Sikkim

স্বামীকে খুঁজতে সিকিম রওনা দিলেন জলপাইগুড়ির খুশি, সাত দিন পরও কোনও খোঁজ নেই ঋষিকেশের

সিকিমের লোনাক লেক বিপর্যয়ের পর বিপন্ন সেখানকার জনজীবন। মঙ্গলবার পর্যন্ত যা খবর পাওয়া গিয়েছে, তাতে সব মিলিয়ে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যু হয়েছে ৭৬ জনের। এখনও নিখোঁজ বহু মানুষ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ২২:০৮
Share:

সিকিমের উদ্দেশে রওনা খুশি রায়ের। চোখেমুখে উদ্বেগ। —নিজস্ব চিত্র।

শেষ কথা হয়েছিল ৩ অক্টোবর, রাত ১২টা ১৫ মিনিটে। তার পর সাত সাতটি দিন পেরিয়ে গিয়েছে। বার বার ফোন করে গিয়েছেন। কিন্তু সিকিমে কর্মরত ঋষিকেশ রায়ের কোনও খোঁজ পাননি স্ত্রী খুশি। নানা ভাবে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এ ভাবে আর পারছেন না। চোখেমুখে উদ্বেগ নিয়ে মঙ্গলবার সিকিম রওনা দিলেন জলপাইগুড়ির রাঙালির বাসিন্দা খুশি। বাসে বসে খুশি বললেন, ‘‘জানি না ও কোথায় আছে। তবে আমার বিশ্বাস, ও ভাল আছে।’’

Advertisement

গত মঙ্গলবার রাতে লোনাক লেকের জল বাঁধ ভেঙে উন্মত্ত গতিতে আশেপাশের সব ধ্বংস করে নীচে নামছিল। তিস্তার জলের প্রবল দাপটে নিমেষে ধ্বংস হয়ে যায় লাচেন, লাচুং, চুংথান, সিংথামের মতো এলাকা। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হয় উত্তর সিকিমের। খুশির স্বামী ঋষিকেশ থাকেন মঙ্গানে। তিস্তা উর্জা লিমিটেড নামে সংস্থায় কর্মরত তিনি। রোজ দিন পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা হত তাঁর। কিন্তু ঋষিকেশের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর স্ত্রীর কথায়, ‘‘ওদের কোম্পানির ১৪ জন এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ বলে জানতে পেরেছি। আমি জানি না, ও কোথায় আছে। ওকে খোঁজার জন্য আজ সিকিমে যাচ্ছি।’’

খুশি জানান, গত পাঁচ বছর ধরে তাঁর স্বামী সিকিমে অবস্থিত ওই সংস্থায় কর্মরত। প্রতি দিনই ফোনে কথা হত তাঁদের। কিন্তু বিপর্যয়ের আগে শেষ বার কথা হয়েছে তাঁদের। তিনি বলেন, ‘‘মঙ্গলবার প্রায় মাঝ রাত পর্যন্ত স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তখনও টের পাইনি এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা। তার পর আমাদের জীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। স্বামীর কোনও খবর পাচ্ছি না। তাই রাস্তা একটু ঠিকঠাক হয়েছে শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছি।’’

Advertisement

৩ অক্টোবর থেকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত হয় গোটা উত্তর সিকিম। তিস্তার গ্রাসে চলে যায় গোটা জাতীয় সড়ক। প্রচুর মানুষের আটকে থাকার খবর পেয়ে উদ্বেগে খাওয়া-ঘুম, সব ভুলেছেন খুশি। স্বামীর কোন খবর না পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। কিন্তু তার পরও কোনও খবর পাননি। বাসে উঠে এক বার জোর করে মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করলেন খুশি। বললেন,‘‘আমি জানি, ও ঠিক আছে। সুস্থ আছে...’’

বস্তুত, সিকিমের লোনাক লেক বিপর্যয়ের পর বিপন্ন সেখানকার জনজীবন। মঙ্গলবার পর্যন্ত যা খবর পাওয়া গিয়েছে, তাতে সব মিলিয়ে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যু হয়েছে ৭৬ জনের। এখনও নিখোঁজ বহু মানুষ। সেই সংখ্যাটা ঠিক কত, তা নির্দিষ্ট ভাবে বলতে পারছে না প্রশাসন। তবে আবহাওয়ার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজ চলছে জোরকদমে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement