করবা চৌথের কেনাকাটা করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় নিহত বধূ। ছবি: সংগৃহীত।
করবা চৌথের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বেরিয়েছিলেন তরুণ দম্পতি। মাঝরাস্তায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা! পিষে দিয়ে গেল ট্রাক। সেই দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই নৃশংস যে, স্ত্রীর হৃৎপিণ্ড বেরিয়ে এল শরীর থেকে। পাশে শুয়ে সঙ্গীকে মরতে দেখলেন স্বামী। বুধবার মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের হাপুরে। মৃতা মহিলার নাম অনুরাধা। তাঁর স্বামী হরিওম গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার করবা চৌথের জন্য জিনিসপত্র কিনতে বাজারে বেরিয়েছিলেন হরিওম এবং অনুরাধা। তাঁরা হাপুর জেলার হাফিজপুর থানার ভাটিয়ানা গ্রামের বাসিন্দা। ধৌলানা-গুলাওয়াতি সড়ক ধরে তাদের মোটরসাইকেল চালিয়ে গুলাওয়াতি বাজারে যাচ্ছিলেন দম্পতি। কপূরপুর এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি সেতুর উপরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের বাইকে ধাক্কা মারে একটি দ্রুতগামী ট্রাক। হরিওম এবং অনুরাধা— দু’জনেই ছিটকে পড়েন রাস্তায়।
ধাক্কার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে অনুরাধার শরীর মারাত্মক ভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। হৃৎপিণ্ড শরীর থেকে বেরিয়ে চলে আসে। স্ত্রীকে দেখে আঁতকে ওঠেন হরিওম। চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মানুষদের ভিড় জমে ঘটনাস্থলে। প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন, অনুরাধার হৃৎপিণ্ড শরীর থেকে বেরোনোর পরও কিছু ক্ষণ সচল ছিল। ধীরে ধীরে স্পন্দন বন্ধ হয়। ঘটনার নৃশংসতা দেখে পথচলতি অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নেন।
জানা গিয়েছে, গ্রামবাসী এবং পথচারীদের কয়েক জন হরিওম এবং অনুরাধাকে রাস্তার ধারে সরিয়ে নিয়ে যান। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ঘাতক গাড়ির চালককেও ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। পুলিশ এসে দম্পতিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা অনুরাধাকে মৃত বলে ঘোষণ করেন। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। হরিওম চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থাও সঙ্কটজনক বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই ঘাতক ট্রাকের চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। অন্য দিকে, অনুরাধার মৃত্যুর জন্য রাস্তার বেহাল দশাকেই দায়ী করেছেন স্থানীয়েরা। রাস্তা ঘিরে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের পর উত্তেজনা প্রশমিত হয়। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।