চলেছে দেদার বাজি ফাটানোও । ছবি: সুমন বল্লভ
ঘটনা ১: সময় দুপুর ১২টা। পছন্দের প্রার্থীর এগিয়ে থাকার খবর আসতেই উল্টোডাঙার কাছে মুরারিপুকুর লেনের একটি ক্লাবের সামনে সাউন্ড সিস্টেম লাগিয়ে চলছে জোর আয়োজন। একটু পরে সেখানে এলাকার কয়েক জন বিরোধী নেতার নাম ধরে তারস্বরে মাইকে বাজছে ‘চোর চোর’ স্লোগান। সেই সঙ্গে আবির মেখে হুড়োহুড়ি।
ঘটনা ২: কসবা বিধানসভা কেন্দ্রের তপসিয়া অঞ্চল। এক একটি রাউন্ডের গণনা শেষ হচ্ছে আর দলীয় প্রার্থীর এগিয়ে থাকার খবর আসছে। ব্যবধান বাড়তেই আবির মেখে মিছিল শুরু করে দিয়েছেন এলাকাবাসীদের একাংশ। তবে সেই মিছিলের স্লোগানে যে ধরনের শব্দ ব্যবহার হচ্ছে, তার অধিকাংশই শালীনতার সীমা অতিক্রম করছে। সেই সঙ্গে চলছে চটুল অঙ্গভঙ্গি করে নাচ।
এটুকুই শুধু নয়। ভোটের ফলপ্রকাশের পরে এ দিন সব চেয়ে বেশি অশালীন শব্দের প্রয়োগ দেখা গিয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। ভোটে জেতার উচ্ছ্বাসে একাধিক রাজনৈতিক পোস্ট শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়েছে। এমনকি সেই পোস্টে তর্কবিতর্ক কখনও কখনও ব্যক্তিগত আক্রমণের স্তরেও পৌঁছেছে। যা দেখেই নেটনাগরিকদের একাংশের মন্তব্য, ‘‘যে শালীনতার অভাব বাংলার নির্বাচনের পুরো পর্ব জুড়ে দেখা গিয়েছিল, তা ভোট জয়ের পরেও অব্যাহত থাকল। কোনও ভাবেই তা বাঁধন মানল না।’’
রাজ্যের আট দফা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হতেই একের পর এক রাজনৈতিক সভা করতে দেখা গিয়েছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে। মাঝেমধ্যে সেই রাজনৈতিক সভামঞ্চ থেকে নেতাদের একাধিক মন্তব্য শালীনতার মাত্রা অতিক্রম করেছে। এ বার ভোট জয়ের আনন্দ-উচ্ছ্বাসেও শালীনতার মাত্রা কোথাও যেন বাঁধন মানল না।
সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলির বিজয় উৎসবেও সেই অশালীনতা, চটুল নাচগানের ছবি ধরা পড়ল। জয়ের আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশে সোশ্যাল মিডিয়ায় অশালীন শব্দ প্রয়োগ করে একাধিক পোস্ট করতে দেখা গিয়েছে অনেককে। বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের ব্যক্তি আক্রমণ করতেও পিছপা হননি অনেকে।
যদিও এ বিষয়ে সমাজতাত্ত্বিক অভিজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘এ আসলে রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং শিক্ষার অভাব। ভোটে এক দল জিতবে এবং এক দল হারবে, এটাই স্বাভাবিক। এই হার-জিৎ পুরোটাই জনগণের সিদ্ধান্ত। আসলে রাজনৈতিক নেতাদের ভোট প্রচারে অশালীন শব্দ প্রয়োগের প্রভাব পড়ছে রাজনীতির নিচুতলাতেও। যা ভোট পরবর্তী জয়ের উৎসবেও দৃশ্যমান।’’ আর সামাজিক মাধ্যম বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘যে বা যাঁরা সামাজিক মাধ্যমে এই ধরনের পোস্ট করছেন তাঁদের পরিচয়, ঠিকানা জানা খুবই সহজ। কেউ যদি ফেক প্রোফাইল ব্যবহার করেও এই কাজ করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর পরিচয় জানা সম্ভব। সামাজিক মাধ্যমে এই ধরনের পোস্ট করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy