দিল্লি পুলিশ আটক করে বাসে তোলার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। পাশেই রয়েছেন রাহুল গান্ধী, সঞ্জয় রাউতরা। ছবি: সংগৃহীত।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষের অভিযোগ, পুলিশ মহিলা সাংসদদের উপর বলপ্রয়োগ করেছে, চুল ধরে টেনেছে। সাগরিকার পোস্ট করা ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বাসের পিছনের আসনেই বসে রয়েছেন অসুস্থ মহুয়া। তাঁকে ঘিরে রয়েছেন অন্য মহিলা সাংসদেরা। মহুয়াকে জল খাওয়ানো হচ্ছে। বাসে ওঠার পরেই ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান হারান তিনি।
পুলিশ আটক করে বাসে তোলার পরেই ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন মহুয়া মৈত্র, আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ মিতালি বাগ। অসুস্থ হয়ে পড়েন এসপির এক সাংসদও। সাংসদদের অসুস্থতার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে গিয়ে খোঁজখবর নেন রাহুল। বাস থেকে নেমে এসপির অসুস্থ সাংসদকে তুলে দেন অন্য গাড়িতে।
এটা সংবিধান বাঁচানোর লড়াই, বললেন রাহুল গান্ধী। স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রকাশের দাবি জানান তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর সরকারের প্রশংসা শোনা গিয়েছে কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের গলায়। সেই বেসুরে বাজা তারুরকেও দেখা গেল সোমবারের কর্মসূচিতে। রাহুল গান্ধীর তোলা ‘জরুরি প্রশ্ন’গুলির উত্তর কেন নির্বাচন কমিশন দেবে না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং মানুষের মনে দেখা দেওয়া ধন্দগুলি কাটাতে কমিশনের এগুলির উত্তর দেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।
ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকাতেই রাস্তায় অবস্থানে বসে পড়েছিলেন বিরোধী দলের সাংসদেরা। চেয়ার বসেছিলেন প্রবীণ সাংসদ শরদ পওয়ার, মল্লিকার্জুন খড়্গেরাও। অবস্থান তুলতে সাংসদদের আটক করা শুরু করল দিল্লি পুলিশ। আটক করে বাসে তোলা হয়েছে রাহুল, প্রিয়ঙ্কা, মহুয়া-সহ অন্য সাংসদদের।
বর্তমানে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-তে না থাকলেও সোমবার কর্মসূচিতে শামিল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল আম আদমি পার্টি (আপ)-ও।
পুলিশ মিছিল আটকাতেই রাস্তায় বসে পড়লেন বিরোধী জোটে বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন দলের সাংসদেরা। রাস্তায় বসেই কমিশনের বিরুদ্ধে ‘ভোট চুরি’র অভিযোগ তুলে স্লোগান দিচ্ছেন তাঁরা। বিভিন্ন ভাষার স্লোগান শোনা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন ভাষায় লেখা পোস্টারও। প্রতিটি পোস্টারেই কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। স্লোগান দিতে দেখা যাচ্ছে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে।
মিছিলে দেখা গেল বিভিন্ন ভাষায় লেখা পোস্টার। কমবেশি প্রতিটি পোস্টারেই ‘ভোট চুরি’ বন্ধ করার দাবি। কোনও কোনও পোস্টারে আবার এসআইআর-এর বিরুদ্ধে স্লোগান। তৃণমূল সাংসদদের হাতে থাকা ব্যানার এবং পোস্টারে নির্বাচন কমিশনকে বিঁধে লেখা হয়েছে, ‘চুপি চুপি ভোটের কারচুপি’।
প্রায় ৩০০ জন বিরোধী সাংসদের মিছিল পুলিশ আটকাতেই ব্যারিকেডের উপর উঠে বিক্ষোভ। বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন মহিলা সাংসদেরা। ‘মোদী সরকার হায় হায়’ স্লোগান দিচ্ছেন মহুয়া মৈত্র, সাগরিকা ঘোষ, সুস্মিতা দেবরা। ব্যারিকেড টপকে অপর প্রান্তে চলে গেলেন অখিলেশ যাদব।
সংসদ ভবন থেকে রাহুল, প্রিয়ঙ্কা, ডেরেক, অখিলেশদের মিছিল কিছুটা এগোতেই ব্যারিকেড দিয়ে আটকাল দিল্লি পুলিশ।
‘ভোট চুরি বন্ধ করো’, বিরোধী সাংসদদের মিছিল থেকে উঠল স্লোগান।
বাংলায় লেখা ব্যানার নিয়ে মিছিল তৃণমূল সাংসদদের। ছবি: সংগৃহীত।
নতুন সংসদ ভবনের মকর দ্বারের সামনে জড়ো হলেন বিরোধী সাংসদেরা। তার পরেই মিছিল করে নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে মিছিল করে যাওয়ার কথা তাঁদের। রয়েছেন কংগ্রেস, তৃণমূল, শিবসেনা (উদ্ধব), সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি (শরদ)-র সাংসদেরা।
মিছিল শুরুর আগে সংসদ ভবনের মকর দ্বারের সামনে জমায়েত বিরোধী সাংসদদের। রয়েছেন শতাব্দী রায়, রাহুল গান্ধী, ডেরেক ও’ব্রায়েন, অখিলেশ সিংহ যাদবেরা। ছবি: সংগৃহীত।
সোমবার লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই এসআইআর নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিরোধী সাংসদেরা। হইচইয়ের জেরে সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশনই দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি করে দেওয়া হয়।
সমাজবাদী পার্টির সাংসদ রামগোপাল যাদব দিল্লি পুলিশের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, “দিল্লির রাস্তায় হাঁটার জন্য সাংসদদের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। সাংসদদের রাস্তায় নামা যদি সত্যিই ঝুঁকির কারণ হয়ে থাকে, তা হলে এই প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকাই তো অর্থহীন।”
রবিবারই দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র তরফে সংসদ ভবন থেকে কমিশনের দফতর পর্যন্ত মিছিল করে যাওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়নি। প্রসঙ্গত দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন।
বাংলা ভাষা ও বাংলাভাষীদের উপর আক্রমণের অভিযোগের আবহে কমিশন ঘেরাও কর্মসূচিতেও ভাষার বৈচিত্র তুলে ধরতে চাইছে বিরোধীরা। বিরোধী দলগুলির সূত্রে খবর, বাংলা, ইংরেজি, তামিল, মরাঠি, মালয়লম, হিন্দি— এই সমস্ত ভাষায় প্ল্যাকার্ড থাকবে বিরোধী সাংসদদের হাতে। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল তৈরি করছে বাংলায় লেখা প্ল্যাকার্ড। কংগ্রেসের দায়িত্ব ইংরেজি এবং মালয়লম ভাষায় প্ল্যাকার্ড তৈরি করার। তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে তৈরি করবে তামিল ভাষায় প্ল্যাকার্ড। হিন্দির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-কে। আর মরাঠি ভাষায় স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড তৈরি করছে শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) শিবির।
সোমবার সকাল ১১টাতেই সংসদের দুই কক্ষ লোকসভা এবং রাজ্যসভা অচল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধী শিবির। তার পর সাড়ে ১১টায় সংসদের মকরদ্বারের সামনে জমায়েত করবেন বিভিন্ন বিরোধী দলের প্রায় ২০০ সাংসদ। সেখান থেকেই মিছিল করে তাঁরা যাবেন নির্বাচন কমিশনের সদর দফতর নির্বাচন সদন পর্যন্ত। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ ২০০ জন সাংসদকে মিছিল করে কমিশন দফতর পর্যন্ত যেতে দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ী অনেকেই। তৃণমূলের এক সাংসদ একান্ত আলোচনায় বলেন, ‘‘মনে হয় না ওরা যেতে দেবে! মাঝপথ থেকেই পুলিশ সাংসদদের আটক করতে পারে।’’
ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সোমবার দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতর ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছে বিরোধী দলগুলি। এসআইআর-এর কারণে বিহারের ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। বিহারের ভোট চলতি বছরের শেষে। বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, অসম, তামিলনাড়ুতেও বিধানসভা ভোট। বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশনকে বিজেপি ব্যবহার করছে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেছেন, ভোট চুরি হচ্ছে। যদিও তা উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। এসআইআর নিয়ে মামলাও হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত এসআইআর প্রক্রিয়ায় এখনও কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। তবে কমিশনকে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। মামলার শুনানি চলছে। এই আবহেই সোমবার বিরোধীরা কমিশন অভিযান করতে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy