Thailand-Cambodia Border Conflict

তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘর্ষে ক্ষিপ্ত ট্রাম্প! যুদ্ধ থামাতে ফের আসরে নামতে তৈরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট, ফোন যাবে দু’দেশে

ট্রাম্প মধ্যস্থতা করে যুদ্ধ থামানোর কথা বললে তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া কি তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ মানবে? এই প্রসঙ্গে দুই দেশের দুই মত। কম্বোডিয়া আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকলে তাইল্যান্ড নারাজ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:২৬
Share:

তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার যুদ্ধ থামাতে আবার তৎপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রশ্ন উঠছিল, এ বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কী করবেন? যুদ্ধ থামাতে কি আবার এগিয়ে আসবেন তিনি? বুধবার দুই প্রতিবেশী দেশের সংঘাত তৃতীয় দিনে পড়েছে। তার মধ্যেই মুখ খুললেন ট্রাম্প। তিনি জানান, যুদ্ধ বন্ধ করতে ফোন করবেন! অর্থাৎ, তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

পেনসিলভেনিয়ায় এক জনসভায় ট্রাম্পের কণ্ঠে শোনা যায় বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন যুদ্ধ থামানোয় তাঁর ভূমিকার কথা। উঠে আসে ভারত-পাকিস্তান, ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতের প্রসঙ্গ। তার পরেই তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘‘তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার মধ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে আজ বা কাল তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলব। কে বলতে পারে, আমার ফোনের পরেই যুদ্ধ থামতে পারে!’’

ট্রাম্প মধ্যস্থতা করে যুদ্ধ থামানোর কথা বললে তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া কি তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ মানবে? তাইল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রী শিহাসাক ফুয়াংকেটকি সংঘর্ষবিরতির সম্ভাবনা নাকচ করে বলেন, ‘‘কম্বোডিয়ার সঙ্গে নতুন করে সংঘাতের ক্ষেত্রে কূটনীতির আর কোনও ঠাঁই নেই।’’ তিনি এ-ও জানান, তাঁর মনে হয় না শুল্ক-হুমকি দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে আলোচনার টেবিলে বসা যাবে। তবে কম্বোডিয়ার পার্লামেন্ট সেনেটের প্রধান হুন সেন জানান, তাঁরা আলোচনার জন্য তৈরি। একই সঙ্গে এ-ও বলেন, ‘‘আমরা সর্বশক্তি দিয়ে তাইল্যান্ডের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই চালাব।’’

Advertisement

সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে দুই সেনার গুরুতর আহত হওয়ার পরেই গত ১০ নভেম্বর পড়শি দেশ কম্বোডিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি মুলতুবি রাখার কথা ঘোষণা করেছিল তাইল্যান্ড। তখন থেকেই নতুন করে সংঘাতের জল্পনা ছড়াতে শুরু করেছিল। সংঘর্ষে ইতিমধ্যেই দু’তরফের বেশ কয়েক জন সেনা নিহত হয়েছেন। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি থেকে দু’দেশেরই কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন বলে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

বিতর্কিত ‘পান্না ত্রিভুজ’-এর দখলদারি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে টানাপড়েন চলছে ব্যাঙ্কক-নম পেনের মধ্যে। তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং আর এক পড়শি দেশ লাওসের সীমান্তবর্তী ওই ভূখণ্ডের দখল নিয়ে ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বা আইসিজে) যে রায় দিয়েছিল, তা অনেকটা কম্বোডিয়ার পক্ষেই গিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসের শেষপর্বে কম্বোডিয়া সেনা সেখানে শিবির ও পরিখা নির্মাণের তৎপরতা শুরু করার পরে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। জুলাইয়ের গোড়ায় সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া— দুই দেশের সেনাবাহিনী। তাতে দু’তরফেরই বেশ কয়েক জন সেনা ও অসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছিলেন। আতঙ্কে ঘরছাড়া হয়েছিলেন, সীমান্তবর্তী এলাকার কয়েক হাজার নাগরিক।

গত ২৬ অক্টোবর মালয়েশিয়া আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে তাইল্যাল্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে স্থায়ী সংঘর্ষবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বকে পাশে বসিয়ে শান্তিচুক্তিতে সই করিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘এই দিনটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সকল মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’’ কিন্তু সেই চুক্তি ‘অমান্য’ করেই একে অপরের বিরুদ্ধে আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। সেই সংঘর্ষ থামাতে আবার আসরে নামছেন ট্রাম্প।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement