প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

ষষ্ঠী থেকে দশমী– আজও পুজোর ‘ভাইবস’ আনার কারিগর কিশোর-আশা

পুজো মানেই পাড়ার মাইকে কিশোর বা আশা-লতার গান। এক একটি গানের বয়স পঞ্চাশ, ষাট বছর কিংবা তারও বেশি কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তৈরি করে চলেছে এক মাদকতা।

সৌভিক রায়

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:০৮
প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

পাড়ার যে গলিটা বছরের ৩৬০ দিন আঁধারে ডুবে থাকে, পুজোর ক’দিন সেখানে যেন আলোর প্লাবন! একটা ফুচকার দোকান, একটা আইসক্রিমের স্টল, একজন বেলুনওয়ালা আর দু’জন ঘুগনি বিক্রেতার দৌলতে নাম না জানা পাড়াগুলি হয়ে ওঠে এক একটি ‘বকুলতলা’। একটা ল্যাম্পপোস্টে হয়তো তিন দিকে তিনটে পুজো কমিটির মাইক বাঁধা। একটিতে বাজছে, ‘কথা দিলাম আমি কথা দিলাম, তুমি আমি যুগে যুগে থাকব সাথে...’, আর একটি থেকে শোনা যাচ্ছে...‘কারও কেউ নইকো আমি, কেউ আমার নয়...’, তিন নম্বর মাইকটি থেকে ভেসে আসছে, ‘এই মন জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে...’। এটাই বাঙালির অতিকাঙ্খিত পুজোর আবহ। ইদানীংকালের ভাষায় পুজো ‘ভাইব’! যা বয়ে আনার কারিগর কিশোর কুমার, আশা ভোঁসলে, লতা, অরতি মুখোপাধ্যায়রা। এই ‘ভাইব’-র অপেক্ষায় কেউ কেউ সারা বছর ‘বস’-র ধ্যাতানি শোনে, ‘টিম লিডারের’ মুখ ঝামটা খায়, ‘এইচআর’-কে পটিয়ে তিন দিনের ছুটি ‘ম্যানেজ’ করে, ব্যাঙ্গালুরু থেকে চার দিনের জন্য বাংলায় ফেরে...!

পঞ্চমীর ভরদুপুর আচমকা বেজে উঠল, ‘সেই রাতে রাত ছিল পূর্ণিমায়...।’ ষষ্ঠীর বিকেল কোথাও বাজছে, ‘চিতাতেই সব শেষ’। শ্রোতাদের কোনও বিরক্ত নেই। বরং তাঁরা উপভোগ করে। মুগ্ধ হয়। যেন কানের শান্তি। হয়তো কোনও গানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কোনও বছরের পুজোর স্মৃতি মনে পড়ে যায়। এক একটি গানের বয়স পঞ্চাশ, ষাট বছর কিংবা তারও বেশি কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তৈরি করে চলেছে এক মাদকতা। এও যেন এক উত্তরাধিকার। ওয়াই টু কে-র ছেলেমেয়েরা, জেন জ়ি-রাও সেই মাদকতায় মশগুল। এটাই শরতের গুণ, এ ম্যাজিক কিশোর, আশা, লতাদের কণ্ঠেরও।

পুজোয় প্রেমে ছ্যাঁকা খেয়ে যে কাকা-জ্যাঠারা আটের দশকে, ‘সে দিনও আকাশে ছিল কত তারা’ বা ‘সে যেন আমার পাশে আজও বসে আছে’ বা ‘ফিরে এসো অনুরাধা’ শুনেছেন। আজ তাঁদের ভাইপোরা হয়তো পুজোর মুখে ‘ব্রেকআপ’ করে একই গান শুনছেন ঘরে বসে বসে! সিঙ্গলদের একাকিত্ব মনে করাতে যুগ যুগ ধরে পাড়ার মাইকে বাজছে, ‘আর কত রাত একা থাকব?’। তাঁদের মনে প্রশ্ন তুলে যাচ্ছে, ‘এমন মধুর সন্ধ্যায় একা কি থাকা যায়?’

‘কাপল’দের প্রেমের গাঢ়ত্ব বাড়িয়ে দেয়, ‘বন্দ মনের দুয়ার দিয়েছি খুলে’, ‘একটু বসো চলে যেও না, ‘লক্ষ্মীটি দোহাই তোমার’, ‘সন্ধ্যাবেলায় তুমি আমি বসে আছি দু’জনে... তুমি বলবে আমি শুনবো’-র মতো গান।

ষষ্ঠী থেকে দশমী–এই চারদিনের গানের একটা ‘প্লে লিস্ট’ আছে। যা বাঙালি জাতির জিয়নকাঠি। তাতে থাকে, ‘আজ এই দিনটা মনে খাতায় লিখে রাখ, আমায় পড়বে মনে কাছে দূরে যেখানেই থাক’, ‘কোথা কোথা খুঁজেছি তোমায়’, ‘মাছের কাঁটা...খোঁপার কাঁটা’, ‘ফুল কেন লাল হয়?’, ‘বধূয়া রিমিঝিমি এই শ্রাবণে...ও গো এসো তুমি এসো মোর ঘরে’, ‘তারে ভোলানো গেল না কিছুতেই’, ‘একটা দেশলাই কাঠি জ্বলাও’, ‘তোলো ছিন্নবীনা’, ‘ও তোমারই চলার পথে’, হয়তো আমাকে কারও মনে নেই’, ‘প্রেম বড়ো মধুর...’, ‘সে তো এলো না, হাওয়ায় মেঘ সরায়ে’, ‘আমার পূজার ফুল ভালবাসা হয়ে গেছে’, ‘মহুয়ায় জমেছে আজ মৌ গো’। পাড়ায় পাড়ায় বছরের পর বছর ধরে এই গানগুলি বেজে চলেছে। শহরতলি থেকে গাঁ-গঞ্জ, এই গানগুলোই পুজোর সুর বেঁধে দেয়। মন্ত্রোচ্চারণের মতো এও পুজোর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যিনি প্যান্ডেলে বসে বসে গানগুলি বাজান, তিনি ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড-এর (ডিএনএ) চেয়ে কম নন, যুগে যুগে কিশোর-প্রেম অক্ষত রাখার অনুঘটক।

বাঙালি সারা বছর যতই কোল্ডপ্লে, ব্রায়ান অ্যাডামস, দিলজিৎ, সুনিধি চৌহান শুনুক। শীতের নলেন গুড়, বর্ষার ইলিশের মতো পুজোর চার-পাঁচ দিন সে কিশোর, লতা, আশা শুনবেই। মহিষাসুরমর্দিনীর মতো চারদিনের এই ‘প্লে লিস্ট’টা ছাড়া শরতের দুর্গা আরাধনা অসম্পূর্ণ থেকে যায়...

‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy