Asia Cup 2025

দুবাইয়ে সমঝোতাপত্র! পাক টিমের কাছে ক্ষমা চেয়ে ম্যাচ রেফারির দায়িত্বে পাইক্রফ্ট, সুর কিছু নরম করে তদন্তের আশ্বাস জয়ের আইসিসি-র

প্রথমে পাকিস্তান বোর্ডের কোনও দাবি মানা হবে না বলে অনড় থাকলেও শেষ পর্যন্ত সুর নরম করল আইসিসি। পাকিস্তানের কাছে ক্ষমা চাইতে হল অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকেও। তার পরেই তিনি ম্যাচ রেফারির দায়িত্বে থাকতে পারলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৩১
Share:

(বাঁ দিক থেকে) টসের সময় দুই অধিনায়ক সলমন আলি আঘা, মহম্মদ ওয়াসিমের সঙ্গে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট। ছবি: এক্স।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রথম অনুরোধগুলি না রাখলেও পরে সমঝোতার রাস্তায় গেল জয় শাহের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি)। আগের সিদ্ধান্ত মতো অ্যান্ডি পাইক্রফ্টই ম্যাচ রেফারি হিসাবে থাকলেন। কিন্তু ক্ষমা চাইতে হল তাঁকে। টসের সময় তাঁর সঙ্গে হ্যান্ডশেকও করলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সলমন আলি আঘা। আইসিসি রবিবারের ম্যাচের ঘটনা নিয়ে তদন্তের আশ্বাসও দিল।

Advertisement

আইসিসি প্রথমে পাকিস্তানের কোনও দাবি মানেনি। এর ফলে এশিয়া কাপে সলমনদের খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। পিসিবির নির্দেশে হোটেলেই ছিলেন ক্রিকেটারেরা। সলমনদের কিট ব্যাগ বাসে তোলা হয়ে গেলেও ক্রিকেটারেরা কেউ হোটেল থেকে বেরোননি। পিসিবি কর্তারা দীর্ঘ আলোচনার পর সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে খেলার সবুজ সঙ্কেত দেন দলকে। তার পর ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট নাগাদ হোটেল থেকে স্টেডিয়ামের উদ্দেশে রওনা দেন সলমনেরা। ম্যাচের সময় ১ ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে হয়। ভারতীয় সময় রাত ৮.৩০ মিনিটে টস হয়েছে। খেলা শুরু হয়েছে রাত ৯টায়।

এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বে উঠতে হলে আমিরশাহির বিরুদ্ধে জিততেই হবে সলমনদের। এই ম্যাচ জিততে না পারলে এ বারের এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যাবেন তাঁরা। গ্রুপ ‘এ’ থেকে ভারতের সঙ্গে পরের পর্বে চলে যাবে আমিরশাহি।

Advertisement

পাকিস্তান প্রথমে দাবি করে পাইক্রফ্টকে এশিয়া কাপ থেকেই সরিয়ে দিতে হবে। পাকিস্তানের একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আইসিসি দাবি না মানলে আমিরশাহির বিরুদ্ধে খেলবেন না সলমনেরা। বয়কটের হুঁশিয়ারি দেয় পিসিবি। আইসিসি নরম না হওয়ায় শেষে দাবি করা হয়, তাদের কোনও ম্যাচের দায়িত্বে পাইক্রফ্টকে রাখা যাবে না। সেই দাবিও প্রথমে মানেনি আইসিসি।

যখন এশিয়া কাপ বয়কট করার কথা ভাবছে পাকিস্তান, তখনই সমঝোতার রাস্তা বেছে নেওয়া হয়। দুবাইয়ে পাকিস্তানের টিম ম্যানেজার, কোচ, অধিনায়কের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পাইক্রফ্ট। হ্যান্ডশেক বিতর্ক শেষ করতে সমাধানসূত্র বার করেন আইসিসি কর্তারা। সলমনের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন পাইক্রফ্ট। তাতে খেলতে রাজি হয় পাকিস্তান। পাইক্রফ্টকেই ম্যাচ রেফারি রেখে দেওয়া হয়। জয় শাহের আইসিসি-র পক্ষ থেকেও পাকিস্তানকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা রবিবারের ঘটনার তদন্ত করতে ইচ্ছুক। রবিবারের ম্যাচ নিয়ে পাকিস্তান অভিযোগ করেছিল, পাইক্রফ্ট আইন ভেঙেছেন।

পিসিবির দাবি, পাইক্রফ্ট হ্যান্ডশেক বিতর্কের জন্য সলমনদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে আইসিসির একটি সূত্র জানিয়েছে, পাইক্রফ্ট ওই বিতর্কের জন্য ক্ষমা চাননি। তিনি শুধু একটি ভুল বোঝাবুঝির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। পাইক্রফ্টের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা ঠিক নয়। তিনি শুধু নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। তা থেকেই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। দুই দলের অধিনায়ক হ্যান্ডশেক করবে কি না, তা ঠিক করতে পারেন না ম্যাচ রেফারি। অধিনায়কেরা পরস্পরকে প্রথম একাদশের তালিকা দেবেন কি না, তা-ও ম্যাচ রেফারির দেখার কথা নয়। খেলার বাইরের কোনও বিষয় তাঁর দেখার কথা নয়। এ সব দেখার দায়িত্ব ভেন্যু ম্যানেজার এবং প্রতিযোগিতার আয়োজকদের। তাই পাইক্রফ্টকে ওই ঘটনার জন্য দায়ী করা যায় না।

এ ছাড়া তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে পিসিবির পক্ষ থেকে তা পুরোপুরি ঠিক নয়। আইসিসির ওই সূত্রের বক্তব্য, তাদের তদন্ত করার আর কিছু নেই। এখনও পর্যন্ত পিসিবি যে সব তথ্যপ্রমাণ দিয়েছে, সে সবের ভিত্তিতে তদন্ত সম্পূর্ণ। পিসিবি যদি মনে করে আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে, তা হলে আইসিসি খতিয়ে দেখবে। তবে পিসিবিকে তাদের দাবির সপক্ষে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ দিতে হবে।

এশিয়া কাপের আয়োজক এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। এখন এসিসির সভাপতি নকভিই। আইসিসির বক্তব্য অনুযায়ী, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে অধিনায়কেরা হ্যান্ডশেক করবেন কিনা বা তাঁরা পরস্পরকে প্রথম একাদশের তালিকা দেবেন কিনা এসব দেখার দায়িত্ব এসিসির। সংস্থার প্রধান হিসাবে নকভিরও দায় রয়েছে। দায় এশিয়া কাপের ডিরেক্টর আন্দ্রে রাসেলেরও। ঘুরিয়ে পিসিবি চেয়ারম্যানের কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছেন আইসিসি কর্তারা।

রবিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব টসের সময় পাক অধিনায়ক সলমন আঘার সঙ্গে হাত মেলাননি। ম্যাচ শেষে ভারতীয় ক্রিকেটারদের কেউ পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাননি। এর পর থেকে শুরু হয় নাটক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement