প্রতীকী ছবি।
করোনাসুরের ভ্রূকুটি একটু ফিকে হতেই প্রকৃতি নতুন সাজে নিজেকে সুসজ্জিত করে তুলেছে। চারিদিকে নব আনন্দের গান। সব কিছুতেই খুশির ছোঁয়া। হবে না-ই বা কেন! আশ্বিনের নীল মেঘ, কাশফুলে বরণডালা সাজিয়ে তৈরি মায়ের আগমনের জন্য। প্রিয় জন্মভূমি থেকে দূরে থাকলেও মায়ের আহ্বান পৌঁছয় ‘আমরা প্রবাসী দুবাই’-এর বাঙালি হৃদয়ে। আর সেই অমোঘ আহ্বানে সাড়া না দিয়ে কি থাকা যায়?
‘মাতল রে ভুবন…’ পিতৃপক্ষের অবসান আর মাতৃপক্ষের শুরু। আমরাও কোমরবেঁধে তৈরি হয়ে যাই মায়ের আরাধনায়। আমাদের সেই চিরচেনা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠ দিয়েই শুরু হয় পুজোর সূচনা। না-ই বা থাকল টিপ টিপ বৃষ্টি, রাত জেগে ঠাকুর দেখা, পাড়ায় পাড়ায় চাঁদা তুলতে যাওয়া... সঙ্গে থাকলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ, চণ্ডীপাঠ, সন্ধিপুজো, সিঁদুরখেলা, নব পত্রিকা— আর এ সব কিছু নিয়েই ‘আমরা প্রবাসী দুবাই’-এর দুর্গাপুজো।
আমাদের পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয় প্রায় ৬ মাস আগে থেকে। দুর্গাপ্রতিমা, মণ্ডপসজ্জার উপকরণ, পুরোহিত ও আনুষঙ্গিক সব কিছুই আমদানি করতে হয় দেশ থেকে। তারই জন্য প্রস্তুত হতে হয় অনেক আগে থেকে। থিম পুজোর ভিড়ে হারিয়ে না গিয়েও আমরা স্বতন্ত্র বজায় রাখি। ঐতিহ্যকে মর্যাদা দিয়ে সাবেকিয়ানা বজায় রেখে বনেদিবাড়ির পুজোর অনুকরণে তৈরি আমাদের এ বারের পুজোমণ্ডপ। পুজোর ক’টা দিন আমরা টাইম মেশিনে পৌঁছে যেতে চাই সেই গৌরবমাখা অতীতের দিনে।
বাঙালির পুজো সম্পূর্ণ হয় না পেটপুজো ছাড়া। আমরা প্রবাসীরাও তৈরি পেটপুজোর সমস্ত উপকরণ নিয়ে। ষষ্ঠী থেকে দশমী— একসঙ্গে পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়া। সাবেকি বনেদিবাড়ির পদের সঙ্গে হাল আমলের জিভে জলআনা খাবার মিলেমিশে একাকার। ইটালীয় সেফের হাতের বাঙালি পদ এক অনন্য স্বাদের অনুভূতি আনে।
দুর্গাপুজোর আরও একটা দিক সন্ধ্যাকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ষষ্ঠীর বিকেলে মায়ের আগমনী গান দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা। কবিতা, নাচ, গান, গীতিনাট্য, শ্রুতিনাটক— আর থাকে ফ্যাশন শো। বাচ্চারাও হয়ে ওঠে এই সব অনুষ্ঠানের অংশ।
‘আমরা প্রবাসী দুবাই’-এর পুজো সর্বজনীন। শুধু বাঙালি নয়, পুজোয় হাজির থাকেন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মানুষ। দেশের সীমান্ত অতিক্রম করে বিদেশি অতিথিরাও হয়ে ওঠেন আমাদের পুজোর অংশীদার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy