Pakistan’s Nuclear Capabilitiy

হাতে ‘আবাবিল’, লক্ষ্য ‘পারমাণবিক ত্রয়ী’ তৈরি! ‘অর্ধেক বিশ্বকে ধ্বংস’ করার মুরোদ কি আদৌ আছে পাকিস্তানের?

পাক সেনাপ্রধানের পরমাণু হুমকি নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলে হইচই পড়ে গিয়েছে। কিন্তু পাক সেনাপ্রধান মুনির পরমাণু শক্তি নিয়ে আস্ফালন দেখালেও আদৌ কি পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতা রয়েছে ইসলামাবাদের? কী মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৫ ১৩:৫৪
Share:
০১ ১৯

নিজেদের সঙ্গে অর্ধেক বিশ্বকে ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান তথা ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। মনে করিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানও পরমাণু শক্তিধর দেশ। যদিও সেই কড়া বার্তা পাকিস্তান থেকে নয়, আমেরিকা থেকে দিয়েছেন মুনির।

০২ ১৯

আমেরিকা সফরে গিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান। পাকিস্তানে ভারতের সেনা অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তৎপরবর্তী দুই দেশের সংঘাতের পরে দু’মাসে এই নিয়ে দু’বার আমেরিকায় গেলেন মুনির। সেখানে ফ্লরিডার একটি জনসভা থেকে তিনি পরমাণু হামলার হুঁশিয়ারি দেন।

Advertisement
০৩ ১৯

আমেরিকা থেকে ভারতকেও বার্তা দিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান। ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভারতে হামলার হুমকি দিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, মুনিরের মন্তব্য নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে নয়াদিল্লিও। সোমবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এ নিয়ে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তা সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

০৪ ১৯

ভারত জানিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানের পরমাণু হুমকির সামনে মাথা নত করা হবে না। পাক সেনাপ্রধানের পারমাণবিক হুমকিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেও নিন্দা করেছে ভারত। সেই সঙ্গে ‘বন্ধু দেশ’ আমেরিকার মাটি থেকে এমন বার্তা দুর্ভাগ্যজনক বলেও জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

০৫ ১৯

পাক সেনাপ্রধানের পরমাণু হুমকি নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলে হইচই পড়ে গিয়েছে। কিন্তু পাক সেনাপ্রধান মুনির পরমাণু শক্তি নিয়ে আস্ফালন দেখালেও আদৌ কি পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতা রয়েছে ইসলামাবাদের? কী মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা?

০৬ ১৯

স্টকহলম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর (এসআইপিআরআই)-এর ২০২৫ সালের বর্ষপুস্তক অনুযায়ী, জানুয়ারি পর্যন্ত পাকিস্তানের হাতে মজুত পরমাণু অস্ত্র রয়েছে প্রায় ১৭০টি। গত বছরও এই সংখ্যা একই ছিল।

০৭ ১৯

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটি পরমাণু মাধ্যাকর্ষণ বোমা নিক্ষেপে সক্ষম বিমান, ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র এবং ডুবোজাহাজ থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে একটি ‘পারমাণবিক ত্রয়ী’ তৈরির উপর কাজ করছে। এসআইপিআরআই রিপোর্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, আগামী দশকে তাদের পরমাণু অস্ত্রাগার প্রসারিত করতে পারে পাকিস্তান।

০৮ ১৯

পাকিস্তানের হাতে সবচেয়ে উন্নত যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, তা হল ‘শাহিন-৩’। ২,৭৫০ কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রটি ভারতের যে কোনও জায়গায় আঘাত হানতে সক্ষম।

০৯ ১৯

‘শাহিন-৩’-এর পাশাপাশি পাকিস্তানের হাতে রয়েছে ‘আবাবিল’ ক্ষেপণাস্ত্রও। শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রটি একাধিক পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। যদিও ভারতের হাতে রয়েছে ‘এস-৪০০’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা ওই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে শক্তিশালী সুরক্ষা প্রদান করে।

১০ ১৯

বিশেষজ্ঞেরা এ-ও দাবি করেছেন, পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র অস্ত্রাগারের প্রভাব পড়শিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ‘অর্ধেক বিশ্বকে ধ্বংসের’ ক্ষমতা ইসলামাবাদের নেই। মুনির নিজেদের পরমাণু ক্ষমতাকে বাকি বিশ্বের কাছে অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরেছেন বলেও দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

১১ ১৯

ওই বিশেষজ্ঞদের মতে পাক ক্ষেপণাস্ত্র ‘শাহিন-৩’-এর পাল্লা ২,৭৫০ কিলোমিটার। ক্ষেপণাস্ত্রটি পশ্চিম এশিয়ার কিছু অংশ এবং সমগ্র ভারতকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারলেও সেই ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছোনোর ক্ষমতা নেই ইসলামাবাদের।

১২ ১৯

অন্য দিকে, ২,২০০ কিলোমিটার পাল্লার ‘আবাবিল’ ক্ষেপণাস্ত্রটি এখনও গবেষণাধীন। ক্ষেপণাস্ত্রটির নির্ভরযোগ্যতা সঠিক ভাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়নি এখনও। পাকিস্তানের ‘ফতেহ-২’, ‘শাহিন-২’ এবং ‘ঘোরি-২’ এর মতো স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলিরও আঞ্চলিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

১৩ ১৯

এ ছাড়াও ইসলামাবাদের হাতে ডুবোজাহাজ থেকে নিক্ষেপযোগ্য বাবর-৩ (পাল্লা ৪৫০ কিলোমিটার), আবদালি (পাল্লা ২০০-৩০০ কিলোমিটার), গজনভি (পাল্লা ২৯০-৩২০ কিলোমিটার) এবং নাসের-এর (পাল্লা ৭০ কিলোমিটার) মতো স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।

১৪ ১৯

পাকিস্তান সীমিত সংখ্যক পরমাণু মাধ্যাকর্ষণ বোমার পরিপূরক হিসাবে ‘রাদ’ নামের ‘এয়ার-লঞ্চড ক্রুজ় মিসাইল’-এর (এএলসিএম) দু’টি সংস্করণ তৈরি করছে। যদিও দু’টির কোনওটাই এখনও তৈরি হয়নি।

১৫ ১৯

মনে করা হয়, পাকিস্তানের হাতে থাকা মিরাজ-৩ এবং মিরাজ-৫ বিমান দু’টি পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। এসআইপিআরআই রিপোর্ট বলছে, স্থানীয় ভাবে তৈরি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান ভবিষ্যতে এই ভূমিকা পালন করতে পারে।

১৬ ১৯

এসআইপিআরআই রিপোর্টে এ-ও বলা হয়েছে, জলপথে পরমাণু শক্তি বৃদ্ধির জন্যও জোরকদমে চেষ্টা চালাচ্ছে ইসলামাবাদ। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে পরীক্ষিত বাবর-৩ ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তান নৌবাহিনীর তিনটি ‘আগোস্তা-৯০বি’ ডুবোজাহাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

১৭ ১৯

তবে সেগুলি দিয়েও ‘অর্ধেক বিশ্বকে ধ্বংস’ করার ক্ষমতা পাকিস্তানের আছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞেরা। যদিও এর বাইরে পাকিস্তানের হাতে লুকোনো কোনও পরমাণু অস্ত্র রয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।

১৮ ১৯

পাকিস্তানে ভারতের সেনা অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তৎপরবর্তী দুই দেশের সংঘাতের পরে দু’মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার আমেরিকায় গিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান। ফ্লরিডার টাম্পায় শিল্পপতি আদনান আসাদ আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে বলেন, ‘‘আমরা একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ। যদি মনে হয় আমরা ধ্বংসের পথে এগোচ্ছি, তবে অর্ধেক বিশ্বকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ধ্বংস হব।’’

১৯ ১৯

পর্যবেক্ষকদের মতে, আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে তৃতীয় কোনও দেশকে এ হেন পরমাণু হুমকির নজির বিরল। সেই আবহেই পাকিস্তানের হাতে থাকা পরমাণু অস্ত্রের হিসাব কষতে শুরু করেছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।

ছবি: সংগৃহীত এবং প্রতীকী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement