Dessert Recipes

বাড়ি বাড়ি হোক পিঠে নিয়ে বিলাসিতা! মিষ্টি তো বটেই, ঝালও যেন বাদ না পড়ে

এখন কর্মব্যস্ততার মাঝে পিঠে বানানো প্রায় ভুলতেই বসেছি আমরা। এই সংক্রান্তিতে হয়ে যাক পিঠে-বিলাসিতা! হোম শেফ শমিতা হালদার দিলেন এমনই কিছু অজানা পিঠের রেসিপির হদিস।

Advertisement

শমিতা হালদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৭
Share:

শহরের লোকজন আবার পুলি আর পাটিসাপটার ভক্ত। ছবি: সংগৃহীত।

অগ্রহায়ণ মাসে নবান্ন হওয়ার পরেই বাজারগুলি নতুন গুড়ের গন্ধে ম ম করে। এই গুড়ের সঙ্গে চালের গুঁড়ো মিশিয়ে তা সেঁকে, ভেজে, ভাপিয়ে তৈরি হয় নানা ধরনের পিঠে। ও পার বাংলায় পিঠের ব্যাপক বিস্তার। সারা বছরই ঢাকায় গরম পিঠে পাওয়া যায়। এ পার বাংলায় আবার পৌষ সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করেই পিঠেপুলি বানানোর চল। গরম তাওয়ায় তেলে চালের গুঁড়ো ছিটে দিয়ে তৈরি হয় ছিটা পিঠা। দেখতে অনেকটা সরুচাকলির মতো। গ্রামবাংলায় এই পিঠা খাওয়া হয় মাংসের ঝোল বা ডিম ভাজা দিয়ে। শহরে লোকজন আবার পুলি আর পাটিসাপটার ভক্ত। চালের গুঁড়ো গরম জলে দিয়ে মণ্ড তৈরি করে সেই দিয়ে চাকতি বানিয়ে ভিতরে পুর দিয়ে তৈরি হয় পুলিপিঠে। এই পুলি দুধে সেদ্ধ করলে দুধপুলি, ক্ষীরে সেদ্ধ হলে ক্ষীরপুলি আর ভেজে তুলে নিলেই হয় ভাজা পুলি।

Advertisement

দিদা-ঠাম্মিদের হাতে বানানো পিঠের স্বাদ ভোলার নয়। শীত এলেই উঠোনে সারা দিন বসে বসে পিঠে বানাতেন তাঁরা। তবে এখন কর্মব্যস্ততার মাঝে পিঠে বানানো প্রায় ভুলতেই বসেছি আমরা। এই সংক্রান্তিতে আপনার বাড়িতেও হোক পিঠে নিয়ে বিলাসিতা! হোম শেফ শমিতা হালদার দিলেন এমনই কিছু অজানা পিঠের হদিস। জানালেন রন্ধনপ্রণালীও।

পালো পিঠা চেখে দেখেছেন কখনও?

চন্দন কাঠ পিঠা বা পালো পিঠা

Advertisement

উপকরণ:

ঘন করা দুধ: ১লিটার

গোবিন্দভোগ চাল: ১/২ কাপ

নারকেল কোরা: ১/২ কাপ

নলেন গুড়: স্বাদমতো

এলাচ: ২ টি

তেজপাতা: ১ টি

কাজুবাদাম: স্বাদমতো

ঘি: ১ চা-চামচ

প্রণালী: গোবিন্দভোগ চাল দু’ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে সামান্য জল দিয়ে মিক্সিতে এক বার ঘুরিয়ে নিন। মিশ্রণটি দানাদারের মতো হবে। এ বার দুধ ভাল করে ফুটিয়ে নিয়ে চালের মিশ্রণটি দিয়ে অনবরত নাড়তে হবে। চাল যখন প্রায় সেদ্ধ হয়ে আসবে, তখন নারকেল কোরা ও নলেন গুড় দিয়ে আরও কিছু ক্ষণ নাড়তে হবে। সবশেষে এলাচ গুড়ো ও তেজপাতা মিশিয়ে দিতে হবে। মিশ্রণটি পাক ধরে এলে গ্যাসের আঁচ বন্ধ করে দিন। থালায় ঘি মাখিয়ে মিশ্রণটি ঢেলে দিয়ে শক্ত হতে দিতে হবে। তার পর ছুরির সাহায্যে বরফির আকারে কেটে কাজু বাদাম আর পেস্তা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন চন্দনকাঠ পিঠে।

পূর্ববাংলায় পান্থরাজ পিঠে বেশ জনপ্রিয়।

পান্থরাজ পিঠে

পুরের জন্য উপকরণ

ঘিয়ে ভাজা সেমাই: ১ কাপ

খোয়া ক্ষীর: ১/২ কাপ

নারকেল কোরা: ১ কাপ

গুড়: ১/২ কাপ

এলাচ গুড়ো: ১/২ চামচ

নুন: স্বাদমতো

কাজু –কিশমিশ কুচি: ১/২ কাপ

ব্যাটারের উপকরণ:

চালের গুঁড়ো: ১ কাপ

সুজি: ১/২ কাপ

চিনি: ১/২ কাপ

ঘি: ২-৩ চামচ

ডিম: ১ টা

দুধ: ১ কাপ

প্রণালী:

কড়াইতে ঘি দিয়ে সেমাই, ক্ষীর, নারকেল কোরা, গুড়, কা়জু, কিশমিশ দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। প্রথমে মিশ্রণটি বেশ তরল থাকবে। সময় নিয়ে জ্বাল দিলে মিশ্রণটি একটা মণ্ডে পরিণত হবে। এ বার একটি পাত্রে ডিম, চালের গুঁড়ো, সুজি, চিনি, নুন আর দুধ দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। খেয়াল রাখবেন, মিশ্রণটি যেন খুব ঘন বা খুব পাতলা না হয়। তার পর একটি ননস্টিক তাওয়ায় ঘি লাগিয়ে হাতা দিয়ে গোল করে এই ব্যাটার দিন। মিনিটখানেক পরে এক দিকে পুর দিয়ে পিঠে মুড়ে নিয়ে দু’পাশটা ভাল করে ভেজে নিন।

ঝাল পিঠার চল পশ্চিমবঙ্গে কম।

ঝাল পিঠা

পুরের উপকরণ

ভেটকি মাছ: ৫০০ গ্রাম

পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ

লঙ্কা কুচি: ২ চামচ

আদা বাটা: ১ চা চামচ

জিরে গুঁড়ো: ১ টেবিল চামচ

ধনে গুঁড়ো: ১ টেবিল চামচ

লঙ্কা গুঁড়ো: ১ টেবিল চামচ

শাহি গরম মশলা: আধ টেবিল চামচ

আর লাগবে

চাল গুঁড়ো: ১ কাপ

সুজি: ১/২ কাপ

ময়দা: ১/২ কাপ

দুধ: ১/২ কাপ

নুন: স্বাদমতো

প্রণালী: কাঁটা ছাড়া ভেটকি মাছ নুন-হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা লাল করে ভেজে, একে একে সব শুকনো মশলা নিশিয়ে কষিয়ে নিন। সেদ্ধ করা মাছ দিয়ে নাড়াচাড়া করে নিন। ঝুরো ঝুরো হয়ে এলে পুর নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। একটি পাত্রে চালের গুঁড়ো, সুজি, ময়দা, নুন আর দুধ মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এ বার এই মিশ্রণ দিয়ে পাটিসাপটা বানিয়ে তার মধ্যে মাছের পুর দিয়ে মুড়িয়ে নিন। তৈরি হয়ে যাবে ঝাল পিঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন