিক শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে। তার জন্য কয়েকটি কৌশল মেনে চলতে পারেন।
পোষ্যকে আগে থেকে প্রস্তুত করুন
পোষ্যের চিকিৎসকেরা বিশেষ এক কৌশলের প্রয়োগ করার পরামর্শ দেন। কালীপুজোর সময়ে হঠাৎ হঠাৎ বাজির শব্দ পোষ্যকে চমকে দিতে পারে। পোষ্য তখন আতঙ্কিত হওয়ার পাশাপাশি কৌতূহলীও হয়ে পড়ে। তারা এই আওয়াজের উৎসের কথাও যেমন জানে না, এই বিকট শব্দের সঙ্গে পরিচিতও নয়। তাই ভয়টা দ্বিগুণ হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে নতুন এই পন্থার প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। কালীপুজোর আর এক সপ্তাহ বাকি। সেই সময়ে ঘরের নিরাপদ বলয়ের মধ্যে মাঝেমধ্যে বাজির শব্দের সঙ্গে পরিচয় ঘটান। ফোনে বা ল্যাপটপে হালকা করে বাজির শব্দ চালিয়ে রাখুন। পোষ্য সেটির সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেলে আওয়াজ ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকুন। এতে পোষ্যের মনে হবে, এমন বাজির আওয়াজ আতঙ্কের নয়।
ঘর হোক নিরাপদ আশ্রয়
উৎসবের রাতে পোষ্যকে বাইরে না রেখে ঘরের ভিতরে রাখুন। জানালা-দরজা বন্ধ রাখলে শব্দ ও আলো কিছুটা কমে আসে। ঘরের এক কোণে নরম বিছানা, পরিচিত খেলনা আর প্রিয় কম্বল রেখে একটা ছোট্ট ‘কমফোর্ট জ়োন’ তৈরি করে দিন। তাতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না পোষ্য। সম্ভব হলে হালকা সুগন্ধিতে ভরিয়ে তুলুন ঘর।
পোষ্যকে রাখুন নিরাপদ স্থানে। ছবি: সংগৃহীত।
মৃদু শব্দে শান্তি
টেলিভিশন বা মৃদু সুরের গান চালিয়ে রাখলে বাইরের তীব্র শব্দ ঢেকে যায়। এতে পোষ্যের মন কিছুটা স্থির থাকে।
সঙ্গ দিন, স্পর্শ প্রয়োজন
ভয় পেলে পোষ্যকে একা ফেলে রাখবেন না। আপনার উপস্থিতি ও আলতো স্পর্শ ওদের আশ্বস্ত করে। শরীরের উষ্ণতা ও নিরাপত্তা অনুভব করবে।
খাওয়াদাওয়ার দিকে নজর দিন
ভয় পেলে অনেক সময় পোষ্য খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেয়। তাই সময়মতো খাবার ও জল দিতে থাকুন। হালকা গরম খাবার ও পরিষ্কার জল তাদের শরীর ও মনকে স্বস্তি দেয়।
নিজের আচরণ শান্ত রাখুন
অনেক ক্ষেত্রে আপনার আচরণে প্রভাবিত হয় পোষ্য। আপনি যদি আতঙ্কিত হয়ে থাকেন, বা অস্থির হয়ে পড়েন, তা হলে পোষ্যও দেখাদেখি অশান্ত হয়ে উঠবে। আপনি মৃদু গলায় ধীরে ধীরে কথা বলে তাদের ভয় দূর করার চেষ্টা করুন। তাতে তারা বুঝবে, এই আওয়াজের সঙ্গে ভয়ের কোনও যোগ নেই।
প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
যদি পোষ্য খুব ভয় পায় বা কাঁপতে থাকে, সে ক্ষেত্রে পশুচিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা জরুরি। প্রয়োজনে তিনি হালকা ওষুধ সুপারিশ করতে পারেন।