শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দুষছেন বিরোধীরা
TMC

ঘরে ফেরা তৃণমূল কর্মীর দেহ উদ্ধার

আমতা গ্রামীণ হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সমীরবাবু তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে বহু বছর ধরে ঘরছাড়া ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আমতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০১:০৬
Share:

শোকার্ত পরিজন। ইনসেটে নিহত সমীর খাঁড়া। ছবি: সুব্রত জানা

ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় এক তৃণমূল কর্মীর দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার রাতে আমতার চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের সেনেরডাঙার এই ঘটনা নিহতের নাম সমীর খাঁড়া (৪০)। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি ডোবা থেকে তাঁর দেহ মেলে। নিহতের পরিবারের তরফে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই খুনের পিছনে পুরনো আক্রোশের কথা উল্লেখ রয়েছে অভিযোগপত্রে। দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও কয়েকজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

Advertisement

আমতা গ্রামীণ হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সমীরবাবু তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে বহু বছর ধরে ঘরছাড়া ছিলেন। তিনদিন আগে তাঁকে ঘরে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএম এবং বিজেপি হাতে হাত মিলিয়ে সমীরবাবুকে খুন করেছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম এবং বিজেপি।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় কয়েকজন পরিচিত বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান সমীরকে। তারপর তিনি আর ফেরেননি। রাত ৯টা নাগাদ তাঁকে খুঁজতে বেরিয়ে বাড়ির কাছের একটি ডোবায় দেহ দেখতে পান পরিজনরা। তাঁর দাদা স্বপন খাঁড়া পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। কয়েকজন সন্দেহভাজনের নাম দেন তিনি। তাঁদের মধ্য থেকেই পুলিশ দু’জনকে রাতেই আটক করে। পুলিশের অনুমান, লাঠি, রড এবং তরোয়াল দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে সমীরকে।

Advertisement

এক সময়ে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত থাকা সমীরবাবু ১৯৯৮ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে থাকলেও ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রায় ১৫০ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক গ্রামছাড়া হয়ে যান। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সমীরবাবুও। তাঁর বৌদি সবিতা খাঁড়া এই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। তিনিও ঘরছাড়া ছিলেন। তৃণমূলের নেতৃত্ব এবং পুলিশের তত্ত্বাবধানে তিনদিন আগে চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের সব ঘরছাড়ারা ফিরে আসেন। সেই দলে ছিলেন সমীরবাবুও।

উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী নির্মল মাজি বলেন, ‘‘ঘর ছাড়াদের নিয়ে সিপিএম এবং বিজেপি এতদিন রাজনীতি করছিল। কিন্তু ঘরছাড়ারা ফিরে আসায় সিপিএম এবং বিজেপি হতাশ। তারা ফের এই এলাকায় অশান্তি উস্কে দিতে সমীরকে খুন করেছে।’’

সিপিএম এবং বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই দু’টি দলের বক্তব্য, চন্দ্রপুরে তৃণমূলের দাপটে তাদের রাজনীতি করার কোনও সুযোগই নেই। তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে সিপিএম এবং বিজেপির পাল্টা অভিযোগ।

সিপিএমের আমতা-১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক আনন্দ মাজি বলেন, ‘‘ওই এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা সবাই জানেন। এটা তারই ফল। সেটা ধামাচাপা দিতেই বিরোধীদের উপরে দায় চাপানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন