বিয়ে ভাঙা থেকে কুমার শানুর সঙ্গে ‘স্বামী-স্ত্রীর মতো’ সম্পর্ক! চাঁছাছোলা মন্তব্যের কারণে ফের চর্চায় ‘বিগ বস্ ১৯’-এর প্রতিযোগী

মাত্র ২৮ বছর বয়সে হিন্দি সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৮৮ সালে ভূতের ছবি ‘কবরস্থান’ দিয়ে বড়পর্দায় অভিনয়জীবন শুরু করেছিলেন। প্রায় ১১০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন কুনিকা।

একের পর এক সাহসী চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি, নেতিবাচক ভূমিকায় তাঁর অভিনয় দর্শকের মন কাড়ত। ‘বেটা’, ‘গুমরাহ’, ‘খিলাড়ি’-সহ একের পর এক হিট ছবি করেছেন।

নব্বইয়ের দশকের বেশির ভাগ ছবির নেতিবাচক চরিত্রে কুনিকা দাপটে অভিনয় করে গিয়েছেন। বহুচর্চিত ছবি ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’তে রীমা লাগুর বন্ধু শান্তির চরিত্র আজও দর্শক মনে রেখেছে।

জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিক ‘স্বাভিমান’-এর কথাও ভোলেনি দর্শক। কুনিকা একশোর বেশি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। ‘স্বাভিমান’ ধারাবাহিকে তিনি এমন এক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই মা হয়েছে। বলিউড-সহ দর্শকমহলে বেশ প্রশংসা পেয়েছিল চরিত্রটি।

এরই মধ্যে ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তাঁর নাম জড়ায় গায়ক কুমার শানুর সঙ্গে। বিয়ের পরে নাকি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন কুমার শানু! এমনকি, চরম পদক্ষেপ করার কথাও ভেবেছিলেন তিনি। এমনই দাবি করেছিলেন ‘বিগ বস্ ১৯’-এর প্রতিযোগী তথা অভিনেত্রী কুনিকা সদানন্দ।

কুনিকা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, কুমার শানুর সঙ্গে তাঁর ছ’বছর সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক এতটাই গভীর ছিল যে, তাঁরা পরস্পরকে স্বামী-স্ত্রীর মতোই দেখতেন। কী ভাবে প্রেম হয়েছিল শানুর সঙ্গে, সেই ব্যাপারেও মুখ খুলেছিলেন কুনিকা।

কুনিকা জানিয়েছিলেন, উটিতে একটি শুটিং করার সময় হঠাৎই শানুর সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। সেখান থেকেই প্রেমের শুরু। তবে কিছু দিনের মধ্যেই নাকি তাঁদের প্রেমের বিষয়ে কুমার শানুর স্ত্রী জানতে পেরে যান। কুনিকা বলেছিলেন, “ওঁর স্ত্রী হকি স্টিক দিয়ে আমার গাড়ি ভাঙচুর করেছিলেন। আমার বাড়ির বাইরে এসে চিৎকার করতেন। কিন্তু আমি ওঁর অবস্থা বুঝতে পেরেছিলাম। শানুকে নিজের জীবনে ফেরত চাননি তিনি। শুধু সন্তানদের জন্য অর্থের দাবি করেছিলেন।”

কুমার শানুর সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জনের পরই দ্বিতীয় বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন এই অভিনেত্রী। ১৯৯৯ সালে বিনয় লালকে বিয়ে করেন তিনি। বিনয় আমেরিকায় থাকতেন। তাঁদের এক পুত্রসন্তানও হয়। কিন্তু দূরত্বের কারণে এই সম্পর্কও বেশি দিন টেকেনি। ২০০৬ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

ব্যক্তিগত জীবন কখনওই অভিনেত্রীর পেশাগত জীবনে প্রভাব ফেলতে পারেনি। অসাধারণ অভিনয় দক্ষতার জেরে একের পর এক ছবির সুযোগ এসেছে তাঁর কাছে। ‘রাজ়’-সহ বক্স অফিস কাঁপানো আরও নানা ছবিতে কুনিকার অভিনয় দেখা যায়। ‘কুমকুম’-এর মতো বহুচর্চিত ধারাবাহিকেও কুনিকার অভিনয় নজর কেড়েছিল দর্শকের।

একটি গানের অনুষ্ঠানে এক মহিলা অনুরাগীর ঠোঁটে গভীর চুম্বন করে তির্যক মন্তব্যের শিকার হয়েছিলেন উদিত নারায়ণ। সে সময় অনেকেই গায়কের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। কিন্তু উদিত পাশে পেয়েছিলেন কুনিকাকে। সংবাদমাধ্যমের সামনে উদিতের হয়ে কথাও বলেছিলেন এই অভিনেত্রী।

এক সাক্ষাৎকারে কুনিকা বলেছিলেন, “উদিত নারায়ণজি চুম্বন করেছেন। একদম ঠিক করেছেন। কিন্তু যেখানে চুম্বন করেছেন, সেই জায়গাটা ঠিক নয়। গালে চুম্বন করতে পারতেন।” এর সঙ্গে গায়কের হয়ে তিনি আরও বলেন, “এটা একটা পুরনো ভিডিয়ো। মনে হয় দু’বছর আগের ভিডিয়ো এটা। আমি কাউকে দোষ দিই না। মেয়েটাও তো সামনে এসেছিল। থালায় লাড্ডু সাজিয়ে দিলে, লাড্ডু খাওয়া যাবে না? এটা মোটেই ঠিক নয়।” এমন মন্তব্যের পর কুনিকাকেও সমাজমাধ্যম তিরস্কার করা হয়।

বর্তমানে ‘বিগ বস্ ১৯’-এর প্রতিযোগী হিসাবে বেশ চর্চিত কুনিকা। সপ্তাহের দ্বিতীয় নমিনেশন নিয়েই উত্তেজনা তৈরি হয় তাঁকে ঘিরে। মৃদুল তিওয়ারির সঙ্গে বচসায় জড়ান কুনিকা। মৃদুলকে লক্ষ্য করে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করেন এই অভিনেত্রী। এর ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ‘বিগ বস্’-এর বাড়িতে। এ ছাড়াও একের পর এক বচসায় জড়িয়ে পড়েন অভিনেত্রী।

অভিনয়জীবনের শুরু থেকেই কুনিকা মাঝেমধ্যেই খবরে থেকেছেন। কখনও তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য, কখনও আবার ব্যক্তিগত জীবনের কারণে। অভিনেত্রীর তির্যক মন্তব্য এবং বচসার জেরে ‘বিগ বস্ ১৯’-এর ঘর তো বটেই, সমাজমাধ্যমও বেশ সরগরম।