Everything About Nepal Army Chief Ashok Raj Sigdel Leading Peace Efforts Amid Gen Z Protests dgtl
Ashok Raj Sigdel
ভারত, চিন থেকে প্রশিক্ষণ, সেনাপ্রধান হিসাবে বছর ঘুরতেই অশান্ত স্বদেশ! নেপালে শান্তি ফেরানোর দায়িত্ব এখন সিগডেলের কাঁধে
নেপালের রূপানদেহিতে ১৯৬৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সিগডেলের জন্ম। পড়াশোনা শেষ করে ১৯৮৬ সালে নেপালের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। ১৯৮৭ সালে কমিশন লাভ করেন।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৩৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
সদ্যপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ইস্তফা দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিক ভাবে অশান্ত নেপালের দায়িত্ব নিয়েছে সে দেশের সেনাবাহিনী। সেনার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, যত দিন পর্যন্ত না নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে, তত দিন দেশের শাসনভার চালাবে তারা। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয়ও।
০২১৯
শুধু তা-ই নয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশ জুড়ে কার্ফু জারি করা হয়েছে নেপালের সেনার তরফে। দেশে লুটপাট চালালে, ভাঙচুর করলে কড়া পদক্ষেপ করার বার্তাও দিয়েছে সে দেশের সেনাবাহিনী।
০৩১৯
পাশাপাশি, দেশের নাগরিকদেরও সহযোগিতা চেয়েছে নেপালের সেনা। সহিংস বিক্ষোভের আবহে জনগণ এবং বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার, শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছে সেনা। ব্যক্তিগত এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট না করারও আবেদন জানানো হয়েছে।
০৪১৯
নেপালের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দফতরের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ‘‘কঠিন পরিস্থিতির অযৌক্তিক সুযোগ নিচ্ছে কিছু গোষ্ঠী। সাধারণ নাগরিক ও সরকারি সম্পত্তির মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। অবিলম্বে এ সব বন্ধ করতে হবে।’’
০৫১৯
নেপালের সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেলও বিক্ষোভকারীদের আলাপ-আলোচনার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশবাসীর উদ্দেশে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে সিগডেল বলেন, “আমরা প্রতিবাদীদের বিক্ষোভ, কর্মসূচি বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্দেশ্যে আলাপ-আলোচনার জন্য এগিয়ে আসার আবেদন করছি।”
০৬১৯
সিগডেল আরও বলেন, “বর্তমানে তৈরি হওয়া কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে আমাদের। আমাদের ঐতিহাসিক ও জাতীয় ঐতিহ্যবাহী সম্পত্তির পাশাপাশি জনসাধারণের ব্যক্তিগত সম্পত্তিও রক্ষা করতে হবে। সাধারণ জনগণের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।”
০৭১৯
সূত্রের খবর, নেপালের সেনাপ্রধান সিগডেলই মঙ্গলবার নেপালের সদ্যপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সঙ্গে দেখা করে তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু কে এই সিগডেল? তাঁকে নিয়ে ইতিমধ্যেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে জনমানসে।
০৮১৯
নেপালের রূপানদেহিতে ১৯৬৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সিগডেলের জন্ম। পড়াশোনা শেষ করে ১৯৮৬ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। ১৯৮৭ সালে কমিশন লাভ করেন।
০৯১৯
চিনের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটি থেকে কৌশলগত গবেষণায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন সিগডেল। ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ-ও করেন।
১০১৯
নেপাল, চিন এবং ভারত— তিন দেশেই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন নেপালের সেনাপ্রধান। ভারত থেকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা নিয়েও পড়াশোনা করেছেন তিনি।
১১১৯
রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসাবে যুগোস্লাভিয়া, তাজিকিস্তান এবং লাইবেরিয়ায় দায়িত্বপালন করেছেন সিগডেল।
১২১৯
নেপালের ইনস্পেক্টর জেনারেল, সেনার সামরিক অভিযান প্রধান এবং ব্যাটলিয়ন, ব্রিগেড এবং ডিভিশনের কমান্ডার হিসাবেও দায়িত্বপালন করেছেন সিগডেল।
১৩১৯
২০২৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সিগডেলকে নেপালের ৪৫তম সেনাপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেন প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল। অর্থাৎ, সিগডেল নেপালের সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক এক বছরের মাথায় অশান্ত হল সে দেশ।
১৪১৯
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ভারত সফরে এসেছিলেন জেনারেল সিগডেল। সেই সময় তাঁকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সম্মানসূচক জেনারেল পদমর্যাদা প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সেই সিগডেলই এখন নেপালে শান্তি ফেরানোর দায়িত্ব নিয়েছেন।
১৫১৯
উল্লেখ্য, ছাত্র-যুব গণবিক্ষোভের রোষে পুড়ছে নেপাল। সমাজমাধ্যমের উপর নেপাল সরকারের নিষেধাজ্ঞার পরই অশান্তির আগুন ছড়াতে শুরু করে ভারতের পড়শি দেশে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ অন্য চেহারা নেয় মঙ্গলবার।
১৬১৯
সমাজমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেও কোনও লাভ হয়নি। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে নেপাল। দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, আর্থিক বৈষম্যের মতো বিষয়গুলি সামনে চলে আসে। আন্দোলনকারীদের রোষের মুখে পড়ে নেপাল সরকার।
১৭১৯
মঙ্গলবার রোষের আগুন দাবানলের মতো সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বহু সরকারি ভবন, নেতা-মন্ত্রীর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মারধরও করা হয় নেতা-মন্ত্রীদের। ভাঙচুর করা হয় সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট এবং পার্লামেন্ট ভবন।
১৮১৯
পরে পার্লামেন্ট ভবনেও আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। অশান্ত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারই নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কেপি শর্মা ওলি।
১৯১৯
অন্য দিকে, ওলি সরকারকে উৎখাত করে সে দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের দাবিও তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। পাশাপাশি, গত তিন দশক ধরে রাজনৈতিক নেতাদের করা লুটের তদন্তের দাবিও তোলা হয়েছে।