Thousands Pakistani deported for begging abroad, says report dgtl
Pakistan
সরকার ভিক্ষা চাইছে আইএমএফের কাছে, বিদেশে ভিক্ষায় পাক নাগরিকেরা! ‘পাকিস্তানি তাড়াও’ নীতি নিল বহু দেশ
‘পাকিস্তানি তাড়াও’ নীতি গ্রহণকারী দেশগুলির মধ্যে সবার উপরে রয়েছে সৌদি আরব। সেখান থেকেই সব থেকে বেশি সংখ্যক পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তালিকায় এর পরে রয়েছে ইরাক।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৫ ১৩:৫৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৫,৪০২ জন পাকিস্তানি নাগরিককে বহিষ্কার করেছে সৌদি আরব, ইরাক, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সম্প্রতি তেমনটাই জানিয়েছেন সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি।
০২১৮
অবিশ্বাস্য মনে হলেও তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ওই দেশগুলি থেকে ৪,৮৫০ জন পাকিস্তানিকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। চলতি বছর ফেরত পাঠানো হয়েছে আরও ৫৫২ জনকে।
০৩১৮
কিন্তু কেন এ ভাবে পাক নাগরিকদের ফেরত পাঠাচ্ছে দেশগুলি? এর মূল কারণ, ভিক্ষাবৃত্তি! তেমনটাই উঠে এসেছে বিভিন্ন প্রতিবেদনে।
০৪১৮
‘পাকিস্তানি তাড়াও’ নীতি গ্রহণকারী দেশগুলির মধ্যে সবার উপরে রয়েছে সৌদি আরব। সেখান থেকেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তালিকায় এর পরে রয়েছে ইরাক।
০৫১৮
অন্য দিকে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি পাক নাগরিকদের ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে পাকিস্তান সরকারের কাছে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা নিয়ম কঠোর করেছে। সেখান থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে ৫৮ জন পাক নাগরিককে।
০৬১৮
রিপোর্টে উঠে এসেছে, পাকিস্তানিরা তীর্থযাত্রার নামে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে যাচ্ছেন এবং সেখানে গিয়ে ভিক্ষা করা শুরু করছেন। ভিক্ষার টাকা জমিয়ে কেউ ফিরে আসছেন, তো কেউ সেখানেই রয়ে যাচ্ছেন পাকাপাকি ভাবে। আর তাতেই তিতিবিরক্ত সে দেশগুলির প্রশাসন। সে কারণেই খুঁজে খুঁজে পাকিস্তানিদের ফেরত পাঠাচ্ছে দেশগুলি।
০৭১৮
বিদেশের মাটিতে গিয়ে দেশের নাগরিকদের ভিক্ষা চাওয়ার কারণে মুখ পুড়েছে পাকিস্তানের। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ জানিয়েছেন, সমস্যাটি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর ফলে অন্যান্য দেশে পাকিস্তানিদের ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
০৮১৮
পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অনুমান, পাকিস্তানে প্রায় ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত। সব মিলিয়ে ওই ভিক্ষুকদের বার্ষিক আয় প্রায় ৪২০০ কোটি ডলার।
০৯১৮
পাকিস্তানিদের বিদেশে গিয়ে ‘ভিক্ষা-প্রেম’-এর বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ পায় ২০২৩ সালে। সে বছর প্রবাসী পাকিস্তানিদের বিষয়ে সেনেটের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সেই উদ্বেগের কথা উঠে আসে।
১০১৮
২০২৩ সালে সেনেট কমিটির বৈঠকে পাকিস্তানের তৎকালীন বিদেশ সচিব জুলফিকর হায়দার প্রকাশ করেছিলেন, বিদেশে গ্রেফতার হওয়া ভিক্ষুকদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ পাকিস্তানি নাগরিক। সৌদি আরব, ইরান এবং ইরাকের মতো দেশে তীর্থযাত্রার নাম করে গিয়ে পাকিস্তানিরা কী ভাবে ভিক্ষা করতে শুরু করেন, সে কথাও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
১১১৮
তবে তারও আগে ২০২২ সালে এই নিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল শাহবাজ় শরিফকে। পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সে সময়ে কার্যত স্বীকার করেছিলেন যে, বন্ধু দেশগুলির রাস্তায় প্রায়শই ভিক্ষা করতে দেখা যায় পাকিস্তানিদের।
১২১৮
গত বছরও একটি রিপোর্টে উঠে এসেছিল যে, পাকিস্তানের শ্রমিক এবং কর্মীদের কাজ দিতে চাইছে না পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি। পাকিস্তানি নাগরিকদের সংখ্যা ক্রমে বেড়ে চলা নিয়েও সতর্কতা জারি করেছিল তারা। এমনকি, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি ইসলামাবাদকে চিঠি পাঠিয়ে নাগরিকদের ‘সহবত’ শেখানোর উপদেশও দিয়েছিল সে সময়।
১৩১৮
প্রবাসী পাকিস্তানিদের সচিব সেনেট কমিটিকে সে সময় জানিয়েছিলেন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, কাতার এবং কুয়েত চাইছে না, পাকিস্তানি কর্মীরা তাদের দেশে গিয়ে কাজ করুন। রিপোর্টে প্রকাশ পায় যে, এর জন্য পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে কাজ করতে যাওয়া পাক কর্মীরাই দায়ী।
১৪১৮
রিপোর্ট থেকে এ-ও জানা যায় যে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে হওয়া অপরাধের প্রায় ৫০ শতাংশের নেপথ্যে রয়েছেন সে দেশে থাকা পাকিস্তানিরা।
১৫১৮
এর পর ২০২৩ সালে বিদেশে গিয়ে ভিক্ষা করা দু’হাজার নাগরিকের পাসপোর্ট স্থগিত করে তাঁদের সাত বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করেছিল পাকিস্তানের সরকার। সরকার জানিয়েছিল, ওই পাকিস্তানিরা বিদেশে গিয়ে ভিক্ষা করে নিজেদের দেশের নাম ডোবাচ্ছেন।
১৬১৮
দুবাইয়ে গিয়ে মহিলাদের আপত্তিকর ভিডিয়ো ক্যামেরাবন্দি করার অভিযোগও উঠেছিল সেখানে কাজ করতে যাওয়া পাকিস্তানি পুরুষদের বিরুদ্ধে।
১৭১৮
কাতারে আবার পাক শ্রমিকেরা হেলমেট পরে কাজ করতে অস্বীকার করছেন বলে অভিযোগ উঠে এসেছিল। সব মিলিয়ে পাকিস্তানি শ্রমিক এবং কর্মীদের নিয়েও জেরবার আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারের প্রশাসন।
১৮১৮
এ বার প্রকাশ্যে এল ভিক্ষাবৃত্তির জন্য পাক নাগরিকদের সৌদি আরব, ইরান এবং ইরাকের মতো দেশগুলি থেকে বহিষ্কার করার খবর। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সে দেশের জনগণেরই সমালোচনার মুখে পড়েছে পাক সরকার। হাসির রোলও উঠেছে সমাজমাধ্যমে।