Thailand-Cambodia Clash

ব্যাঙ্ককে যেতে চাওয়া ভারতীয় পর্যটকদের সমস্যা বাড়তে পারে! কম্বোডিয়ার সংঘর্ষবিরতির ডাকে সাড়া দিল না তাইল্যান্ড

তাইল্যান্ডে সফররত ভারতীয় পর্যটকদের জন্য ‘বিশেষ নির্দেশিকা’ জারি করেছে বিদেশ মন্ত্রক। কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন সাতটি তাই প্রদেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ১৭:৩০
Share:

তাইল্যান্ড সীমান্তে কম্বোডিয়া সেনার তৎপরতা। —ফাইল চিত্র।

সীমান্ত সংঘর্ষের তৃতীয় দিনে একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল কম্বোডিয়া। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে এ বার রণাঙ্গনে অবতীর্ণ হল তাইল্যান্ডের নৌবহর। এই আবহে ব্যাঙ্ককের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে যেতে ভারতীয় ভ্রমণার্থীরা সমস্যায় পড়তে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

রাষ্ট্রপুঞ্জে কম্বোডিয়ার দূত চেয়া কেও শুক্রবার রাতে (ভারতীয় সময়) বলেন, ‘‘নিঃশর্তভাবে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চেয়েছে এবং আমরাও বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছি।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করে তার পরেই ওই মন্তব্য করেন কম্বোডিয়ার প্রতিনিধি। কিন্তু শনিবার ব্লুমবার্গ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, স্থল এবং আকাশপথের হামলার পরে এ বার তাইল্যান্ডের নৌসেনাও যুদ্ধে নেমে পড়েছে। ফলে সংঘর্ষ দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই আবহে শুক্রবার তাইল্যান্ডে সফররত ভারতীয় পর্যটকদের জন্য ‘বিশেষ নির্দেশিকা’ জারি করেছে ভারত। ব্যাঙ্ককের ভারতীয় দূতাবাস ওই নির্দেশিকায় কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন সাতটি তাই প্রদেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। পরবর্তী নির্দেশিকার জন্য বিদেশ মন্ত্রকের এক্স হ্যান্ডলে চোখ রাখতে বলা হয়েছে। যদিও রাজধানী ব্যাঙ্কক থেকে দক্ষিণ-পূর্বে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কম্বোডিয়া সীমান্ত ‘দুর্গম এলাকা’ বলে পরিচিত। সেখানে তেমন কোনও জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র নেই। তাই এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ককগামী উড়ানে বিধিনিষেধ বা ভারতীয় পর্যটকদের যাতায়াতে কোনও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেনি নয়াদিল্লি।

Advertisement

বুধবার রাতে সীমান্তে কম্বোডিয়া সেনার গোলাবর্ষণ এবং তার জবাবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তাইল্যান্ড বায়ুসেনার এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের প্রত্যাঘাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। এখনও পর্যন্ত দু’তরফের ৩০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। যাঁদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক। দু’দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি থেকে লক্ষাধিক মানুষ ঘড়ছাড়া হয়েছেন। প্রসঙ্গত, বিতর্কিত ‘পান্না ত্রিভুজ’-এর দখলদারি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে টানাপড়েন চলছে ব্যাঙ্কক-নম পেনের। তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং আর এক পড়শি দেশ লাওসের সীমান্তবর্তী ওই ভূখণ্ডের দখল নিয়ে ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বা আইসিজে) যে রায় দিয়েছিল, তা অনেকটা কম্বোডিয়ার পক্ষেই গিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে কম্বোডিয়া সেনা সেখানে শিবির ও পরিখা নির্মাণের তৎপরতা শুরু করার পরে নতুন করে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে।

এর আগে গত ২৮ মে দু’তরফের সংঘর্ষে কম্বোডিয়ার এক সেনা নিহত হয়েছিলেন। এ বারও চিনের মদতপুষ্ট কম্বোডিয়া ফৌজের তরফেই প্রথম প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। তারা বিতর্কিত অঞ্চলে পরিখা খনন ও শিবির স্থাপনের চেষ্টা করলে সংঘাতের সৃষ্টি হয়। উত্তেজনার এই আবহে সংঘর্ষবিরতি কার্যকর করতে উদ্যোগী হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আর এক দেশ মালয়েশিয়া। শনিবার কুয়ালা লমপুরের মধ্যস্থতায় ব্যাঙ্কক-নম পেন বৈঠক হতে পারে বলে দু’দেশই জানিয়েছে। বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সংগঠন ‘আসিয়ান’-এর নেতৃত্বে রয়েছে মালয়েশিয়া। তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া— দুই দেশই ওই সংগঠনের সদস্য। সরাসরি যুদ্ধবিরতির ডাকে সাড়া না দিলেও তাইল্যান্ড বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নিকোরন্দেজ বালানকুরা শনিবার সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘শুক্রবার বিকেল নাগাদ সংঘাত অনেকটাই কমতে শুরু করেছে। আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement