প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

লুপ্তপ্রায় পটচিত্রকে জীবনদানের প্রয়াস বেঙ্গালুরুর পুজোয়

এ বারের পূজায় জৌলুস নেই, উচ্চকিত শব্দের ঝংকার নেই, নেই আলোকমালার বিস্তৃত সজ্জা।

পিনাকী চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ১৯:০৫

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদীয় দুর্গারাধনা। শরৎকালের এই সময়ে বাঙালি যেখানেই থাকুক, ফিরে আসে বাংলায়, নিজের জায়গায়। আর ঘরে ফেরা সম্ভব না হলে প্রবাসেই এই উৎসবের সূচনা করে আরও অনেকের সঙ্গে একত্রে উদযাপনে মাতে। এ ভাবেই বেঙ্গালুরু-র বেলান্দুরে শুরু আমাদের গ্রিন গ্লেন লেআউট কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গাপূজা। এ বার তা চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করল। সহায়হীন মানুষের সাহায্যার্থে এবং নতুন প্রজন্মকে ভারতীয় সহমর্মিতা ও একাত্মবোধের সংস্কৃতি এবং বাংলা তথা ভারতীয় আচার-ব্যবহার ও রীতি-নীতির সঙ্গে একাত্ম করার লক্ষ্যে আমাদের এই প্রতিষ্ঠান সারা বছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তার মধ্যে দুর্গাপূজাই প্রধান|

এ বছরটা অন্যান্য সব সাধারণ বছরের মতো নয়; প্রায় বৎসরব্যাপী চলা করোনা-তাণ্ডবের ফলস্বরূপ সারা পৃথিবীর আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জগৎ আজ স্তব্ধপ্রায়। আরও কত দিন এ তাণ্ডব চলবে, তা আমাদের জানা নেই আজও। ক্ষুধা ও অর্থাভাবের বাস্তব পরিস্থিতিতে মানুষ আজ স্বস্তিতে নেই| অতিমারীর রক্তচক্ষুর ভয়ে ও তজ্জনিত সীমাবদ্ধতার পিঞ্জরে আবদ্ধ মানুষজনের অবক্ষয়ী তথা অবসাদগ্রস্ত মানসিক অবস্থাকে চাঙ্গা করতে মৃতসঞ্জীবনী স্বরূপ হয়ে উঠতে পারে মহামিলনের এই মাতৃবন্দনা উৎসব। এই ধারণা থেকেই আমরা স্বল্প পরিকাঠামোয় সমস্ত সরকারি বিধি-নিষেধ মেনে এ বছরের দুর্গাপূজায় ব্রতী হয়েছি। এ বারের পূজায় জৌলুস নেই, উচ্চকিত শব্দের ঝংকার নেই, নেই আলোকমালার বিস্তৃত সজ্জা। আছে কেবল ভক্তি আর নিয়ম নীতি মেনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সাহস জোগানোর প্রয়াস, যাতে সে সমস্ত আগল ঠেলে আবার স্বমহিমায় উঠে দাঁড়াতে পারে।

আরও পড়ুন: মিলেমিশে উৎসবে মাতা হচ্ছে না সিডনির

আরও পড়ুন: কোভিড-হীন তাইওয়ানে পুজোয় সামিল বাঙালিরা

ধুনুচি নাচে মেতেছে খুদে সদস্যটিও।

এ বারের এই উৎসব পালনের পাশাপাশি বাংলার লুপ্তপ্রায় পটচিত্র শিল্পকে এখানকার মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা নিয়েছি আমরা। বাংলার প্রাণের এই চিত্র শিল্পের ধারা- আধুনিকতার আলোর ঝলকানিতে যার শান্ত-স্নিগ্ধ শিল্পভাষা আজ ম্রীয়মান। দীর্ঘকালব্যাপী অতিমারীর কুপ্রভাবে পটচিত্রশিল্পী গরীব মানুষগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা ইদানিং আরও খারাপ হয়েছে। এই শিল্প ও শিল্পীদের জন্যে কিছু করার তাগিদে আমরা মেদিনীপুরের পিংলা গ্রামের কয়েক জন হতদরিদ্র পটচিত্রকারের কিছু অনবদ্য শিল্পসৃষ্টি নিয়ে এসেছি। আমাদের দুর্গাপূজা প্রাঙ্গণের স্বল্প পরিসরে একটি প্রদর্শনী করা হবে সেগুলির। পটচিত্রগুলি শিল্পীদের থেকে সরাসরি ভাবে ন্যায্য মূল্যে কিনে আনা। তদুপরি আমাদের প্রদর্শনীতে বিক্রিত পটচিত্র থেকে আহরিত অর্থ, প্রদর্শনী আয়োজনের খরচ বাদ দিয়ে, সেই শিল্পী মানুষগুলির হাতে তুলে দেওয়া হবে। বাঙালির পটচিত্রের ধারা মেনে করা বাহুল্যবর্জিত মণ্ডপসজ্জা আমাদের স্বল্প-উচ্চের দুর্গা প্রতিমাকে এক অনন্য সাধারণ রূপদান করেছে। মাতৃবন্দনার সঙ্গেই মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও অস্তমিতপ্রায় একটি প্রাচীন শিল্পধারাকে উজ্জীবিত করার এই প্রয়াস, সামান্য হলেও নিতে পেরে আমরা নিজেদের ধন্য মনে করছি।

ছবি সৌজন্য: লেখক

Durga Puja 2020 Durga Puja Outside Kolkata International Durga Puja Bengaluru
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy