—প্রতীকী ছবি।
অবসর গ্রহণের সময় সংস্থার থেকে পেয়েছিলেন প্রায় তিন কোটি টাকা। সেই টাকা পেয়ে ভেবেছিলেন শহর থেকে দূরে গ্রামে গিয়ে প্রকৃতির মধ্যে বসবাস করবেন। সে জন্য স্ত্রীকেও ছেড়েছিলেন। তবে ফল হল উল্টো। গ্রামে গিয়ে আফসোস ছাড়া আর কিছুই জুটল না বৃদ্ধের ভাগ্যে।
সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাপানের ওই ব্যক্তির নাম তেৎসু ইয়ামাদা। ৬০ বছর বয়সে ২.৯৬ কোটি টাকা নিয়ে একটি সংস্থা থেকে অবসর নেন তিনি। তেৎসুর স্ত্রী কেইকো চাকরি করতেন না। সাধারণ বধূ হিসাবে সংসার সামলাতেন। দুই পুত্র টোকিয়োয় কর্মরত। অবসর গ্রহণের পর কেইকোকে সরল জীবন যাপনের জন্য জমানো পুঁজি নিয়ে শহর ছেড়ে গ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দেন তেৎসু। তবে কেইকো শহুরে জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি গ্রামে যেতে রাজি হননি। দুই সন্তানও গ্রামে গিয়ে থাকতে রাজি হননি। এর পর নাছোড়বান্দা তেৎসু একাই গ্রামে গিয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
জানা গিয়েছে, তেৎসু এবং কেইকোর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিবাদ বাড়ার পর দম্পতি সিদ্ধান্ত নেন যে তাঁরা আলাদা থাকবেন। এর পরে গ্রামে চলে যান তেৎসু। ছেড়ে দেন পরিবারকে। সংস্থার থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে গ্রামের বাড়ি সংস্কার করেন তিনি। শুরু করেন ‘শান্তিপূর্ণ জীবন’ যাপন। তবে তেৎসু বাড়ির কাজ করার সঙ্গে অভ্যস্ত ছিলেন না। স্ত্রীকে ছাড়া সংগ্রাম শুরু হয় তাঁর। রান্নাবান্না তো দূর অস্ত্, ঘর পরিষ্কার এবং জামাকাপড় কাচতেও তিনি পারতেন না। ফলে নুডল্স এবং হিমায়িত সবজি খেয়ে জীবন যাপন শুরু করেন তিনি।
একই সঙ্গে তেৎসু সমাজমাধ্যমে দেখেন, তিনি বাড়ি ছাড়ার পর সাফল্য এসেছে কেইকোর জীবনে। কেইকো টোকিয়োয় হাতের তৈরি জিনিসের একটি কর্মশালা খুলেছিলেন, যা শীঘ্রই জনপ্রিয়তা লাভ করে। নিজের সিদ্ধান্তের জন্য অনুতপ্ত বোধ করেন তেৎসু। সমাজমাধ্যমে তাঁর মনের ভাবও প্রকাশ করেন। তেৎসু সমাজমাধ্যমে এ-ও জানান যে, গ্রামে থাকার সিদ্ধান্তের জন্য সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে তাঁর। যদিও তিনি টোকিয়ো ফিরবেন কি না, তা স্পষ্ট করেননি।
তেৎসুর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে হইচই পড়ে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এক নেটাগরিক মন্তব্য করেছেন, ‘‘তেৎসু ভেবেছিলেন তিনি দ্বিতীয় জীবন শুরু করছেন, কিন্তু পরিবারকে ছেড়ে যাওয়া তাঁর জন্য বিপর্যয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ অন্য এক জন যোগ করেছেন, ‘‘কেইকোর জন্য আমি খুশি। বুড়োর উচিত শিক্ষা হয়েছে।’’