এই সেই জলাশয়।
নরেন্দ্রনাথ দত্ত অর্থাৎ স্বামী বিবেকানন্দ আঁটপুরে এসেছিলেন তিন বার। ১৮৮৬ সালের ডিসেম্বরে, তার পরের মাসে এবং ১৮৮৯-এর ফেব্রুয়ারিতে। প্রথম বার এসেই সৃষ্টি করেছিলেন ইতিহাস। সে বার ২৪ ডিসেম্বর রাতে গুরুভাই বাবুরাম মহারাজের পৈতৃক ভিটায় নরেন্দ্রনাথ-সহ ন’জন শ্রীরামকৃষ্ণ পার্ষদ ধুনি জ্বালিয়ে সন্ন্যাস গ্রহণের সঙ্কল্প করেছিলেন। সেই পবিত্র ভূমিতে এখন তৈরি হয়েছে প্রতিজ্ঞা মন্দির বা ধুনিমন্দির।
আঁটপুরে এলেই ঘোষেদের একটি সরোবরে নরেন্দ্রনাথ স্নান করতেন এবং সাঁতার কাটতেন। শ্রীগঙ্গাধর শিবমন্দিরের পাশ দিয়ে ঘোষবাড়ির পশ্চিম দিকের আঁকাবাঁকা পথ ধরে ধুনিমণ্ডপ থেকে কিছুটা দূরে ঘোষেদের বিরাট দিঘিটির অবস্থান। স্থানটি বেশ মনোরম ও নির্জন। এক দিন সকালে নরেন্দ্র ও তাঁর গুরুভাইরা ওই সরোবরে স্নানে গিয়েছেন। সকলে সাঁতার কাটতে কাটতে খুব আনন্দ করছেন। তাঁদের মধ্যে সাঁতারে অপটু ছিলেন সারদা মহারাজ (পরবর্তীকালে স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দ)। সাঁতার কাটার সময়ে তিনি গভীর জলে ডুবে যাচ্ছিলেন। নিরঞ্জন মহারাজ অর্থাৎ স্বামী নিরঞ্জনানন্দ তাঁকে উদ্ধার করেন। নরেন্দ্রনাথ ও তাঁর গুরুভাইরা শুশ্রূষা করেন।
স্বামী বিবেকানন্দের স্নানের পুণ্য স্মৃতি জড়িত থাকায় এই সরোবরের নাম হয় ‘নরেন্দ্র সরোবর’। অনেকে ‘স্বামীজিদের স্নানের দিঘি’ও বলেন। এখন এই সরোবরে একটি বড় স্নানঘাট তৈরি করা হয়েছে। প্রতি বছর ব্রহ্মচারী অবস্থা থেকে সন্ন্যাস গ্ৰহণের পরে নবীন সন্ন্যাসীরা আঁটপুর মঠ দর্শনে এসে দল বেঁধে নরেন্দ্র সরোবরে আনন্দ করে স্নান করেন, যে দৃশ্য দেখার জন্য আশপাশের লোকজন ভিড় করেন।
(তথ্য: সন্দীপ সিংহ, প্রধান শিক্ষক, জামাইবাটী উচ্চ বিদ্যালয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy