Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৫
Goddess Kali

কালীর বুকে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে শক্তির আরাধনা করেন আরামবাগের কালীশঙ্কর, নাচেন কাচের উপরেও

হুগলির আরামবাগের রতনপুর গ্রামে রয়েছে ‘বড়মা’র মন্দির। সেই মন্দিরেই থাকেন কালীশঙ্কর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২১ ১৭:২৯
Share: Save:

বঙ্গভূমি শক্তি সাধনার ক্ষেত্র। শাক্ত উপাসনার অন্যতম অভিমুখ দেবী কালিকার আরাধনা। কালী পূজার নিয়ম-বিধি তন্ত্রশাস্ত্র দ্বারা কঠোর ভাবে নির্ধারিত, নির্দেশিত। কিন্তু কালীপুজোর রাতে একটু অন্য রকম ভাবে পুজোয় মাতেন আরামবাগের রতনপুর গ্রামের কালীশঙ্কর সাঁতরা। মায়ের বুকের উপর পা দিয়ে দাঁড়িয়ে পুজো করার পাশাপাশি ভাঙা কাচের উপরেও নাচতে দেখা যায় তাঁকে। এই পুজো দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান রতনপুরে।

হুগলির আরামবাগের রতনপুর গ্রামে রয়েছে 'বড়মা'র মন্দির। সেই মন্দিরেই থাকেন কালীশঙ্কর। জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণ নন তিনি। কিন্তু তাতে তাঁর কালী সাধনায় কোনও বাধা পড়েনি। তবে পুজোর সময় প্রথা অনুসারে মন্ত্রপাঠ করেন না তিনি। কাঁসর-ঘণ্টা-শাঁখের আওয়াজে যখন গমগম করে ওঠে মন্দির চত্বর, তখন প্রতিমার বুকে পা তুলে দেন কাশীশঙ্কর। মন্ত্রের বদলে নিজের তৈরি সুরেই নিজের লেখা গান গেয়ে যান তিনি।

মায়ের বুকে পা তুলেই শেষ হয় না তাঁর আরাধনা। মূর্তির সামনে ভাঙা কাচ ছড়িয়ে রাখেন তিনি। প্রতিমার বুক থেকে পা নামিয়েই ভাঙা কাচে রাখেন। তার পর সেই সব কাচের টুকরোর উপরেই নাচতে থাকেন কালীশঙ্কর। ভাঙা কাচের উপর গড়াগড়িও দেন তিনি। এই দৃশ্য দেখতেই আশপাশের গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষ এসে ভিড় জমান বড়মার মন্দিরে। আগে এই পুজো ঘিরে মেলা বসত রতনপুরে। প্রচুর মানুষকে ভোগও খাওয়ানো হত। কিন্তু কোভিড অতিমারির কারণে ভোগ খাওয়ানো বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্দিরের সেবাইত সুশান্ত মালিক।

প্রতিমার বুকে পা দিয়ে দাঁড়ানো নিয়ে প্রশ্নও উঠছে। তিনি কেন এ ভাবে পুজো করেন? সেই প্রশ্নও উঠছে। জানা গিয়েছে, ছোটবেলায় কালীশঙ্কর ঠাকুর গড়তেন। সেই ঠাকুর তার তুলনায় আকারে অনেক বড় হয়ে যেত। তখন প্রতিমার বুকের উপর পা দিয়ে উঠে ঠাকুর গড়া শেষ করতেন। নিজে পুজোও করতেন। এই কাজ করতে পরিবারের লোকে নিষেধ করলেও শোনেননি তিনি। তার পর থেকেই তা করে চলেছেন কালীশঙ্কর। মূলত তাঁর এই অদ্ভুত পুজো দেখতেই অধিকাংশ মানুষ আসেন এই মন্দিরে। অনেকেই তাবিজ-কবজ বানান তাঁর কাছে। যদিও কালীশঙ্করের কাচের উপর নাচকে 'ভণ্ডামি' বলেছেন বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের আরামবাগ শাখার সম্পাদক নবকুমার মণ্ডল বলেছেন, ‘‘ধর্মের নামে মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে রোজগার করেন তিনি। ভণ্ডামি ছাড়া এটাকে আর কী বলা যায়।’’ অবশ্য স্থানীয় মানুষের কাছে কালীশঙ্করের কালী সাধনা অন্য মাহাত্ম্য বহন করে। তাঁরা এর মধ্যে ভক্তির প্রবল প্রকাশকেই দেখতে পান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy