Ranaghat Arrest Case

মৎস্যজীবী সেজে পুলিশের অভিযান, কাকদ্বীপে মাঝসমুদ্র থেকে গ্রেফতার ২০ রাজ্যে পালিয়ে বেড়ানো আসামি!

রিণঘাটা থানা এলাকায় ২০২৪ সালের অক্টোবরে এক নাবালিকা নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয়। নাবালিকার সন্ধানে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চলে। তাতে শিশু ও নারী পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত এক জনের নাম উঠে আসে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৪২
Share:

পুলিশ থেকে বাঁচতে নেমেছিলেন জলে। সেখান থেকেই আসামিকে ধরল পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

কিছুতেই নাগাল মিলছিল না তাঁর। যে-ই ঠিক তাঁর কাছে যেত পুলিশ, অদ্ভুত মুন্সিয়ানায় মুহূর্তের মধ্যে গা ঢাকা দিতেন। নদিয়ার রানাঘাট পুলিশ জেলার তদন্তকারী দলকে দেশের প্রায় কুড়ি রাজ্যে দৌড় করিয়ে ছেড়েছেন। শেষমেশ ‘স্ট্র্যাটেজি’ বদলে কিস্তিমাত। টানা এক বছর পুলিশকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানোর পর অবশেষে শুক্রবার রাতে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন শিশু যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, মৎস্যজীবীর ছদ্মবেশে কাকদ্বীপ-নামখানার মাঝসমুদ্রে অভিযান চালিয়ে পাকড়াও করা হয়েছে তাঁকে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, রানাঘাট জেলার হরিণঘাটা থানা এলাকায় ২০২৪ সালের অক্টোবরে এক নাবালিকা নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয়। নাবালিকার সন্ধানে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চলে। তাতে শিশু ও নারী পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত এক জনের নাম উঠে আসে। চলতি বছর জুলাইয়ে কল্যাণী থেকে নিখোঁজ নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার পর পুলিশ জানতে পারে, সে অন্তঃসত্ত্বা।

এই মামলায় অপহরণের সঙ্গে পকসো আইন যুক্ত করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে চলছিল অভিযুক্তের খোঁজ। পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) ও বিশেষ তদন্তকারী দল নজরে রাখছিল অভিযুক্তকে। তাঁর মোবাইলে টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে দেখা যায় বার বার অবস্থান বদলে ফেলছেন তিনি। গত এক মাস দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ও কাকদ্বীপ এলাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করছিলেন অভিযুক্ত। শেষমেশ এসওজি এবং পুলিশের তদন্তকারী বিশেষ দল স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছক কষে। জানা যায়, মাঝসমুদ্রে মৎস্যজীবীদের একটি নৌকায় আত্মগোপন করে আছেন তিনি।

Advertisement

কিন্তু গ্রেফতারি এড়াতে যে কোনও সময় অভিযুক্ত সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে পারেন অভিযুক্ত, এই সম্ভাবনা মাথায় আটঘাট বেঁধে ‘সমুদ্র অভিযানে’ নামে রানাঘাট জেলা পুলিশ। রানাঘাট পুলিশ জেলার দু’জন সাব ইনস্পেক্টর এবং দু’জন কনস্টেবল ছিলেন অভিযানে। তাঁরা মৎস্যজীবী সেজে সমুদ্রের ১০ কিমিরও বেশি গভীরে একটি নৌকার কাছে পৌঁছে যান। অতর্কিত এই অভিযানের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না অভিযুক্ত। মাঝসমুদ্রে পুলিশের জালে ধরা পড়েন পকসো মামলায় অভিযুক্ত।

পুলিশের বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার আশিসকুমার মৌর্য। তিনি বলেন, ‘‘গত এক বছর থেকে এই আসামি পলাতক ছিলেন। অভিযুক্ত নারী ও শিশু পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। অবশেষে সফল হল ‘টিম ওয়ার্ক’। এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকেই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। মাঝসমুদ্রে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেফতার অন্যতম সাফল্য। শনিবারই আদালতে হাজির করানো হচ্ছে অভিযুক্তকে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement