আড়াই বছর আগে এই দাড়িভিট স্কুলই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল। —ফাইল চিত্র।
প্রার্থী পছন্দ হয়নি বলে ক’দিন আগেই বিজেপি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই অবস্থান পরিবর্তন দাড়িভিটে-কাণ্ডে নিহত দুই পড়ুয়া তাপস বর্মণ এবং রাজেশ সরকারের পরিবারের লোকজনের। ২০১৮-র ২০ সেপ্টেম্বর ইসলামপুরের দাঁড়িভিট উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আন্দোলন চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় স্কুলের দুই ছাত্র তাপস এবং রাজেশের। যে সৌম্যরূপ মণ্ডলের বিরুদ্ধে এক বারও খোঁজ না নেওয়ার অভিযোগ করছিলেন নিহতের পরিবারের সদস্য, তাঁরাই এ বার বিজেপি প্রার্থীর পাশে আছেন বলে জানিয়ে দিলেন। ঘটনাচক্রে, রবিবারই পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মুখে ইসলামপুরের দাড়িভিট প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।
বিজেপি-র প্রার্থিতালিকা নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই জেলায় জেলায় বিক্ষোভ চলছে। তাতে শামিল হয়েছে ইসলামপুরও। ইসলামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সৌম্যরূপকে প্রার্থী করার বিরুদ্ধে সরব হন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা। শুক্রবার সেখানে বিজেপি-র কার্যালয়ে ভাঙচুর পর্যন্ত চালান তাঁরা। তালা মেরে বন্ধ করে দেওয়া হয় দলীয় কার্যালয়। কালি লেপে দেওয়া হয় মন্ত্রী দেবশ্রী রায় চৌধুরীর ছবিতে।
সেই পরিস্থিতিতে সৌম্যরূপকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাপস এবং রাজেশের পরিবারের লোকজনও। তাঁরা জানান, ছেলের মৃত্যুর পর সৌম্যরূপ এবং দেবশ্রী, দু’জনের কেউ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াননি। তাপসের মা মঞ্জু বর্মণ বলেন, ‘‘যিনি নিজের ডাক্তারি নিয়ে ব্যস্থ থাকেন, তিনি আমাদের পরিষেবা দেবেন কী ভাবে?’’ রাজেশের বাবা নীলকমল সরকার আবার বলেন, ‘‘রাজেশ এবং তাপসকে শেষকৃত্যের সময় বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল। সেই সময়ও এক বারও ওঁরা আমাদের পাশে এসে দাঁড়াননি। অনেক আশা নিয়ে বিজেপি-তে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিজেপি সদস্য হয়েও সৌম্যরূপ কোনও সাহায্য করেননি।’’
প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পর রাজেশ এবং তাপসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন সৌম্যরূপ। কিন্তু সেইসময় সাফ বারণ করে দেন দুই পরিবারের লোকজন। কিন্তু আগের অবস্থান থেকে এ বার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছেন তাপসের মা মঞ্জু। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-র বিধানসভা প্রার্থী সৌম্যরূপ মণ্ডলের সঙ্গেই আছি আমরা।’’ রাজেশের বাবা দ্বিতীয় বার সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে রাজি হননি।
২০১৮-র ২০ সেপ্টেম্বর ইসলামপুরের দাঁড়িভিট উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আন্দোলন চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় স্কুলের দুই ছাত্র তাপস এবং রাজেশের। পুলিশের গুলিতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে সেই সময় দাবি করে মৃতদের পরিবার। তাঁদের দাবিকে সমর্থন জানান বিজেপি নেতৃত্বও। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জে বিজেপি-র প্রার্থী হওয়ার পর তাপসের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েই প্রচার শুরু করেছিলেন দেবশ্রী। সাংসদ হলে প্রথমেই তাপস এবং রাজেসের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের ব্যবস্থা করবেন বলে সেই সময় আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। এই মুহূর্তে দেবশ্রী সাংসদই। কিন্তু সিবিআই তদন্ত আজও শুরু হয়নি। তা নিয়ে দিন কয়েক আগেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন নীলকমল। কিন্তু এখন আর এ নিয়ে কোনও কথা বলতে আগ্রহী নন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy