শুভেন্দু অধিকারী ও অখিল গিরি। — ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসাবে ঠাঁই পেয়েছেন রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরি। তার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক বোমা ফাটালেন রামনগরের ৪ বারের বিধায়ক। বিজেপি-র পাশাপাশি তাঁর লড়াইটা ছিল অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধেও, এমনটাই বলছেন অখিল। সাফল্য মেলায় দৃশ্যতই খুশি অখিল। তৃণমূলের আমলে রাজ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে এত দিন মন্ত্রী ছিলেন দু’জন। প্রথম, অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের বর্তমান জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। মমতার তৃতীয় বারের মন্ত্রিসভায় পূর্ব মেদিনীপুর থেকে সৌমেনের পাশাপাশি জুড়ল অখিলের নামও।
রাজ্যে তৃণমূলের সরকার। অথচ কোনও ভূমিকাই নেই পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবারের। বরং জেলায় অধিকারী পরিবারের দাপটে এত দিন ‘নিস্তেজ’ হয়ে থাকা অখিল সামনের সারিতে। প্রথমবার মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েই বিস্ফোরক রামনগরের বিধায়ক। কেমন লাগছে ‘পুরস্কার’? তৃপ্ত গলায় অখিলের উত্তর, ‘‘এটা দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সংগ্রামের স্বীকৃতি অনেক আগেই আমাকে দিয়েছেন। এ বার একটা নতুন দায়িত্ব পেলাম।’’
নতুন দায়িত্ব পাওয়ার সূত্রেই অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে অখিল বলছেন, ‘‘এ বার অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যেমন লড়াই ছিল, তেমনই অধিকারীদের বিরুদ্ধেও আমার লড়াই ছিল। ওরা যে ভাবে দলকে পরিচালনা করছিল, আমার লড়াইটা ছিল তারই বিরুদ্ধে। আমার ভাবতে ভাল লাগছে, অধিকারীরা চলে যাওয়ার পরেও, আমরা জায়গাটা অনেকটা ধরে রাখতে পেরেছি।’’ জেলায় বিজেপি-কে রুখে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েই অখিল বলছেন, ‘‘তমলুকের থেকে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের বেশি আসনে আমরা পিছিয়ে আছি। আমার প্রথম লড়াই হবে, যে আসনগুলি আমরা হারিয়েছি সেই জায়গাগুলিতে পুনরায় ফিরে আসা।’’ চেষ্টার ফল ফলবে বলেও আশাবাদী অখিল।
মন্ত্রীর চেয়ারে অখিল। সোমবার শপথ। বিষয়টিকে লড়াইয়ের ‘স্বীকৃতি’ হিসাবেই দেখছেন পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতারা। জোড়াফুল শিবিরের একটা অংশ বলছে, শুভেন্দু-র দলত্যাগের পর, দলের একেবারে সামনের সারিতে চলে আসেন অখিল। অনেকের দাবি, অধিকারী পরিবারের ‘মিথ’ গুঁড়িয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ সামনে ছিল অখিলের। অনেকের নিশ্চিত ধারণা, নিজের জেলায় ‘ঝড়’ রুখে দেওয়ার পুরস্কারই পেয়েছেন এক সময় অধিকারী পরিবারের কাছে কোণঠাসা হয়ে থাকা অখিল।
রামনগর থেকে অখিল প্রথম বার তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন ২০০১ সালে। এর পর ২০০৬ সালে সিপিএমের স্বদেশরঞ্জন দাসের কাছে হেরে যান তিনি। তবে ২০১১ সালে তাঁর প্রত্যাবর্তন ঘটে। তার পর লাগাতার ২০১৬ এবং গত বিধানসভা নির্বাচনেও রামনগর কেন্দ্র থেকে জেতেন অখিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy