আইনজীবীদের কর্মবিরতির জেরে শুনানি হল না কলকাতা হাই কোর্টে। — ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রণেন্দ্রনারায়ণ রায়ের পুত্র তথা আইনজীবী মনুজেন্দ্রনারায়ণ রায় এবং পৌত্র সৌরিন্দ্রনারায়ণ রায়কে হেনস্থার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরগরম আদালত চত্বর। ঘটনার প্রতিবাদে আইনজীবীদের কর্মবিরতির জেরে শুক্রবার কোনও শুনানিই হল না কলকাতা হাই কোর্টে। এজলাসে এলেন বিচারপতিরা। কিন্তু আইনজীবীরা উপস্থিত না থাকায় শুনানি না করেই এজলাস ছাড়েন তাঁরা। হতাশ অনেক মামলাকারী।
বুধবার রাতে সল্টলেকে বাড়ির সামনেই মনুজেন্দ্রনারায়ণ এবং তাঁর পুত্র সৌরিন্দ্রনারায়ণকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। থানায় ঘটনার অভিযোগ করেন সৌরিন্দ্রনারায়ণ। তাঁর অভিযোগ, সাদা পোশাকে কয়েক জন পুলিশ তাঁদের হেনস্থা করেন। পুলিশের মারে তাঁর বাবা পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কোমরের (পেলভিস) হাড় ভেঙে গিয়েছে। সেই ঘটনার প্রকাশ্যে আসার পরই শোরগোল পড়ে যায় আইনজীবী মহলে। বৃহস্পতিবার বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে এক দিনের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবারই চিঠি দিয়ে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বিষয়টি জানায় বার অ্যাসোসিয়েশন। আরও বলা হয়, সোমবার ২৫ অগস্ট পরিস্থিতির অগ্রগতি দেখে তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে।
পূর্ব ঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী শুক্রবার সকাল থেকেই হাই কোর্টে কর্মবিরতিতে আইনজীবীরা। আদালতে এলেও অনেক আইনজীবী এজলাসে যাননি। আইনজীবীরা না থাকায় এজলাসে এসেও শুনানি না করেই উঠে যান বিচারপতিরা। সপ্তাহের শেষ দিন (শনি এবং রবিবার হাই কোর্ট বন্ধ থাকে) বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি ছিল। কিন্তু আইনজীবীদের ধর্মঘটের কারণে শুনানি না হওয়ায় হতাশ অনেক মামলাকারী। দূরদূরান্ত থেকে শুনানির আশায় হাই কোর্টে এসেও খালি হাতে ফিরতে হয় অনেককে।
বৃহস্পতিবার আইনজীবী মনুজেন্দ্রনারায়ণ এবং তাঁর পুত্রকে হেনস্থার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি হয় হাই কোর্টে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। শুনানিতে বিচারপতি জানান, বুধ এবং বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করতে হবে বিধাননগর পুলিশকে। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীকে আপাতত সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।