দুর্গোৎসব মানেই ভোগের খিচুড়ি। দেবীর প্রসাদে থাকে আলাদা মাধুর্য। কিন্তু ঘরে বসেও যদি সেই ভোগের স্বাদে ধোঁয়া-মাখা ছোঁয়া পাওয়া যায়, তা হলে আড্ডা আর খাওয়াদাওয়ায় জমে উঠবে পুজোর আসর। রেসিপিটা যদিও আর পাঁচটা খিচুড়ির রেসিপির মতো একদমই নয়। এতে রয়েছে বিশেষ ট্যুইস্ট। রয়েছে ধোঁয়ার ম্যাজিক!
এ বছর পুজোয় বাড়িতেই হোক ভোগের আয়োজন। গোবিন্দভোগ চাল আর সোনা মুগ ডালের সেই চিরকালীন জুটি, যা ছাড়া পুজোর খিচুড়ি ভাবাই যায় না। ছোট ছোট আলু, ফুলকপি, মটরশুঁটি– সব কিছুই থাকবে। কিন্তু আসল চমক লুকিয়ে আছে রান্নার একেবারে শেষ ধাপে। সামান্য একটি কাঠকয়লার টুকরো আর একটু ঘি-এর জাদুতেই আপনার সাধারণ খিচুড়ি হয়ে উঠবে অসামান্য। ভাবছেন কী ভাবে? আসলে এটাই 'স্মোকড খিচুড়ি'-র রহস্য।
প্রস্তুত প্রণালী:
১. প্রথমে মুগ ডাল শুকনো কড়াইতে সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিন। হালকা সুগন্ধ বেরোলে নামিয়ে ঠান্ডা করুন এবং জল দিয়ে ধুয়ে রাখুন।
২. গোবিন্দভোগ চালও ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন। আলু ও ফুলকপি মাঝারি টুকরো করে কেটে নিন।
৩. এ বার একটি কড়াইয়ে সর্ষের তেল গরম করুন। তেল ভাল ভাবে গরম হলে তাতে আলু ও ফুলকপির টুকরোগুলো নুন ও হলুদ দিয়ে হালকা ভেজে তুলে রাখুন।
৪. ওই একই তেলে শুকনো লঙ্কা, তেজপাতা, গোটা গরম মশলা (এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ) এবং গোটা জিরে বা পাঁচফোড়ন দিন।
৫. মশলা থেকে সুগন্ধ বেরোলে আদাবাটা এবং টোম্যাটো (যদি ব্যবহার করেন) দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন।
৬. এর পরে হলুদ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো এবং কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো আর অল্প জল দিয়ে মশলা ভাল ভাবে কষিয়ে নিন।
৭. মশলা কষানো হয়ে গেলে ভেজে রাখা ডাল এবং চাল দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন।
৮. প্রয়োজন মতো গরম জল দিন। জল এমন ভাবে দেবেন, যেন চাল এবং ডাল ডুবে থাকে এবং খিচুড়ি কিছুটা পাতলা হয়। কারণ ঠান্ডা হলে তা ঘন হয়ে যাবে।
৯. জল ফুটে উঠলে স্বাদ মতো নুন এবং কাঁচা লঙ্কা যোগ করুন। এর পরে ঢাকনা দিয়ে আঁচ কমিয়ে দিন।
১০. চাল ও ডাল প্রায় সেদ্ধ হয়ে এলে ভেজে রাখা আলু, ফুলকপি, মটরশুঁটি এবং কোরা নারকেল (যদি ব্যবহার করেন) দিয়ে দিন।
১১. সব উপকরণ ভাল ভাবে সেদ্ধ হয়ে গেলে এবং খিচুড়ি পছন্দসই ঘনত্বের হলে চিনি দিয়ে হালকা নেড়ে নিন।
১২. সব শেষে, উপর থেকে ঘি এবং গরম মশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন। আরও কিছু ক্ষণ হালকা আঁচে রেখে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
ধোঁয়া দেওয়ার পদ্ধতি:
১. রান্না করা খিচুড়ি একটি পাত্রে তুলে নিন।
২. একটি ছোট স্টিলের বা মাটির বাটিতে একটি জ্বলন্ত কাঠকয়লা রাখুন।
৩. কাঠকয়লার উপরে ১ চামচ ঘি এবং কিছু গোটা মশলা, যেমন—লবঙ্গ, এলাচ, বা দারচিনি দিয়ে দিন। ধোঁয়া বেরনো শুরু হবে।
৪. বাটিটিকে সাবধানে খিচুড়ির মাঝখানে বসিয়ে দিন।
৫. পাত্রের মুখটি সঙ্গে সঙ্গে একটি ঢাকনা দিয়ে শক্ত ভাবে বন্ধ করে দিন।
৬. এ ভাবে প্রায় ৫-১০ মিনিট রাখুন, যাতে ধোঁয়ার গন্ধ খিচুড়ির মধ্যে ভাল ভাবে মিশে যায়।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।