All need to know about Kedareshwar Cave in Maharashtra’s Harishchandragad fort and mystery behind it dgtl
Kedareshwar Cave in Maharashtra
পৃথিবীর শুরু এবং শেষ নাকি সেখানেই! মন্দিরের শেষ স্তম্ভ ভাঙলে অবসান কলিযুগের? কেদারেশ্বর গুহার পরতে পরতে রহস্য
কেদারেশ্বর গুহা বরফ-ঠান্ডা জলে পরিপূর্ণ। মাঝখানে রয়েছে পাঁচ ফুট লম্বা শিবলিঙ্গ। জল প্রায় কোমরসমান উঁচু। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডা জলের জন্য শিবলিঙ্গের কাছে যাওয়া বেশ কঠিন।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:২০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
মহারাষ্ট্রের আহমদনগর জেলার মলসেজ ঘাটে প্রায় ৪,৬৭০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত হরিশ্চন্দ্রগড়ের প্রাচীন পার্বত্য দুর্গ একটি ঐতিহাসিক স্থান। রহস্যের ভান্ডারও বটে।
০২১৭
মৎস্যপুরাণ, অগ্নিপুরাণ, স্কন্দপুরাণের মতো প্রাচীন গ্রন্থেও এই পবিত্র স্থানের উল্লেখ রয়েছে। স্থানীয়দের মতে, ষষ্ঠ শতকে কালাচুরি রাজবংশ এই দুর্গটি তৈরি করে। তবে হরিশ্চন্দ্রগড় দুর্গের গুহাগুলি একাদশ শতকে খোদাই করা হয়েছিল বলে মনে করেন ইতিহাসবিদেরা।
০৩১৭
অনেকে আবার মনে করেন, এই দুর্গের মন্দিরে গভীর ধ্যানে মগ্ন থাকতেন মহাঋষি চাংদেব। চর্তুদশ শতকের বিখ্যাত পাণ্ডুলিপি ‘তত্ত্বসার’-এ এর উল্লেখ পাওয়া যায়। ষোড়শ শতকে এই দুর্গ মোগলদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে অষ্টাদশ শতকে মরাঠারা এই দুর্গ পুনর্দখল করেন।
০৪১৭
মনে করা হয় এই দুর্গে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অনেকগুলি গুহা রয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র কয়েকটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। অনেক গুহা এখনও মানুষের চোখের আড়ালে রয়ে গিয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়।
০৫১৭
তবে খুঁজে পাওয়া গুহাগুলির মধ্যে যে গুহাটি মানুষকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে, তা হল কেদারেশ্বর গুহা। রহস্যময় সেই গুহা নিয়ে কিংবদন্তি এবং জল্পনার অন্ত নেই।
০৬১৭
কেদারেশ্বর গুহা বরফ-ঠান্ডা জলে পরিপূর্ণ। মাঝখানে রয়েছে পাঁচ ফুট লম্বা শিবলিঙ্গ। জল প্রায় কোমরসমান উঁচু। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডা জলের জন্য শিবলিঙ্গের কাছে যাওয়া বেশ কঠিন।
০৭১৭
কেদারেশ্বর গুহায় খোদাই করা রয়েছে বহু ভাস্কর্য। বর্ষাকালে এই গুহার কাছে যাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়ে। গুহার সামনের রাস্তা দিয়ে জলের প্রবল স্রোত বয়ে যায়।
০৮১৭
গুহার আরও এক আশ্চর্য বিষয় হল, এই মন্দিরের চার দেওয়ালে কোনও ছিদ্র না থাকলেও এই দেওয়ালগুলি দিয়ে গুহার ভিতরে জল ঢোকে।
০৯১৭
ভারতের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি ছড়িয়ে আছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বহু মন্দিরে। কিন্তু কেদারেশ্বর গুহার শিবমন্দির কেবল অতীতকেই নয়, মহাবিশ্বের গোপন রহস্যও লুকিয়ে রেখেছে বলে প্রচলিত রয়েছে।
১০১৭
স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, কেদারেশ্বর গুহা থেকেই পৃথিবীর উৎপত্তি। শেষও হবে সেখানেই। গুহার শিবলিঙ্গের উপরে রয়েছে একটি বিশাল শিলা। তার চার কোণে রয়েছে চারটি স্তম্ভ। তবে গুহা দাঁড়িয়ে একটিমাত্র স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে। বাকি তিন স্তম্ভই নীচের দিকে ভাঙা।
১১১৭
স্থানীয়দের দৃঢ় বিশ্বাস, এই চার স্তম্ভ চারটি যুগের প্রতিনিধিত্ব করে। সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর এবং কলি। তিন যুগের শেষে নিজে থেকেই ভেঙে গিয়েছে এক একটি স্তম্ভ।
১২১৭
মনে করা হয় কলিযুগের ভার বহন করছে টিকে থাকা স্তম্ভটি। কলিযুগ ধ্বংস হলে নিজে থেকে ভেঙে পড়বে এই স্তম্ভটিও। ধ্বংস হবে পৃথিবীর।
১৩১৭
মন্দিরের কেন্দ্রে পাঁচ ফুট লম্বা যে শিবলিঙ্গ রয়েছে, তাকে স্বয়ম্ভূ বলে মনে করা হয়। কিংবদন্তি অনুযায়ী, গভীর ধ্যানের পরে ভগবান শিব এখানে আবির্ভূত হন। গুহার উপরে একটি পাথরের গোপুরম (হিন্দু মন্দিরের প্রবেশপথে অবস্থিত একটি স্মারক) রয়েছে।
১৪১৭
কেদারেশ্বর গুহার কাছে রয়েছে হরিশ্চন্দ্রগড় মন্দির। কেদারেশ্বর গুহা হরিশ্চন্দ্রেশ্বর মন্দিরের ডান দিকে অবস্থিত। মন্দিরের পূর্ব দিকে রয়েছে সপ্ততীর্থ পুষ্করিণী। স্থানীয়দের বিশ্বাস, অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করে তোলার আশ্চর্য ক্ষমতা আছে এই পুষ্করিণীর জলের।
১৫১৭
খোলা আকাশের নীচে থাকলেও নাকি গরমকালে এই জল থাকে বরফের মতো ঠান্ডা। কিন্তু সেই জল কেন এত ঠান্ডা, তা অনেকের কাছে আজও রহস্য।
১৬১৭
কোনও বিস্তৃত স্থাপত্য বা জাঁকজমক না থাকা সত্ত্বেও কেদারেশ্বর গুহার মন্দিরটি দেখার জন্য সারা বছরই ভক্তের সমাগম লেগে থাকে। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পুণ্যার্থীরা ওই মন্দির দর্শনে যান।
১৭১৭
পাহাড় এবং মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও হরিশ্চন্দ্রগড়ের প্রাচীন পার্বত্য দুর্গ এবং আশপাশের এলাকায় ভিড় জমান পর্যটকেরা। অনেকে কেবল ট্রেক করতে ওই পাহাড়ি এলাকায় যান।