বিধানসভার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বৃদ্ধির নির্দেশ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নাকি ‘ভূতে’র অস্তিত্ব অনুভব করা গিয়েছে। তাতেই নাকি আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে গিয়েছে বিধানসভায় রাতের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের। এমনিতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাহ্যিক নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা পুলিশ। কিন্তু বিধানসভার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য একটি বিশেষ বাহিনী রয়েছে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে। মার্শালের নেতৃত্বে তারাই সারা বছর বিধানসভার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু সম্প্রতি রাতের নিরাপত্তারক্ষীরা ডিউটি করতে গিয়ে এক ‘চলমান অশরীরীর’ উপস্থিতি টের পেয়েছেন বলেই দাবি করা হয়েছে। তাতেই ‘ভূতে’র আতঙ্ক ছড়িয়েছে বিধানসভার কর্মীমহলে। বিধানসভার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষী বাপ্পা মণ্ডল বলেন, ‘‘রাতের দিকে গা-টা কেমন ছমছম করে। রাতে বিধানসভার ভিতরে গেলে মনে হয়, পাশ দিয়ে কে যেন চলে গেল। একদিন বিধানসভার সাউথ লবিতে ডিউটি করতে গিয়ে আমার একটু ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে। যেমন, যে লাইট আমরা কোনও দিন জ্বালাই না, সেই লাইট আমরা জ্বলতে দেখেছি, অথচ কোথাও কেউ নেই!’’
৩১ অক্টোবর আনন্দবাজার ডট কমে প্রথম বার ‘বিধানসভায় তেনাদের উপদ্রব’-এর খবর প্রকাশিত হয়! তাতে লেখা হয়, সম্প্রতি বিধানসভায় রাতের নিরাপত্তারক্ষীরা এক অশরীরীর উপস্থিতি নিয়ে অস্বস্তি অনুভব করেছেন বলে খবর। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভবনের ভিতরে রাতে কেউ থাকেন না। বাইরে প্রহরায় থাকেন নিরাপত্তারক্ষীরা। কখনও-সখনও বিশেষ প্রয়োজনে রাতে তাঁরা অন্দরে প্রবেশ করেন। সেখানেই নাকি সমস্যা! নিরাপত্তারক্ষীদের একাংশের দাবি, চলতি মাসে রাতের দিকে পাহারাদারদের কেউ কেউ বিধানসভা ভবনের ভিতর ‘অশরীরী উপস্থিতি’ টের পেয়েছেন। দোতলায় বিজয় বন্দ্যোপাধ্যায় কক্ষের সামনে নাকি বিশেষ ভাবে এই উপস্থিতি অনুভব করা যাচ্ছে! এই খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য নিজে ভূতের অস্তিত্ব মানেন না। তবে নিরাপত্তারক্ষীদের কথা শুনে তিনি রাতে বিধানসভার অন্দরে নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানোর সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এত বড় বিধানসভা বিল্ডিং ঘুরে ঘুরে একা পাহারা দিতে নিরাপত্তারক্ষীরা ভয় পেত। বিধানসভার গেটে চার জন করে পুলিশকর্মী রাতের নিরাপত্তায় থাকেন। আমি একদিন রাতের বেলায় বিধানসভায় এসেছিলাম, সে দিন সব লাইট বন্ধ দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম। ওই দিন একটা ইলেকট্রিসিটি ফল্ট হয়েছিল। তার পর থেকেই আমরা রাতের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিয়েছি।’’ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকেই বিধানসভায় ‘তেনাদের’ নিয়ে অস্বস্তির বিষয়ে জেনেছে ‘ডিটেক্টিভ অফ সুপারন্যাচারাল’। সেখান থেকেই সংগঠনের অভ্যন্তরে আলোচনা করে বিধানসভার অন্দরে রাতের অন্ধকারে ভূতের সন্ধান পেতে তদন্ত করতে চায় তারা। সংগঠনের তরফে দেবরাজ সান্যাল স্পিকারকে ইমেল করে ভূতের সন্ধান পেতে তদন্তের অনুমতি চেয়েছেন। যদিও এখনও কোনও সদুত্তর পাননি তাঁরা।