Bangladesh-Pakistan-China

‘বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সঙ্গে কৌশলগত জোট গড়তে চাই’, চিনা রাষ্ট্রদূতের নিশানা হাসিনা জমানাও

শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামির মতো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে বেজিংকে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন চিনা রাষ্ট্রদূত।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৫ ১৯:৪৭
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে একটি ত্রিদেশীয় কৌশলগত জোট তৈরি করতে চায় চিন। দৃঢ় ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় ত্রিপাক্ষিক সমঝোতাকে। মঙ্গলবার এই দাবি করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। সেই সঙ্গে কার্যত কূটনীতির ‘লক্ষণরেখা’ অতিক্রম করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পূর্বতন সরকারকে নিশানা করেছেন তিনি। জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে চিনা রাষ্ট্রদূতের অভিযোগ, ‘‘বিগত সরকারের শেষ এক দশকে আমাদের বিএনপি, জামায়াতে ইসলামির মতো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল।’’

Advertisement

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ঠিক কী ভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হত জানতে চাওয়া হলে সরাসরি উত্তর না দিয়ে ওয়েন বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরের পরিস্থিতি কেমন ছিল, এখানে এখানে হাজির সাংবাদিকেরা অনুধাবন করতে পারেন।’’ পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক অক্ষ গড়ার পাশাপাশি বেজিং বিএনপি, জামায়াতের মতো দলের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে চায় বলেও দাবি করেন তিনি।

গত জুন মাসে চিনের কুনমিঙে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দেয় চিন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চিনের উপবিদেশমন্ত্রী সান ওয়েডং, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী বিদেশ সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকি এবং পাকিস্তানের অতিরিক্ত বিদেশসচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকি। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন পাকিস্তানের বিদেশসচিব আমনা বালোচও। সূত্রের খবর, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে চাপে ফেলতে সেখানেই ত্রিদেশীয় জোট গড়ার প্রস্তাব দেয় একদলীয় চিনের কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত সরকার।

Advertisement

তবে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সম্মতি দেয়নি বলে সে দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি। প্রসঙ্গত, গত মার্চে চিন সফরে গিয়েছিলেন ইউনূস। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও বৃদ্ধি করার জন্য অনুরোধ করেন ইউনূস। সেই সূত্রে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টায় তিনি বলেন, “সমুদ্রের (বঙ্গোপসাগর) একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ।” চিন এবং বাংলাদেশ লাগোয়া উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যের ভৌগোলিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি আরও বলেন যে, “ভারতের পূর্ব দিকের সাত রাজ্যকে বলা হয় সাত বোন। এগুলি স্থলভাগ দিয়ে ঘেরা। এদের সমুদ্রে পৌঁছোনোর কোনও পথ নেই।”

ভৌগোলিক এই অবস্থানের কারণে বঙ্গোপসাগরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত করার যে ‘বড় সুযোগ’ চিন পাবে, তা-ও জানিয়েছিলেন ইউনূস। নিজের দেশে চিনা বিনিয়োগ আনতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কেন ভারতের প্রসঙ্গ তুলে আনলেন, তা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল সেই সময়। ওই মন্তব্যের পরেই তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে বিমস্টেক শীর্ষ সম্মলেনের পার্শ্ববৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখোমুখি হয়েছিলেন ইউনূস। পরে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানায়, ওই পার্শ্ববৈঠকে ঢাকাকে ‘বাক্‌সংযম’-এরও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ইউনূসকে তিনি জানিয়েছেন, ‘পরিবেশ কলুষিত করতে পারে এমন কথা’ এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement