Shubman Gill

‘ইয়ং টিম’ থেকে শুভমনের ‘গান টিম’! সিরাজ থাকলে কাজ সহজ হয়ে যায়, বললেন ভারত অধিনায়ক

ওভালে জেতার পর টেস্ট ক্রিকেটের প্রশংসা করলেন শুভমন গিল। জয়ের নেপথ্যে আসল কাণ্ডারি যে বোলারেরাই সেটাও জানাতে ভুললেন না। পাশাপাশি জানিয়ে গেলেন, এই সিরি‌জ়‌ থেকে তিন শব্দের একটি শিক্ষা পেয়েছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ১৯:১৫
Share:

শুভমন গিল। ছবি: পিটিআই।

অধিনায়ক হিসাবে প্রথম টেস্ট সিরিজ়‌ ছিল তাঁর কাছে। ইংল্যান্ডের মাটিতে সেই সিরিজ়‌ ড্র রাখতে পেরেছেন তিনি। নিজেও সিরিজ়‌ের সেরা ব্যাটার হয়েছেন। ওভালে জেতার পর সেই টেস্ট ক্রিকেটের প্রশংসা করলেন শুভমন গিল। জয়ের নেপথ্যে আসল কাণ্ডারি যে বোলারেরাই সেটাও জানাতে ভুললেন না। পাশাপাশি জানিয়ে গেলেন, এই সিরি‌জ়‌ থেকে তিন শব্দের একটি শিক্ষা পেয়েছেন।

Advertisement

ইংল্যান্ড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামের বিচারে ভারতীয়দের মধ্যে সিরিজ়‌ সেরা হয়েছেন শুভমন। পুরস্কার নিতে এসে বললেন, “যে ভাবে দুটো দল এই সিরিজ়‌ে খেলল তা অনবদ্য। সব টেস্ট গিয়েছে পঞ্চম দিনে। শেষ দিন কোনও দলই জানত না কারা জিতবে। এতে বোঝা যাচ্ছে দুটো দলই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। এই টেস্টে জিততে পেরে খুব খুশি।”

পরে বিবিসি-কে শুভমন বলেন, “দুর্দান্ত একটা সিরিজ়‌ খেললাম। দুটো দলই একে অপরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। সিরিজ়ে নামার আগে আমরা তরুণ দল ছিলাম। তবে নিজেদের মধ্যেই আলোচনা করে ঠিক করেছিলাম, শুধু ‘ইয়ং টিম’ হলে চলবে না, ‘গান টিম’ হতে হবে যারা কাউকে ভয় পাবে না।”

Advertisement

ওভালে শেষ দিন ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৩৫ রান। তারা জিততেও পারত। সেখান থেকে ম্যাচ বার করেছে ভারত। শুভমন বললেন, “যখন আপনার হাতে সিরাজ এবং প্রসিদ্ধের মতো বোলার থাকে তখন যে কোনও অধিনায়কের কাজ সহজ হয়ে যায়। ও রকম স্পেল করা সহজ নয়। ওরা বলকে কথা বলিয়েছে। অস্বীকার করছি না যে আজ আমাদের উপরে চাপ ছিল। কিন্তু বোলারেরাই সেই চাপ কমিয়ে দিয়েছে। প্রত্যেকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে নেমেছিল।”

শুভমনের সংযোজন, “গত কাল আমরা ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলে দিয়েছিলাম। সেই চাপ ধরে রাখতেও চেয়েছিলাম। চাপে থাকলে মানুষ যে কাজ সাধারণত করে না, সেটাই করতে যায়। তাই যে ৩৭ রান বাকি ছিল, তার প্রতিটা মুহূর্তে ওদের চাপে রাখতে চেয়েছিলাম। এটাই ক্রিকেট। খেলতে নামলে আপনি যত বেশি নির্দয় হবেন তত ভাল। বিপক্ষকে কোনও জায়গা দেওয়া যাবে না।”

ওভালে দুই ইনিংসে ন’উইকেট নিয়ে ভারতকে একার হাতে ম্যাচ জিতিয়েছেন সিরাজ। সতীর্থের প্রশংসা করে শুভমন বলেছেন, “ও যে কোনও অধিনায়কের কাছে স্বপ্নের বোলার। পাঁচটা ম্যাচের প্রতি বলে, প্রতিটা স্পেলে নিজের সেরাটা দিয়েছে। প্রত্যেক অধিনায়ক, প্রত্যেকটা দল ওর মতো ক্রিকেটারকে চায়। আমরা ভাগ্যবান যে সিরাজ আমাদের হয়ে খেলে।”

ভারত আর একটু চেষ্টা করলে সিরিজ়‌ জিততেও পারত। তবে ২-২ ফল খারাপ নয় বলে মনে করেন শুভমন। তাঁর কথায়, “আগেই বললাম, পঞ্চম দিনে নামার আগে কোনও দলই জানত না কারা জিতবে। এতেই বোঝা যায় দুটো দল কতটা আবেগ নিয়ে খেলতে নেমেছে এবং গোটা সিরিজ়‌ে কোন মানের ক্রিকেট খেলা হয়েছে।”

আইপিএলে কাঙ্ক্ষিত ছন্দে না থেকেও ইংল্যান্ডে শুভমনের ব্যাটে রানের বন্যা দেখা গিয়েছে। ভেঙেছেন অনেক নজির। সাফল্যের পিছনে নিজের পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করেছেন শুভমন। বলেছেন, “সিরিজ়‌ের আগে অনেক পরিশ্রম করেছি। কিছু কিছু জিনিস নিয়ে আলাদা করে কাজ করেছি। সিরিজ়‌ের সেরা ব্যাটার হওয়াই আমার লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পেরে আমি তৃপ্ত।”

কোনও টেকনিক্যাল বা মানসিক বদল করতে হয়েছে কি? শুভমনের জবাব, “দুটোই করতে হয়েছে। আপনি যদি নিজেকে মানসিক ভাবে ঠিক রাখেন, ভাবনাচিন্তা স্বচ্ছ থাকে তা হলে টেকনিক্যাল বদলও ঠিকঠাক হবে। দুটোই একে অপরের সঙ্গে জড়িত।”

এর পরেই সিরিজ় থেকে নিজের শিক্ষার কথা উঠে এসেছে শুভমনের মুখে। সঞ্চালক মাইক আথারটনের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নেভার গিভ আপ’। অর্থাৎ কখনও হাল ছেড়ো না।

এই কথায় সম্ভবত বিশ্বাস রেখেছিলেন ক্রিস ওকসও। পঞ্চম দিনে এক হাতে ব্যাট করতে নেমে পড়েছিলেন। বাঁ হাত ঝোলানো ছিল স্লিংয়ে। সেটি সোয়েটারে ঢাকা ছিল। ওকসের তারিফ করে শুভমন বলেন, “খুব, খুব সাহসী ক্রিকেটার। আমি ভাবতেও পারিনি ও ভাবে ও ব্যাট করতে নামবে। এক হাত সোয়েটারে ঢাকা! এই সাহস দেখাই যায় না।”

শুভমনের সতীর্থ কেএল রাহুলও টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছেন। তাঁর কথায়, “এত বছর ধরে খেলছি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছি। বিশ্বকাপ জিততে দেখেছি। সেগুলোর সঙ্গে কিছুর তুলনা হয় না। তবে অনেকেই ইদানীং টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। আশা করি তারা এই সিরিজ়‌ দেখে সব উত্তর পেয়ে গিয়েছেন। আমাদের কেউ হিসাবেই রাখেননি। তবু আমরা লড়াই করে সিরিজ় ড্র করেছি।”

শুভমনের দল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণীও করেছেন রাহুল। বলেছেন, “এই দলটা আগামিদিনে অনেক ম্যাচ, সিরিজ জিতবে। দলে যোগ দেওয়ার পর রোহিত, বিরাট, অশ্বিনকে না দেখতে পেয়ে একটু অস্বস্তিতে ছিলাম। কিন্তু তরুণ ক্রিকেটারেরা এক এক করে এসে যখন আমাকে বিভিন্ন জিনিস জিজ্ঞাসা করতে লাগল তখন সব অস্বস্তি কেটে গেল। আমার ভূমিকাটা বদলে গেল। ওদের যতটা পেরেছি সাহায্য করেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement