Osho’s brother revealed that Vinod Khanna was jealous of Amitabh Bachchan’s success dgtl
Bollywood Gossip
অমিতাভের সাফল্যকে হিংসা! ওশোর আশ্রমে গিয়ে কান্নাকাটি করতেন বিনোদ, ধর্মগুরুর ‘জাদুমন্ত্রে’ পাল্টে যায় জীবন
গুরুর আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন বিনোদ। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় আবার বলিপাড়ায় ফিরে যান তিনি। আশ্রম থেকে ফেরার পর বিজেপি প্রার্থী হিসাবে রাজনীতির মাঠে নেমে পড়েছিলেন বিনোদ।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
বলি পরিচালক বিজয় আনন্দের সূত্রে ধর্মগুরু ওশোর ব্যাপারে জানতে পেরেছিলেন বিনোদ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওশোর চিন্তাধারায় প্রভাবিত হতে শুরু করেন অভিনেতা। কেরিয়ারের চূড়ায় থাকাকালীন মাঝেমধ্যেই সপ্তাহান্তের ছুটিতে পুণেয় ওশোর আশ্রমে চলে যেতেন। এমনকি, আশ্রমে যাওয়ার জন্য শুটিংয়ের সময়ও অদলবদল করে নিতেন বিনোদ।
০৩২৬
১৯৮২ সালে সংসার, কেরিয়ার ছেড়ে বিদেশে চলে যান বিনোদ। আমেরিকায় গিয়ে ওশোর আশ্রমে থাকতে শুরু করেন। স্ত্রী-পুত্রদের সঙ্গে কালেভদ্রে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন। জনপ্রিয়তার রোশনাইও আর টানত না বিনোদকে। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই নায়কের ‘সন্ন্যাসী জীবন’-এ ভাটা পড়ে।
০৪২৬
আধ্যাত্মিকতার স্বাদ পেয়েও অধিকাংশ সময় মনমরা থাকতেন বিনোদ। মাঝেমধ্যে ওশোর পায়ে লুটিয়ে পড়ে কান্নাকাটিও করতেন। তাঁর মনখারাপের কারণ জিজ্ঞাসা করলে বিনোদ জানাতেন যে, পরিবারকে ছেড়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে তাঁর। কিন্তু আসল কারণ ছিল ভিন্ন। বিনোদের মনে নাকি হিংসা বাসা বেঁধেছিল। এমনটাই দাবি করেছেন ওশোর ভাই স্বামী শৈলেন্দ্র সরস্বতী।
০৫২৬
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শৈলেন্দ্র জানিয়েছেন, বিনোদ ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দিলেও ইন্ডাস্ট্রি বিনোদকে ছাড়েনি। অভিনয় ছেড়ে আশ্রমে যাওয়ার পরেও ইন্ডাস্ট্রির খবরাখবর রাখতেন তিনি। বলিপাড়়া থেকে বিনোদ চলে গেলে ‘ফাঁকা মাঠে’ একাই নাকি গোল করছিলেন অমিতাভ।
০৬২৬
কম সময়ের মধ্যে রাতারাতি সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন অমিতাভ। সেই সাফল্য দেখে নাকি হিংসা হত বিনোদের। প্রকাশ্যে সে কথা বলতে না পারলেও হাবেভাবে ওশোকে তা বুঝিয়ে দিতেন বিনোদ।
০৭২৬
ওশোর আশ্রমে বিনোদের ঘরের কাছেই থাকতেন শৈলেন্দ্র। আশ্রমে অভিনেতার সঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছিলেন তিনি। বিনোদ সম্পর্কে শৈলেন্দ্র বলেন, ‘‘সফল ব্যক্তিদের দেখে মনে হতে পারে, তাঁরা যেন জীবনের সর্ব ক্ষেত্রেই সফল। কিন্তু তাঁদের মনের মধ্যে যে কী চলে, সে সম্পর্কে শুধুমাত্র তাঁরাই অবগত থাকেন।’’
০৮২৬
বিনোদের কান্না দেখে ওশো বুঝে ফেলতেন যে, তিনি আসলে অমিতাভের সাফল্য দেখে হিংসা করছেন। সেই অনুভূতিই কান্না হিসাবে প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু ওশোর কথায় আপত্তি জানাতেন অভিনেতা। তিনি বলতেন, ‘‘আমার স্ত্রী-পুত্রের কথা মনে পড়ছে। তাই চোখে জল আসছে।’’
০৯২৬
ওশোর কথায়, ‘‘স্ত্রী-পুত্রের নাম করে অজুহাত দিতে হবে না। আসলে, তুমি ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে চলে আসার পর অমিতাভের খুব নাম হয়েছে। পাশাপাশি রাজনীতিতেও যোগ দিয়েছেন তিনি। এ সব ভেবেই তোমার হিংসা হচ্ছে। অন্যের সাফল্য তোমায় কষ্ট দিচ্ছে।’’
১০২৬
অমিতাভের প্রসঙ্গ তোলা হলেই বিনোদ আপত্তি জানাতেন। শিষ্যের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে ওশো তাঁকে ‘ভাল থাকার জাদুমন্ত্র’ দিয়েছিলেন। গুরুর উপদেশ মেনেই পথ চলতে শুরু করেছিলেন বিনোদ।
১১২৬
কংগ্রেস দলের প্রার্থী হিসাবে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন অমিতাভ। ওশো তা জেনে বিনোদকে বলেছিলেন, ‘‘তুমি আবার ফিরে গিয়ে অভিনয় শুরু করো। অমিতাভ যে দলে যোগ দিয়েছেন, তুমি তার বিরোধী দলে যোগ দাও।’’
১২২৬
গুরুর আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন বিনোদ। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে আবার বলিপাড়ায় ফিরে যান তিনি। বলিউডও তাঁর ফিরে আসাকে খুশি মনে স্বাগত জানিয়েছিল। আশ্রম থেকে ফিরে আসার পর বিজেপি প্রার্থী হিসাবে রাজনীতির মাঠে নেমে পড়েছিলেন বিনোদ।
১৩২৬
অমিতাভের সঙ্গে বিনোদের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। বিনোদের সঙ্গে কাজ করে বক্স অফিসকে একাধিক হিট ছবি উপহার দিয়েছিলেন বলি পরিচালক প্রকাশ মেহরা। বিনোদ যে হঠাৎ ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে চলে যাবেন তা কল্পনা করতে পারেননি প্রকাশ। অভিনেতার সিদ্ধান্তে কষ্টও পেয়েছিলেন তিনি। বিনোদের অনুপস্থিতিতে অমিতাভের সঙ্গে কাজ করা শুরু করেছিলেন প্রকাশ।
১৪২৬
বলিপাড়ার গুঞ্জন, কাজের সূত্রে আলাপ হলেও অমিতাভের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠেছিল প্রকাশের। প্রকাশের পরিচালনায় একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয় করছিলেন অমিতাভ। নায়কের কথায় নাকি চিত্রনাট্যেও বদল করে ফেলেছিলেন প্রকাশ। তা নিয়ে বিনোদের সঙ্গে মনোমালিন্য হয় পরিচালকের।
১৫২৬
কানাঘুষো শোনা যায়, ‘খুন পসিনা’ ছবির চিত্রনাট্যের খসড়া নিয়ে বিনোদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন পরিচালক প্রকাশ। সেই ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিনোদকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। বিনোদ সেই প্রস্তাবে রাজিও হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় অমিতাভকে নিয়ে।
১৬২৬
প্রকাশ ভেবেছিলেন, ‘খুন পসিনা’ ছবিতে ‘সেকেন্ড লিড’-এর ভূমিকায় অভিনয় করবেন অমিতাভ। কিন্তু চিত্রনাট্যের খসড়া শুনে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের আবদার করে বসেন নায়ক। ঘনিষ্ঠ বন্ধুর আবদার ফেরাতে পারেননি প্রকাশ। নায়কের মন রাখতে ছবির চিত্রনাট্য আগাগোড়া বদলে ফেলেছিলেন তিনি।
১৭২৬
‘খুন পসিনা’ ছবিতে অমিতাভের চরিত্রটি যেন গুরুত্ব পায়, সে ভাবেই চিত্রনাট্য পুনর্নির্মাণ করেছিলেন প্রকাশ। ফলত, বিনোদের চরিত্রের গুরুত্ব অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সে বিষয়ে কিছুই নাকি জানতেন না বিনোদ। শুটিংয়ের প্রথম দিন গিয়ে নতুন চিত্রনাট্য শোনেন তিনি।
১৮২৬
চিত্রনাট্যে পরিবর্তনের কারণে প্রকাশের উপর বেজায় চটে গিয়েছিলেন বিনোদ। বলিপাড়ার গুঞ্জন, রাগের চোটে নাকি শুটিং ফ্লোর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন অভিনেতা। চুক্তিপত্র হাতে নিয়ে বিনোদের পিছনে ছুটলে প্রকাশের হাত থেকে সেই কাগজ নিয়ে নাকি ছিঁড়েও ফেলেছিলেন বিনোদ।
১৯২৬
এর পর খারাপ আচরণের জন্য বিনোদ এবং প্রকাশ একে অপরের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী, খানিকটা বাধ্য হয়েই ‘খুন পসিনা’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বিনোদ। অমিতাভ এবং বিনোদ অভিনীত ছবিটি বক্স অফিসেও সাড়া ফেলে। তবে, এই ছবির পরিচালকের আসনে দেখা যায়নি প্রকাশকে। পরিচালনার দায়িত্বভার ছিল প্রকাশের সহকারী রাকেশ কুমারের উপর।
২০২৬
মুম্বইয়ে পড়ার সময় কলেজের নাটকের দলে যোগ দিয়েছিলেন বিনোদ। ১৯৬৮ সালে বড় পর্দায় পা রেখেছিলেন তিনি। কলেজ পাশ করার পর থিয়েটারে তাঁর অভিনয় দেখে সুনীল দত্ত তাঁকে হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। প্রথম ছবি এতটাই হিট হয়েছিল যে, রাতারাতি বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা হয়ে গিয়েছিলেন বিনোদ। পর পর ১৫টি ফিল্মে সই করে ফেলেছিলেন তিনি।
২১২৬
নাটকের দলের সূত্রে গীতাঞ্জলি তলেয়ারখানের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল বিনোদের। বরাবর মডেল হওয়ার ইচ্ছা ছিল গীতাঞ্জলির। তাঁর ব্যক্তিত্ব মুগ্ধ করে তুলেছিল বিনোদকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে দু’জনের। ১৯৭১ সালে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা।
২২২৬
বিয়ের পর দুই পুত্রসন্তানের জন্ম দেন গীতাঞ্জলি। কিন্তু বিনোদ এবং গীতাঞ্জলির সুখের পরিবারে হঠাৎ ছন্দপতন হয়। বিনোদের আধ্যাত্মিক চিন্তাধারণাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের সংসারে। আচমকাই ওশোর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন বিনোদ। অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন স্ত্রী গীতাঞ্জলি।
২৩২৬
সংসারের প্রতি বিনোদের উদাসীনতা মেনে নিতে পারেননি গীতাঞ্জলি। ছেলেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিনোদকে বিবাহবিচ্ছেদ দিয়ে দেন তিনি। ওশোর আশ্রম থেকে ফিরে আবার নতুন করে জীবন শুরু করেছিলেন নায়ক। কানাঘুষো শোনা যায়, একাধিক নায়িকার সঙ্গে নামও জড়িয়ে পড়েছিল তাঁর।
২৪২৬
বলিপাড়ার জনশ্রুতি, অমৃতা সিংহের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বিনোদ। কিন্তু অমৃতার মা তাঁদের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি। অমৃতার চেয়ে ১২ বছরের বড় ছিলেন বিনোদ। পাত্র ভিন্ধর্মী হওয়ার কারণেও বিনোদকে কন্যার জীবনসঙ্গী হিসাবে দেখতে চাননি অমৃতার মা।
২৫২৬
বলি অভিনেত্রী রীনা রায়ও বিনোদের প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছিলেন। সে কথা স্বীকার করেছিলেন অভিনেত্রীর ভাই। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন যে, বলি অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিন্হার সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন রীনা। কিন্তু দুই তারকার সম্পর্কে ভেঙে যায়। তার পরেই নাকি বিনোদের সঙ্গে প্রেম শুরু হয় রীনার। কিন্তু সেই সম্পর্ক ক্ষণস্থায়ী ছিল বলে রীনার ভাইয়ের দাবি।
২৬২৬
এর পর কবিতা দফতরি নামে এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল বিনোদের। ১৯৯০ সালে কবিতার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন অভিনেতা। বিয়ের পর এক পুত্রসন্তান এবং এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন কবিতা।