পাক ভূখণ্ডে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করার জন্য একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র, হ্যামার বোমা, ড্রোন পাঠায় ভারত। পাক আক্রমণ প্রতিহত করতে অ্যান্টি এয়ারক্রাফ্ট বন্দুক, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে একাধিক যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে ভারত। অন্য দিকে, রাশিয়ার তৈরি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ট্রায়াম্ফকে হাতিয়ার করে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা বানচাল করেছে ভারতীয় সেনা। বাহিনীতে অস্ত্রটি ‘সুদর্শন চক্র’ নামে পরিচিত।
ভারতে হামলা চালাতে একাধিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে ইসলামাবাদ। উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের একাধিক সেনাছাউনিকে নিশানা করার নিষ্ফল চেষ্টা চালিয়েছে পাকিস্তান। মানববিহীন উড়ুক্কু যান পাঠিয়ে সেনাঘাঁটিতে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল তারা। গুলি চালিয়ে মাঝ-আকাশেই সেগুলি ধ্বংস করে ভারতীয় সেনা। পাকিস্তানের দাবি ছিল জে-১০সি লড়াকু জেট ব্যবহার করে ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে তারা। যদিও সে দাবি উড়িয়ে দেয় ভারত।
ভারত-পাক সংঘাতের আবহে বিশ্বের ভয়ঙ্কর অস্ত্রগুলি নিয়ে জোরদার আলোচনা শুরু হয়েছে। বহু শক্তিশালী দেশের কাছে এমন অনেক শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে, যেগুলির কথা শুনলে শত্রু দেশের বুক কেঁপে উঠতে বাধ্য। এর মধ্যে দু’টি দেশের হাতে এমন একটি করে ব্রহ্মাস্ত্র মজুত রয়েছে, যা দিয়ে সমুদ্রে সুনামি সৃষ্টি করা যেতে পারে বলে দাবি করেছেন সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
ভারতের ‘বন্ধু’ বলে পরিচিত এমন একটি রাষ্ট্রের অস্ত্রভান্ডারের শোভা বর্ধন করছে তেমনই এক অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র। ভারতের দীর্ঘ দিনের মিত্ররাষ্ট্র রাশিয়ার কাছে একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত স্বংয়ক্রিয় টর্পেডো রয়েছে। সেই অস্ত্রটির নাম ‘পোসাইডন’। গ্রিক পুরাণের সমুদ্র, ঝড় ও ভূমিকম্পের দেবতার নামাঙ্কিত এই মারাত্মক অস্ত্রটি। ‘ডুম্সডে’ অস্ত্র নামেও ডাকা হয় এটিকে। ভয়ঙ্কর সুনামির সৃষ্টি করে নৌঘাঁটি, উপকূলীয় শহরগুলিকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে এই ‘পোসাইডন’।
‘পোসাইডন’ হল স্বয়ংক্রিয় টর্পেডো, যা একটি পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে পারে। ডুবোজাহাজ থেকে এটিকে নিক্ষেপ করা যেতে পারে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত ধরে ২০১৮ সালে ছ’টি নতুন সুপার-ওয়েপনের মধ্যে একটি হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে এই অস্ত্রটির। মনে করা হচ্ছে ২০২৭ সালে এটি রাশিয়ার নৌবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হবে।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে, রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা টিএএসএস বা টাস জানিয়েছিল, রাশিয়া পোসাইডন নামে দীর্ঘপাল্লার, পারমাণবিক শক্তিচালিত, পারমাণবিক অস্ত্রধারী টর্পেডোর প্রথম সেট তৈরি করেছে। পোসাইডন ১০০ নট (প্রতি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার) অভূতপূর্ব গতিতে ছুটতে সক্ষম। প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লা দিতে পারে টর্পে়ডোটি এবং সমুদ্রতলের ১ হাজার মিটার গভীরতায় গিয়ে কাজ করতে পারে পারমাণবিক শক্তিচালিত টর্পেডোটি।
অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর এই অস্ত্রকে আরও ক্ষুরধার করে তোলা হয়েছে বলে একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। ‘পোসাইডন’ দুই মেগাটন পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারে এবং এর বিস্ফোরণে তেজস্ক্রিয় সুনামি হতে পারে। ২০২২ সালের মে মাসে, রাশিয়ার এক সঞ্চালক দাবি করেছিলেন যে এই অস্ত্র ৫০০ মিটার উঁচু তেজস্ক্রিয় সুনামির মাধ্যমে গোটা ইংল্যান্ডকে ডুবিয়ে দিতে সক্ষম।
স্থলপথ ও আকাশপথে মস্কোর পারমাণবিক ক্ষমতা আমেরিকা এবং পশ্চিমের অন্য দেশের সেনাবাহিনীকে ভয় ধরাতে সক্ষম। এর পাশাপাশি জলেও পারমাণবিক শক্তিধর হয়ে ওঠার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে জলের লড়াইয়ে কে এগিয়ে থাকবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব বহু দিনের। একে অপরকে যেন ধাওয়া করছে মহাশক্তিধর দুই দেশ। তবে দুই দেশের ডুবোজাহাজের এই ‘লুকোচুরি’ খেলা একেবারেই নতুন নয়। অতীতেও একই খেলা খেলেছে ওয়াশিংটন ও মস্কো। রাশিয়ার ডুবোজাহাজ দীর্ঘ সময় ভেসে না উঠলেই ধাওয়া করতে শুরু করে আমেরিকার নৌবাহিনী।
বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি, উত্তর কোরিয়ার কাছে ৫০টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, ৭০-৯০টি পরমাণু অস্ত্র বানানোর জন্য রসদও রয়েছে তাদের হাতে। পরমাণু অস্ত্রের পাশাপাশি ডুবোজাহাজ থেকে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র নিয়েও কাজ করছে তারা। কিমের এই রহস্যময় ডুবোজাহাজকে টক্কর দেওয়ার মতো অস্ত্র তাদের কাছে আছে কি না, তা জানতে কৌতূহলী আমেরিকা-সহ অন্য দেশগুলি।
কিম ২০১৯ সালে ঘোষণা করেন যে, উত্তর কোরিয়া এমন এক ডুবোজাহাজ বানাচ্ছে, যা পারমাণবিক শক্তিচালিত। এমনকি এটি নিজেও একটি পরমাণু অস্ত্র হিসাবে কাজ করবে। আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের এক যৌথ নৌ মহড়ার জবাব দিতে পিয়ংইয়ং সমুদ্রের তলদেশে ‘হাইল-৫-২৩’ পারমাণবিক অস্ত্রব্যবস্থার পরীক্ষা চালায় বলে ২০২৪ সালে দাবি উঠেছিল।
এই পারমাণবিক ডুবোজাহাজ বৈদ্যুতিক যুদ্ধসরঞ্জাম এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামে ঠাসা থাকবে বলেও জানিয়েছিলেন কিম। উপগ্রহের উপর নজরদারি করার ব্যবস্থাও নাকি থাকছে এই ডুবোজাহাজে, এমনটাই দাবি কিমের দেশের। কিমের এই ডুবোজাহাজকে কৌশলগত ডুবোজাহাজ বলে বর্ণনা করেছেন সে দেশের বিজ্ঞানীরা। উত্তর কোরিয়ার দাবি, তাদের হাতে মোট ৭১টি ডুবোজাহাজ রয়েছে। তবে এই নতুন পরমাণু ডুবোজাহাজ বাকি সব ডুবোজাহাজকে সহজেই কুপোকাত করবে, এমনটাই দাবি সে দেশের সামরিক কর্তাদের।
চলতি বছরের গোড়ায় উত্তর কোরিয়া ধারাবাহিক ভাবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করার পরই ওয়াশিংটনের তরফে একনায়ক কিম জং উনের ‘পরমাণু পরীক্ষার পরিকল্পনা’ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। চূড়ান্ত গোপনীয়তায় এই ধরনের পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় সাউথ কোরিয়া। প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোনও বিবৃতি না আসায় পিয়ংইয়ংয়ের এ ধরনের অস্ত্র আছে কি না, এ নিয়ে বিশ্লেষকেরা সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy