Viral Video

‘ছেলে ডুবে যাচ্ছে, দয়া করে বাঁচান’, গুজরাতে ভাঙা সেতুর নীচে এক বুক জলে দাঁড়িয়ে আর্তনাদ মায়ের

ভাইরাল সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, গম্ভীরা সেতু ভেঙে মহিসাগর নদীতে পড়েছে একের পর এক গাড়ি, লড়ি, পিকআপ ভ্যান। এর মধ্যেই ডুবন্ত একটি গাড়ির সামনে এক বুক জলে দাঁড়িয়ে আর্তনাদ করছেন এক প্রৌঢ়়া।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫ ১১:৩৭
Share:

ছবি: এক্স থেকে নেওয়া।

সেতু ভেঙে নদীতে পড়ে গিয়েছে গাড়ি। তিনি কোনও রকমে বেরিয়ে এলেও ডুবন্ত গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি সন্তান। ছেলেকে বাঁচাতে সাহায্যের জন্য মরিয়া আর্তনাদ করতে দেখা গেল এক অসহায় মাকে। বুধবার সকালে গুজরাতের বডোদরায় মহিসাগর নদীর উপর ভেঙে পড়ে গম্ভীরা সেতু। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনের প্রাণহানির খবর মিলেছে। আহত বেশ কয়েক জন। সেই দুর্ঘটনার পরেই মহিসাগর নদীতে এক বুক জলে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে ছেলের প্রাণ বাঁচানোর জন্য আর্তি জানাতে দেখা গেল ওই মাকে। সেই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। ভাইরাল হয়েছে হৃদয়বিদারক ভিডিয়োটি। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম

Advertisement

ভাইরাল সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, গম্ভীরা সেতু ভেঙে মহিসাগর নদীতে পড়েছে একের পর এক গাড়ি, লরি, পিকআপ ভ্যান। এর মধ্যেই ডুবন্ত একটি গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে এক বুক জলে দাঁড়িয়ে আর্তনাদ করছেন এক প্রৌঢ়়া। চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার সন্তান জলে ডুবে যাচ্ছে। দয়া করে কেউ বাঁচান।’’ সেই ভিডিয়োই প্রকাশ্যে এসেছে। ভাইরাল সেই ভিডিয়োটি পোস্ট করা হয়েছে সিরাজ় নুরানি নামে এক সাংবাদিকের এক্স হ্যান্ডল থেকে। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ দেখেছেন সেই ভিডিয়ো। ভিডিয়োটি দেখে দুঃখপ্রকাশ করেছেন নেটাগরিকেরা।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বামী, ছেলে, মেয়ে এবং জামাইকে নিয়ে বাগদানা যাচ্ছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু গম্ভীরা সেতু দিয়ে যাওয়ার সময় সেটি ভেঙে পড়ে। জানলা ভেঙে কোনও রকমে বেরোতে সক্ষম হন ওই মহিলা। কিন্তু গাড়িটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে ‘লক’ হয়ে যাওয়ায় বাকিরা আটকে পড়েন। বুধবারের সেই দুর্ঘটনায় দুই ভাইবোন-সহ ১০ জন নিহত এবং বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। একাধিক গাড়ি নদীতে পড়ে যাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ন’জনকে।

Advertisement

স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই স্থানীয়েরা আঙুল তুলেছেন প্রশাসনের দিকে। অভিযোগ, ৪০ বছরের পুরনো সেতুটির দেখভাল ঠিক ভাবে করা হয়নি। প্রবল যানজট হত সেতুতে। যান চলাচলের জন্য ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছিল। কিন্তু একাধিক বার প্রশাসনকে জানিয়েও লাভের লাভ কিছু হয়নি। মধ্য গুজরাতের সঙ্গে সৌরাষ্ট্রের যোগাযোগের অন্যতম ভরসা গম্ভীরা সেতু। তা ছাড়া, আনন্দ, বডোদরা, ভরুচ, অঙ্কলেশ্বরের স্থানীয় লোকজন দৈনন্দিন চলাচলের জন্য এই সেতু ব্যবহার করতেন। প্রতি দিন প্রচুর গাড়ি চলাচল করত। তার মধ্যে ভারী পণ্যবাহী লরি যেমন থাকত, তেমনই ছিল ছোট-বড় গাড়ি। নিত্য দিন যানজট লেগে থাকত। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘গম্ভীরা সেতু দিয়ে যাতায়াত দিন দিন ভয়ের হয়ে উঠছিল। যানজট তো লেগেই থাকত। এখন ওই সেতু ‘সুইসাইড পয়েন্ট’! নিত্য দিন দুর্ঘটনা হত। সেতুর অবস্থা নড়বড়ে ছিলই। এ নিয়ে বার বার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু ব্যবস্থা নেননি কেউ।’’

সেতু বিপর্যয়ের পর গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল জানিয়েছেন প্রশাসনের সক্রিয়তার কথা। তিনি জানান, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বডোদরার কালেক্টরের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধারকাজে যাতে কোনও খামতি না-থাকে সে জন্য তৎপর বডোদরা পুরসভার দমকলবাহিনী। ডুবুরি নামিয়ে আহতদের খোঁজ চলছে। কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, সেতু রক্ষণাবেক্ষণে খামতি ছিল প্রশাসনের। সেতুর দেখভাল ঠিকমতো হলে এই দিন দেখতে হত না।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাঁর রাজ্যে এই সেতু বিপর্যয় নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। মৃতদের জন্য শোকপ্রকাশ করেন। সমাজমাধ্যমে মোদী লিখেছেন, মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ২ লক্ষ করে টাকা দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে। আহতেরা পাবেন ৫০ হাজার করে টাকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement