একুশে জুলাইয়ের আগেই বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মিছিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
একুশে জুলাই ‘শহিদ দিবস’-এর আগেই প্রতিবাদ জানিয়ে রাজপথে নামতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে এ বার পথে নামছেন তিনি। আগামী ১৬ জুলাই কলকাতার কলেজ স্কোয়্যার থেকে বিশাল প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। এই কর্মসূচিতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যোগ দেবেন, এমনটাই জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এই মিছিলে হাওড়া, ভাঙড়, দমদম ও সল্টলেকের তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা শামিল হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। একই দিনে দুপুর ২টো থেকে জেলায় জেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে বলেও জানিয়েছেন চন্দ্রিমা।
রবিবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা। তিনি বলেন, ‘‘বাংলা ভাষাকে অপমান করা হলে, বাঙালিকে বাংলাদেশি বলা হলে, তা কিছুতেই সহ্য করা হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা রাস্তায় নামব।” আগামী বুধবার ১ টায় কলেজ স্কোয়্যার থেকে মিছিল শুরু হয়ে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিলের পর একটি সভা হবে। সেই সভায় মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতা করতে পারেন। একই দিনে দুপুর ২টো থেকে ৪টে পর্যন্ত জেলায় জেলায় মিছিল হবে। দিল্লিতেও প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে।
সাধারণত ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের কর্মসূচির আগে তৃণমূল অন্য কোনও বড় কর্মসূচি করে না। কিন্তু এবারে ভিন্ রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থার ঘটনার প্রতিবাদে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ করছে দল। বিভিন্ন বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলায় কথা বলার অপরাধে বহু মানুষকে ‘বাংলাদেশি’ বলে অপমানিত হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশ, অসম, দিল্লি ও কর্নাটকের মতো রাজ্যে এই ধরনের ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে বলে দাবি বাংলার শাসকদলের। তৃণমূলের তরফে এর আগে রাজ্য ও কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগে কাজ না হওয়ায় এ বার সরাসরি রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত। তৃণমূলের মতে, এই আন্দোলন শুধুই রাজনৈতিক নয়, এটা বাংলার সংস্কৃতি, পরিচয় ও সম্মান রক্ষার লড়াই।
অন্য দিকে রবিবার দিল্লির বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ কলোনি পরিদর্শন করেন তৃণমূল সাংসদেরা। রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়, সাংসদ সাগরিকা ঘোষ এবং সাংসদ সাকেত গোখলে সেখানকার বাংলাভাষী বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। এই পরিদর্শনের পর তৃণমূলের তরফে ওই এলাকায় বসবাসকারী বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। সর্বভারতীয় তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, রাজধানী দিল্লিতে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে বিজেপি। তা কখনওই মেনে নেওয়া হবে না। আমরা সবসময় আমাদের বাঙালি ভাইবোনদের পাশে রয়েছি।
রবিবার দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের জয় হিন্দ কলোনি পরিদর্শন করেন তৃণমূল সাংসদরা। ছবি সৌজন্য ফেসবুক।