দেবী দুর্গার বিসর্জন হয়ে গিয়েছে। আকাশে-বাতাসে এখন বিষাদের সুর। কিন্তু, এই বিষণ্ণতা ছাপিয়েই শুরু হয়েছে বাঙালির আরও এক রীতি পালন — বিজয়া! প্রতি বছর দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের পরে বাঙালিরা যে উষ্ণতা ও ভালবাসার ডালি নিয়ে একে অপরের কাছে ছুটে যান, তা বিজয়ার চিরায়ত রীতি। তবে প্রশ্ন ওঠে, ঠিক কত দিন পর্যন্ত চলে এই শুভেচ্ছা পর্ব? কবেই বা এই আভিজাত্যপূর্ণ রীতির সমাপ্তি ঘটে?
প্রথা এবং লোক-সংস্কৃতির নিরিখে দেখতে গেলে, বিজয়ার শুভেচ্ছা জানানোর এই চল কার্যত কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত প্রসারিত।
বিজয়া পর্বের সময়সীমা: লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত
হিন্দু পঞ্জিকা ও বাঙালি সমাজের লোকাচার অনুযায়ী, দুর্গাপুজোর সমাপ্তি হলেও বিজয়ার আমেজ চলে আরও কয়েক দিন। এই সময়সীমা সাধারণত দু'টি ভাগে বিভক্ত:
১. সংক্ষিপ্ত পর্ব (বিজয়া দশমী থেকে একাদশী/দ্বাদশী)
দশমীর দিন প্রতিমা নিরঞ্জনের পর থেকেই এই শুভেচ্ছা পর্ব শুরু হয়ে যায়। এই দিন মূলত নিকটাত্মীয় ও প্রতিবেশীদের মধ্যে 'শুভ বিজয়া' বলে মিষ্টিমুখ ও কোলাকুলি করা হয়। বাড়ির ছোটরা বড়দের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নেয় এবং বড়রা তাদের আলিঙ্গন করেন। এই উষ্ণ অভ্যর্থনা চলে একাদশী বা দ্বাদশী পর্যন্ত।
২. দীর্ঘ পর্ব (কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত)
বাঙালির বিজয়া পর্বের ঐতিহ্যবাহী সমাপ্তি ঘটে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিন। দুর্গাপুজোর ঠিক চার বা পাঁচ দিন পরে পূর্ণিমা তিথিতে লক্ষ্মী পুজো অনুষ্ঠিত হয়। লোকাচারবিদদের মতে, দেবী দুর্গা মহালয়ায় মর্ত্যে আসার পরে লক্ষ্মীপুজোর আগে পর্যন্ত দেবদেবীগণ মর্ত্যেই অবস্থান করেন বলে বিশ্বাস করা হয়।
এই সময়কালটিকে বিজয়ার 'অফিসিয়াল পর্ব' বা শুভেচ্ছা বিনিময়ের মূল সময়কাল হিসাবে ধরা হয়। এই সময়ে বন্ধু-বান্ধব, দূরবর্তী আত্মীয়-স্বজন এবং কর্মক্ষেত্রের পরিচিতদের বাড়িতে গিয়ে বা ফোন মারফত বিজয়ার শুভেচ্ছা জানানো হয়। এই কারণে বহু জায়গায় লক্ষ্মী পুজোর দিন পর্যন্ত বাড়িতে নিমকি, নারকেল নাড়ু, বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি ও ঘরে তৈরি মুখরোচক খাবার পরিবেশন করা হয়।
মোদ্দা কথা হল, বিজয়া দশমীর পরেই শুভেচ্ছা পর্ব শুরু হলেও, বাঙালি মন লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত এই উৎসবের মাধুর্য ধরে রাখে। যেখানে মিষ্টিমুখ, কোলাকুলি আর আন্তরিক প্রীতিতে ভরে ওঠে চারপাশ।
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।