How do military operations like operation sindoor and operation Mahadev get their unique name dgtl
Indian Army
‘বিজয়’ থেকে ‘সিঁদুর’ বা ‘মহাদেব’! ভারতীয় সেনার অভিযানের নাম কী ভাবে ঠিক হয়? কারা দেয় সেই নাম?
পহেলগাঁও-কাণ্ডের দু’সপ্তাহের মাথায় প্রত্যাঘাত হেনেছিল ভারত। পাকিস্তানকে জঙ্গিহানার জবাব নিজেদের পছন্দের সময়ে এবং পছন্দের স্থানে দেওয়া হবে বলে নয়াদিল্লির তরফে আগেই বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ০৭:৫৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
‘অপারেশন মহাদেব’-এ নেমে শ্রীনগরের কাছে দাচিগামের জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন নিরপরাধ মানুষের খুনে জড়িত তিন জঙ্গিকে সোমবার খতম করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ৯৭ দিনের মাথায় এসেছে সাফল্য।
০২১৭
মঙ্গলবার সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তেমনটাই জানিয়েছেন। তিনি জানান, সুলেমান শাহ, আফগান এবং জিবরান নামে ওই তিন জঙ্গিই গত ২২ এপ্রিল উপত্যকায় হামলা চালিয়েছিল। সুলেমান জঙ্গি সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার সদস্য। শাহের কথায়, ‘‘আফগান ও জিবরানও ‘এ লিস্টেড’ জঙ্গি।’’
০৩১৭
সেনা সূত্রে খবর, আটঘাট বেঁধে পরিকল্পনা করেই শুরু করা হয়েছিল ‘অপারেশন মহাদেব’। তার আগে লশকর-এ-ত্যায়বা এবং জইশ-এ-মহম্মদ জঙ্গিদের উপর ১৪ দিন ধরে নজর রেখেছিলেন গোয়েন্দারা। দাচিগামে একটি চিনা রেডিয়োর সক্রিয়তা টের পেয়েই এই নজরদারি শুরু করেন তাঁরা।
০৪১৭
পহেলগাঁও-কাণ্ডের দু’সপ্তাহের মাথায় প্রত্যাঘাত হেনেছিল ভারত। পাকিস্তানকে জঙ্গিহানার জবাব নিজেদের পছন্দের সময়ে এবং পছন্দের স্থানে দেওয়া হবে বলে নয়াদিল্লির তরফে আগেই বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল।
০৫১৭
এর পর ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করে ভারত।
০৬১৭
পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আরও একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছিল ভারতীয় সেনা। নাম ‘অপারেশন কেল্লার’।
০৭১৭
‘অপারেশন বিজয়’, ‘অপারেশন মেঘদূত’ এবং ‘অপারেশন বন্দর’ থেকে শুরু করে হালের ‘অপারেশন সিঁদুর’, ‘অপারেশন মহাদেব’— সেনার অভিযানগুলি নিয়ে ভারতীয়দের মনে গর্বের অন্ত নেই।
০৮১৭
‘অপারেশন সিঁদুর’ যেমন শক্তিশালী ছিল, তেমনই শক্তিশালী ছিল অভিযানের নাম। লক্ষণীয় যে, ভারতীয় সেনাবাহিনী যখনই কোনও বড় অভিযান পরিচালনা করে, তখন প্রায়শই সেটিকে স্মরণীয়, প্রতীকী এবং শক্তিশালী নাম দেওয়া হয়।
০৯১৭
কিন্তু এই নামগুলি কে বা কারা নির্ধারণ করেন? সামরিক সেই অভিযানগুলির নামকরণের নেপথ্যে কোন গল্প লুকিয়ে আছে?
১০১৭
এই নামগুলি সাধারণত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলি দ্বারা নির্বাচিত হয় এবং প্রায়শই ওই নির্দিষ্ট অভিযানের চেতনা, লক্ষ্য বা বার্তাকে প্রতিফলিত করে।
১১১৭
কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম না থাকলেও নামগুলি এমন ভাবেই নির্বাচন করা হয়, যাতে সেগুলি অনুপ্রেরণামূলক হয়। কখনও কখনও নামগুলি ঠিক হয় ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনি, প্রকৃতি বা জাতীয় মূল্যবোধ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে।
১২১৭
যে ভাবে কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার আগে সঠিক পরিকল্পনার প্রয়োজন, ঠিক তেমনই ভারতীয় সেনাবাহিনীও যে কোনও সামরিক অভিযান শুরু করার আগে একটি বিস্তারিত কৌশল তৈরি করে।
১৩১৭
অভিযানটি কোথায় হবে, লক্ষ্যবস্তু কারা হবে এবং কী ভাবে সেটি পরিচালিত হবে— তা আগে থেকেই নির্ধারিত হয়। পরিকল্পনার ভিত্তিতে, সরকার বা সেনাবাহিনী সেই অভিযানের একটি নাম দেয়।
১৪১৭
ভারতীয় সেনার প্রতিটি অভিযানের নামকরণের নেপথ্যে একটি গূঢ় অর্থ লুকিয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কখনও কখনও শত্রুকে মানসিক ভাবে কাবু করতেও বিশেষ নাম ব্যবহৃত হয়। ঘটনার অবস্থান বা পটভূমির উপর ভিত্তি করেও নাম বেছে নেওয়া হতে পারে।
১৫১৭
উদাহরণ হিসাবে ধরে নেওয়া যায় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কথা। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিরা মূলত পুরুষ পর্যটকদের নিশানা করেছিল। তাঁদের স্ত্রীদের কিছু করেনি। সিঁদুর ভারতীয় সংস্কৃতিতে অত্যন্ত পবিত্র। সধবা হিন্দু মহিলারা সেটি সিঁথিতে পরেন স্বামীর মঙ্গল কামনায়।
১৬১৭
পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর হত্যালীলা চালিয়ে বেশ কয়েক জন মহিলার সিঁথির সিঁদুর মুছেছিল জঙ্গিরা। তাই স্বামী-হারানো সেই মহিলাদের ত্যাগকে সম্মান জানাতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ব্যক্তিগত ভাবে ভারতীয় সেনার সেই অভিযানের নাম রেখেছিলেন ‘অপারেশন সিঁদুর’।
১৭১৭
বালাকোট বিমান হামলার সময় অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন বন্দর (বানর)’। রামায়ণ অনুযায়ী, সীতার খোঁজে গিয়ে লঙ্কায় প্রবেশ করে সেখানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন হনুমান। একই ভাবে ভারতীয় বিমানবাহিনীও পাকিস্তানের ‘ঘরে ঢুকে’ সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করেছিল। আর সে কারণেই অভিযানের ওই রকম নাম দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হয়।