বাজারে শুধু ইলিশ। নিজস্ব চিত্র
বান ডেকেছে ইলিশের। বকরি ইদের পর আজ ইলিশ-রোববার!
এতটাই, যে সে বানে প্রায় ভেসে যাওয়ার জোগাড় খাসি-মুরগির। রুই-কাতলার কপাল তো পুড়েছেই, তার চেয়েও খারাপ, আনাজের বাজারে ঝুড়ি-চুবড়ি আর খালি হচ্ছেই না। লোকে খালি থলি হাতে সরু বেগুনের খোঁজ করছে, ফালি করে চিরে ইলিশের ঢলঢলে ঝোল হবে।
বকরি ইদ হওয়ায় তবু মুসলিম মহল্লাগুলোয় বাতাসে কাবাব, কষা, বিরিয়ানির সুঘ্রাণ ভেসেছে শনিবার দিনভর। তবে কুরবানির মাংসে যে পরব, তাতে আমিষের বাজার বিশেষ চাঙ্গা হয়নি।
বরং মাস পয়লা যেতেই প্রথম সপ্তাহান্তে, কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপের বাজার আলো করেছে নানা সাইজের অঢেল ইলিশ। সরু, চওড়া, ডিমভরা, ডিম ছাড়া— হরেক কিসিমের ইলিশ যেন বিকোচ্ছে ধুলোর দরে। ইদের দরুন তবু কিছু এলাকায় টান কম ছিল। আজ, রোববার সকাল থেকে কী হবে, তারই পূর্বাভাস কিন্তু স্পষ্ট!
সপ্তাহখানেক হতে চলল, দিঘা আর ডায়মন্ড হারবার থেকে আমদানি হওয়া ইলিশে ছয়লাপ নদিয়া আর মুর্শিদাবাদের বাজার। উপরে ফরাক্কার দিকেও উঠছে ইলিশ। হুড়মুড় করে কমেছে দাম। যদিও সাইজ মোটেই আগের মতো নয়। আড়াই-তিনশো থেকে পাঁচ-ছ’শো গ্রামেরই ছড়াছড়ি, আগের মতো এক কেজির মাছ মনের মতো দরে মেলা দুষ্কর।
ইদের দিন দুই জেলাতেই মাঝারি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২০০-৩০০ টাকা কেজি দরে। গঙ্গা থেকে তোলা ইলিশ অবশ্য ওজন অনুযায়ী ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
তবে কুরবানির কারণে হইচই একটু কম ছিল। বহরমপুরের স্বর্ণময়ী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রাধা হাজরা বা সুবল হালদারেরা জানান, এ দিন তুলনায় চাহিদা কম ছিল। কোর্টবাজারে মুসলিম মাছ বিক্রেতাই সংখ্যায় বেশি। মাছ ব্যবসায়ী সন্তোষ হালদার বলেন, “ওরা কুরবানিতে ব্যস্ত। আজ আর বাজারে আসেননি।” ধুবুলিয়ার শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের মতে, “এ দিন মাংসেরই পদ ঘরে-ঘরে। ইলিশ যতই সস্তা হোক, কিছুটা কম বিক্রি তো হবেই।”
ইদ মিটল। আজ, রবিবার তবে ইলিশই ফিরুক!