ওজন বেশি বলে সেনায় চাকরি হয়নি, হাসপাতালের রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যুবক। —প্রতীকী চিত্র।
তিন দিনে কারও ১০ কেজি ওজনের পার্থক্য হয়? প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। এত কম সময়ে ১০ কেজি ওজন কমানো সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এক যুবকের ওজন পরিমাপের জন্য কল্যাণী এমসকে নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত। মঙ্গলবার বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ‘‘তিন সপ্তাহের মধ্যে কল্যাণী এমস-কে ওই যুবকের ওজন পরিমাপ-সহ মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি চাকরিতে সুযোগ পাবেন। যোগ্যতা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে চাকরি দিতে হবে।’’
২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান নিয়োগের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন বিট্টু গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, শারীরিক সক্ষমতা-সহ সমস্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তার পরেও চাকরি পাননি। কারণ, তাঁর ওজন নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। তাঁর ওজন বেশি, এই কারণে চাকরি হচ্ছে না বলে জানানো হয়। মানেননি বিট্টু। তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।
বিট্টুর আইনজীবী লক্ষ্মীকান্ত ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই সিআরপিএফের মেডিক্যাল বোর্ড শারীরিক পরীক্ষা করে তাঁর মক্কেলের ওজন ৮২ কেজি বলে জানিয়েছিল। তার চার দিন পরে অর্থাৎ, ২০ জুলাই একটি সরকারি হাসপাতালে নিজের ওজন পরিমাপ করেন বিট্টু। সেখানে ওজন দেখায় ৭২ কেজি। ৭২ ঘণ্টার পর কী ভাবে এক জন মানুষের ১০ কেজি ওজন কম হয়, প্রশ্ন তোলেন তিনি। দুই হাসপাতালের এমন আলাদা রিপোর্ট নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
এর আগে হাই কোর্টের একক বেঞ্চ সেনা হাসপাতালের রিপোর্টেই সিলমোহর দিয়েছিল। কিন্তু রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যান ওই যুবক। মঙ্গলবার দুই বিচারপতির বেঞ্চের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, ‘‘দু’টি মেডিক্যাল রিপোর্টে অসঙ্গতির কারণে কোনও প্রার্থীকে বঞ্চনা করা যায় না। আদালতের কাজ ন্যায়বিচার দেওয়া।’’ আদালতের সংযোজন, ‘‘মাত্র তিন দিনে কোনও ব্যক্তির ওজন এতটা হেরফের হয় না। আদালত মনে করছে, কোনও একটি রিপোর্টে গোলমাল আছে। তাই নতুন করে ওজন করা প্রয়োজন।’’ হাই কোর্টের নির্দেশ, নতুন করে মেডিকেল রিপোর্ট করা হবে ওই যুবকের।