বুধবার বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে ধৃতরা। —নিজস্ব চিত্র।
বালির অবৈধ কারবার ঘিরে গন্ডগোলের জেরে গ্রামবাসীদের একাংশ হামলা চালালেন পুলিশ ক্যাম্পে। ক্যাম্পে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি দুই সিভিক কর্মী ও এক হোমগার্ডকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়ার সোনামুখী থানার উত্তরবেশিয়ার এই ঘটনায় মোট সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বুধবার বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক সকলকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বাঁকুড়ার সোনামুখী থানার উত্তরবেশিয়া এলাকায় পুলিশের একটি ক্যাম্প রয়েছে। স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, সম্প্রতি দামোদর নদের চর থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা ও পাচার করা নিয়ে স্থানীয় কাপালিমানা গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের সঙ্গে টানাপড়েন চলছিল উত্তরবেশিয়া ক্যাম্পে মোতায়েন পুলিশকর্মীদের। সেই মতবিরোধের জেরেই আচমকা মঙ্গলবার রাতে ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল চড়াও হয় ক্যাম্পের উপর। ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি বিমান সরকার নামের এক হোমগার্ডকে বেধড়ক মারধর করা হয়। গ্রামবাসীদের মারে গুরুতর জখম হন ওই ক্যাম্পের সিভিক কর্মী রঞ্জিত চৌধুরী ও জয়ন্তকুমার খাঁ।
ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই সোনামুখী থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় সোনামুখী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ঘটনায় আহত হোমগার্ড বিমানের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে কাপালিমানা গ্রাম থেকে মোট সাত জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, সরকারি কাজে বাধা, মারধর-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস বলেন, ‘‘কাপালিমানা গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ গত দু’-তিন মাস ধরে দামোদর নদের চর থেকে অবৈধ ভাবে বালি পাচার করছিল। খবর পেয়ে মাঝেমধ্যে সেখানে হানা দিয়ে পুলিশ অবৈধ বালি পাচারে যুক্ত ট্রাক্টর আটক করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে একাধিক পাচারকারীকে।’’
তাঁর দাবি, ওই ঘটনার জেরেই পুলিশের উপরে স্থানীয় গ্রামবাসীদের আক্রোশ তৈরি হয়েছিল। যার জেরেই এই হামলা বলে প্রাথমিক অনুমান। বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী ইন্দ্রনারায়ণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আহত হোমগার্ড কাপালিমানা গ্রামের ১৯ জনের বিরুদ্ধে ক্যাম্পে হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক সকলকেই ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছে।’’