Kolkata Police

ব্যাগে পিস্তল, মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন শিক্ষক! আটক করল পুলিশ, কয়েক ঘণ্টা জেরার পর মুক্তি

গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশ প্রৌঢ় শিক্ষককে আটক করেছিল। পরে অবশ্য মুক্তি দেওয়া হয়েছে। প্রৌঢ়ের ব্যাগে একটি এয়ারগান ছিল বলে খবর। অস্ত্রের বৈধ কাগজপত্র তিনি পুলিশকে দেখিয়েছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:০৭
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তারক্ষীরা এক প্রৌঢ়কে আটক করেন। —ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন এক প্রৌঢ়। অভিযোগ, তাঁর ব্যাগে ছিল এয়ারগান। গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশ তাঁকে আটক করে। পরে অবশ্য প্রৌঢ়কে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁর ব্যাগে একটি এয়ারগান ছিল। অস্ত্রের বৈধ কাগজপত্র তিনি পুলিশকে দেখিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আটক ব্যক্তির নাম দেবাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, বয়স ৫১ বছর। তিনি সল্টলেকের বাসিন্দা, বর্তমানে লিলুয়ার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। পুলিশি জেরার মুখে দেবাঞ্জন জানিয়েছেন, তিনি শ্রীরামপুর রাইফেল ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত। তিনি এ-ও জানান, যে তাঁর কাছে এয়ারগান রয়েছে। তার আগে সন্দেহ হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ার এলাকার নিরাপাত্তার দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা দেবাঞ্জনকে আটক করেন। নিয়ে যাওয়া হয় কালীঘাট থানায়। বেশ কয়েক ঘণ্টা থানায় ছিলেন তিনি। রাতে প্রৌঢ়কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এই পিস্তল এবং কিছু গুলি উদ্ধার করা হয়েছে প্রৌঢ়ের ব্যাগ থেকে। —নিজস্ব চিত্র।

শুক্রবার আনন্দবাজার ডট কম-কে দেবাঞ্জন জানান, তিনি মোট দু’টি আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। গাড়ি থেকে নেমে নিজেই নিরাপত্তারক্ষীদের পিস্তল দেখান। তাঁর কথায়, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমার কিছু আর্জি ছিল। এয়ারগান জমা দিয়েই আমি গাড়ি থেকে নেমেছিলাম। তবু অকারণে আমাকে আটকানো হয়। যদিও কেউ আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি। কিন্তু ছ’ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে হেনস্থা তো হয়েছেই।’’

Advertisement

দেবাঞ্জনের আর্জি মুখ্যমন্ত্রীর টেবিলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ তাঁকে জানিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজেই ব্যাগ থেকে এয়ারগানটা বার করে দেখিয়েছিলাম। ওরা তাতে একটু ভয় পেয়ে যায়। কারণ ওরা ভেবেছিল এটা ৯এমএম পিস্তল। আমি পেশায় আইনজীবী, একটা ল ফার্ম চালাই। তাই অপরাধীদের নিয়ে আমাকে কাজ করতে হয়। তাঁদের সামলানোর জন্য সঙ্গে অস্ত্র রাখতে হয়। এর প্রয়োজনীয় লাইসেন্স আমার কাছে রয়েছে।’’

কী এমন আর্জি যে সোজা মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎপ্রার্থী হলেন? দেবাঞ্জন জানিয়েছেন, গত মার্চ মাসে তাঁর পিতৃবিয়োগ ঘটেছে। তাঁর বাবা রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মচারী ছিলেন। কিন্তু সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পের টাকা এখনও তিনি পাননি। নবান্ন থেকে বার বার তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান প্রৌঢ়। এ ছাড়া, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর আরও একটি আর্জি ছিল। কিন্তু তা আর খোলসা করতে চাননি।

লালবাজার সূত্রে খবর, পিস্তল দেখে প্রথমে প্রৌঢ়কে আটক করা হয়েছিল। থানায় দীর্ঘ ক্ষণ খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। নথিপত্র দেখা হয়। সন্দেহজনক কিছু না থাকায় রাতে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দেবাঞ্জনের কাছ থেকে একটি এয়ারগান এবং কিছু গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। সাধারণত এই ধরনের পিস্তল পাখি শিকারের জন্য ব্যবহার করা হয়। গত সাত-আট মাস ধরে নিজের কাছে অস্ত্র রাখছেন বলে দাবি করেছেন দেবাঞ্জন।

এই প্রথম নয়, এর আগেও দু’বার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন বলে দাবি দেবাঞ্জনের। প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎও হয়েছিল। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে তিনি কালীঘাটে যান এসএসকেএম হাসপাতালে একটি আসনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আর্জি নিয়ে। সে বার পথেই তাঁকে আটকানো হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement