চলছে অশান্তি। নিজস্ব চিত্র
সুস্থ সন্তানের জন্ম হয়েছিল রবিবার রাতে। দু’দিন পরে, বুধবার সকালে তার মৃত্যুর খবর আসতেই বিক্ষোভ শুরু করেন পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, বর্ধমান শহরের নবাবহাট এলাকার ওই নার্সিংহোমের আয়াদের গাফিলতিতেই এমন ঘটনা ঘটেছে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাতে গেলে তাঁদের মারধর করে বার করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। যদিও মারধর বা গাফিলতির কোনও অভিযোগই মানেননি ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। তাঁদের পাল্টা দাবি, টাকার দাবিতে এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করে রোগী পরিবার। কোনও তরফই থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি।
নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার জামালপুরের চলবলপুরের সুমন্ত খাণ্ডাইত তাঁর স্ত্রী ইন্দিরা খাণ্ডাইতকে ভর্তি করান ওই নার্সিংহোমে। ওই রাতেই পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তাঁদের দাবি, সোম ও মঙ্গলবার শিশুটি সুস্থ ছিল। কিন্তু বুধবার সকালে আচমকা তাদের জানানো হয়, সদ্যোজাত মারা গিয়েছে। সুস্থ শিশু কী ভাবে মারা গেল, প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, নার্সিংহোমের গাফিলতিতেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ জানাতে গেলে নার্সিংহোমের কর্মীদের একাংশ তাঁদের ‘মারধর’ করেন। নার্সিংহোম থেকে বার করে দেওয়া হয় বলেও তাঁদের অভিযোগ।
সুমন্তবাবুর দাবি, ‘‘মঙ্গলবার রাতে ছেলেকে দেখভাল না করে আয়ারা ঘুমোচ্ছিল। তার জেরেই এই ঘটনা।’’ তাঁর বোন শুক্লা পালও দাবি করেন, ‘‘পুরো সুস্থ ছিল বাচ্চাটা। মঙ্গলবার রাতে হয়তো মা ঘুমিয়ে পড়ার পরে কিছু অসুবিধা হয়েছিল। কিন্তু আয়ারা আমল দেয়নি।’’
যদিও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। নার্সিংহোমের মালিক তারকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, যে কোনও মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু রোগীর পরিজনেরা টাকা দাবি করে এ ধরনের ঘটনা ঘটান। শিশু-মৃত্যুতে তাদের কোনও গাফিলতি নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। ‘বর্ধমান নার্সিংহোম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক শেখ আলহাজউদ্দিনেরও দাবি, ‘‘অশান্তির খবর পেয়ে নার্সিংহোমে ছুটে যাই। সবার সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানো হয়েছে।’’