Radhikaraje Gaekwad

কোটি কোটির মালিক, বাস করেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাসাদে! সাংবাদিকতাও করেছেন বর্তমানের ‘সবচেয়ে সুন্দরী’ রানি

ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ অম্বানীর ১৫ হাজার কোটির বাড়ি অ্যান্টিলিয়া তৈরি হয়েছে ৪৮ হাজার ৭৮০ বর্গফুট এলাকায়। অন্য দিকে, ‘লক্ষ্মী বিলাস প্যালেস’ তৈরি হয়েছে ৩ কোটি ৪ লক্ষ ৯২ হাজার বর্গফুট জায়গার উপরে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৩৪
Share:
০১ ২০

দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ অম্বানী। মুকেশ এবং তাঁর স্ত্রী নীতা থাকেন ১৫,০০০ কোটি টাকার প্রাসাদোপম বাসভবন অ্যান্টিলিয়ায়। অ্যান্টিলিয়া বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়িগুলির মধ্যে অন্যতম।

০২ ২০

কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, অম্বানীদের গগনচুম্বী প্রাসাদ অ্যান্টিলিয়া তুচ্ছ লক্ষ্মী বিলাস প্যালেসের কাছে।

Advertisement
০৩ ২০

ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ অম্বানীর ১৫ হাজার কোটির বাড়ি অ্যান্টিলিয়া তৈরি হয়েছে ৪৮ হাজার ৭৮০ বর্গফুট এলাকায়। অন্য দিকে, লক্ষ্মী বিলাস প্যালেস তৈরি হয়েছে ৩ কোটি ৪ লক্ষ ৯২ হাজার বর্গফুট জায়গার উপরে।

০৪ ২০

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত প্রাসাদের তকমাও পেয়েছে লক্ষ্মী বিলাস প্যালেস। শুধু অ্যান্টিলিয়া নয়, আয়তনে এটি বাকিংহাম প্যালেসের থেকেও অনেক বড়। কারণ, বাকিংহাম প্যালেস তৈরি ৮ লক্ষ ২৯ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে। কিন্তু কে এই লক্ষ্মী বিলাস প্যালেসের মালিক?

০৫ ২০

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত এই প্রাসাদ কিন্তু রয়েছে ভারতেই। মালিকও একজন ভারতীয়। গুজরাতের বরোদার গায়কোয়াড় পরিবারের মালিকানাধীন এই লক্ষ্মী বিলাস প্যালেস। একসময় গায়কোয়াড়েরা বরোদায় রাজত্ব করতেন।

০৬ ২০

১৭০টি ঘর-সহ এই প্রাসাদটি ১৮৯০ সালে মহারাজা সয়াজিরাও গায়কোয়াড় তৈরি করেন। এই বাড়ি তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। এই প্রাসাদ সংলগ্ন একটি গল্ফ কোর্সও রয়েছে। বর্তমানে লক্ষ্মী বিলাসের মূল্য প্রায় ২৪,০০০ কোটি টাকা।

০৭ ২০

স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এখনও গায়কোয়াড় পরিবারের বেশ নামডাক রয়েছে। সমরজিৎসিংহ গায়কোয়াড় ও তাঁর স্ত্রী রাধিকারাজে গায়কোয়াড় বর্তমানে এই প্রাসাদের মালিক।

০৮ ২০

কে এই মহারানি রাধিকারাজে গায়কোয়াড়? গুজরাতের ওয়াঙ্কানারে ১৯৭৮ সালে ১৯ জুলাই বরোদার মহারানি রাধিকারাজের জন্ম হয়। রাজপরিবারের সদস্য হলেও তাঁর বাবা রঞ্জিত সিংহ ঝালা আইএএস অফিসার হওয়ার জন্য রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে আসেন।

০৯ ২০

রাধিকারাজের প্রাথমিক শিক্ষা দিল্লিতে। পরে অজমেরের মায়ো কলেজ গার্লস স্কুলে ভর্তি হন। দিল্লির লেডি শ্রী রাম কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

১০ ২০

পড়াশোনার শেষে সাংবাদিক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন রাধিকারাজে। প্রায় তিন বছর সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০০২ সালে গায়কোয়াড় রাজপরিবারের বংশধর তথা বরোদার মহারাজা সমরজিৎসিংহ গায়কোয়াড়ের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর।

১১ ২০

সমসাময়িক সময়ের ‘সবচেয়ে সুন্দরী’ ভারতীয় রানি হিসাবে বিবেচিত হন রাধিকারাজে। ৪৭ বছর বয়সি রাধিকারাজে দুই সন্তানের মা। স্বামী এবং সন্তানদের নিয়ে লক্ষ্মী বিলাস প্রাসাদেই বসবাস করেন তিনি।

১২ ২০

অন্য দিকে, সমরজিৎসিংহ বরোদার প্রাক্তন রাজা রঞ্জিত সিংহ প্রতাপ সিংহ গায়কোয়াড় এবং রানি শুভাঙ্গিনীরাজের একমাত্র পুত্র। ১৯৬৭ সালের ২৫ এপ্রিলে তাঁর জন্ম। রঞ্জিত সিংহের মৃত্যুর পর বরোদার রাজা হিসাবে অভিষেক হয় সমরজিতের। ২০১২ সালের মে মাসে রাজার মুকুট পান তিনি। সমরজিতের রাজ্যাভিষেক উপলক্ষে সে বছরেরই জুন মাসে বিশাল আয়োজন হয়।

১৩ ২০

তবে সমরজিৎ রাজা হওয়ার আগে থেকেই তাঁর বাবা এবং কাকার মধ্যে লক্ষ্মী বিলাস প্যালেসের মালিকানা এবং সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে বিবাদ চলছিল। রঞ্জিত সিংহের মৃত্যুর পর আইনি বিবাদ শুরু হয় কাকা-ভাইপোর মধ্যে। ২০১৩ সালে দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকা মামলায় জিতে পাকাপাকি ভাবে লক্ষ্মী বিলাস প্যালেসের একমাত্র মালিক হন সমরজিৎ।

১৪ ২০

ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ ছিল সমরজিতের। পড়াশোনার পাশাপাশি তাই ক্রিকেটেরও প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন তিনি। দেহরাদূনের দূন স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে ক্রিকেট নিয়েই নিজের কেরিয়ার গড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সমরজিৎ। রঞ্জি ট্রফিতেও খেলেছেন ব্যাটার সমরজিৎ। টপ অর্ডার ব্যাটার হিসাবে ছ’টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে খেলেছেন তিনি। খেলা শেষে সমরজিৎ বরোদা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির পদে বসেন।

১৫ ২০

ক্রিকেট ছাড়াও গল্ফ খেলায় পটু ছিলেন সমরজিৎ। গল্ফ খেলার প্রতি ঝোঁক থাকায় লক্ষ্মী বিলাস প্যালেসের মধ্যে একটি গল্ফ কোর্স এবং ক্লাব তৈরি করিয়েছিলেন তিনি। গুজরাত এবং উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে মোট ১৭টি মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন সমরজিৎ।

১৬ ২০

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমরজিৎ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার মালিক। ২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সমরজিৎ। তবে ২০১৭ সাল থেকে তিনি রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় নন।

১৭ ২০

লক্ষ্মী বিলাস প্যালেসের মালিকানা ছাড়াও মোতিবাগ স্টেডিয়াম, মহারাজা ফতেহ সিংহ মিউজ়িয়াম-সহ প্রাসাদের কাছাকাছি ৬০০ একর জমি এবং রাজা রবি বর্মার আঁকা বেশ কয়েকটি ছবির মালিকানা রয়েছে সমরজিতের কাছে। বহু কোটি টাকার সোনা এবং রুপোও রয়েছে তাঁর কাছে।

১৮ ২০

সেই সমরজিৎসিংহ এবং তাঁর স্ত্রী রাধিকারাজেই বর্তমানে লক্ষ্মী বিলাস প্রাসাদের মালিক। প্রচুর জায়গার উপর ওই বিরাট প্রাসাদ বানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ব্রিটেনের নামী স্থপতি মেজর চার্লস মন্তকে।

১৯ ২০

কোলাপুর আর দ্বারভাঙ্গার প্রাসাদ বানিয়ে বিখ্যাত হয়েছিলেন চার্লস। তাই বরোদার মহারাজার প্রস্তাবেও তিনি রাজি হয়েছিলেন। তবে মোটা পারিশ্রমিকও নেন। কারণ কাজটা ছিল তাঁর অন্যান্য কাজের থেকে কঠিন।

২০ ২০

তিন কোটি চার লক্ষ ৯২ হাজার বর্গফুটের একখানা বিশাল রাজপ্রাসাদকে দাঁড় করানো মুখের কথা ছিল না। এ হেন প্রাসাদটি প্রায় পুরোটাই তৈরি করে ফেলার পর ব্রিটিশ স্থপতির হঠাৎ মনে হয় প্রাসাদটি খুব শীঘ্রই ভেঙে পড়বে। প্রবল অপরাধবোধ থেকে তিনি কাজ অসম্পূর্ণ রেখে আত্মহত্যা করেন। যদিও ওই প্রাসাদ আজও নিজের জায়গা থেকে টলেনি। চার্লসের বাকি থাকা কাজ সম্পূর্ণ করেন ব্রিটেনেরই আরও এক স্থপতি রবার্ট ফেলোজ ক্রিসহোম।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement