ঋষভ পন্থ। —ফাইল চিত্র।
আরও একটা ম্যাচ। আরও একটা ব্যর্থতা ঋষভ পন্থের। ২৭ কোটির উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের অবদান এ বার ৭ রান! অধিনায়কের দুর্দশা দেখে বিরক্তিতে মুখ ঘুরিয়ে বারান্দা ছেড়ে ভিআইপি বক্সে ঢুকে গেলেন লখনউ সুপার জায়ান্টস কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েন্কা।
ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ পরিস্থিতির জন্য ন’দিন স্থগিত ছিল আইপিএল। বিরতিও ফর্মে ফেরাতে পারল না পন্থকে। তিনি ব্যাট করার সময় উইকেটের পিছনে ছিলেন ঈশান কিশন। ভারত ‘এ’ দলের হয়ে ইংল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন তিনি। ‘শত্রুর’ উপস্থিতিতেই আউট হলেন সেই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে। শ্রীলঙ্কার এশান মালিঙ্গার বল মারবেন না ধরে খেলবেন ঠিক করতে পারলেন না। তাঁর দ্বিধাগ্রস্ত শটে ক্যাচ চলে গেল বোলারের হাতে। ৬ বলে ৭ রান করে সাজঘরে ফিরলেন পন্থ। তার মধ্যে একটি চার অবশ্য মেরেছেন।
সোমবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে পন্থ যখন ব্যাট করতে নেমেছিলেন, তখন লখনউয়ের ইনিংস বেশ ভাল জায়গায়। প্রথম উইকেটের জুটিতে মিচেল মার্শ এবং এডেন মার্করাম ১০.৩ ওভারে ১১৫ রান তুলে দিয়েছেন। কিছুটা ধীরে সুস্থে নিজের এবং দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল পন্থের কাছে। কাজে লাগাতে পারলেন না। এ বারের আইপিএলে ১২টি ম্যাচ খেলে ব্যাট হাতে লখনউ অধিনায়কের অবদান ১৩৫ রান। গড় ১২.২৭। স্ট্রাইক রেট ১০০। অর্ধশতরান একটি। এই পারফরম্যান্স যে পন্থসুলভ নয়, তা বোঝার জন্য ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।
অনেক আশা নিয়ে আইপিএলের নিলাম থেকে পন্থকে কিনেছিলেন গোয়েন্কা। এমন এক জন ক্রিকেটারকে অধিনায়ক হিসাবে তিনি চেয়েছিলেন, যিনি দলের জন্য ভাববেন। দলের জন্য খেলবেন। পন্থকে দলে নিয়ে তিনি এক ঢিলে তিন পাখি মারতে চেয়েছিলেন। দক্ষ উইকেটরক্ষক, আগ্রাসী ব্যাটার এবং অধিনায়ক। পন্থ প্রত্যাশাপূরণ করতে পারছেন না। প্রায় প্রতি ম্যাচেই আউট হচ্ছেন শট নির্বাচনের ব্যর্থতায়। ব্যাটিংয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাব স্পষ্ট। উইকেটের পিছনে দস্তানা হাতেও চেনা ফর্মে নেই। এই সব কিছুর প্রভাব পড়ছে তাঁর নেতৃত্বেও।
২৭ কোটির পন্থের বেহাল দশা দেখে গোয়েন্কা আগেও হতাশা প্রকাশ করেছেন। সোমবারও লুকিয়ে রাখতে পারলেন না। একানা স্টেডিয়ামের ভিআইপি বক্সের বারান্দায় দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলেন। ওপেনিং জুটির আগ্রাসী মেজাজ দেখে বেশ খুশি দেখাচ্ছিল তাঁকে। আশায় ছিলেন মজবুত ভিতের উপর হয়তো ঝড় তুলবেন অধিনায়ক। কিন্তু পন্থের বেহাল দশা দেখে গোয়েন্কার মুখে হাসি উবে গেল। ব্যাজার মুখে বক্সের মধ্যে ঢুকে গেলেন। নিলামের পর পন্থকে পেয়ে সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত ছিলেন কলকাতার শিল্পপতি। আইপিএলে সেই পন্থই তাঁকে সবচেয়ে বেশি হতাশ করছেন। যে ফর্মে আছেন তাতে অধিনায়ক না হলে হয়তো লখনউয়ের প্রথম একাদশে জায়গাই হত না পন্থের।