Advertisement
২৮ এপ্রিল ২০২৪
Government Schools

সরকার-পোষিত স্কুলে খামতি মেটাবে বিনিময় প্রথা

শিক্ষা দফতরের এক কর্তার ব্যাখ্যা, কোনও এলাকার ১০টি স্কুলকে নিয়ে একটি ‘ক্লাস্টার’ তৈরি করা হবে। তার মধ্যে যে স্কুলের পরিকাঠামো সব চেয়ে উন্নত, সেটিই হবে প্রধান স্কুল।

An image of classroom

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ ০৭:২০
Share: Save:

শিক্ষার বিনিময় প্রথার মাধ্যমে এ বার সরকার-পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিকে বাঁচিয়ে তোলার প্রচেষ্টা শুরু করল শিক্ষা দফতর। যে স্কুলের যা খামতি, তা মিটিয়ে নিতে সাহায্য করবে তার পড়শি স্কুল। তবে, পরিকাঠামোর উন্নতি না করে এই ভাবে বিনিময় প্রথার মাধ্যমে স্কুলের খামতি মেটানো কতটা সম্ভব, সেই প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষকদের একাংশের মধ্যেও।

কী ভাবে হবে পড়াশোনার এই বিনিময় প্রথা? শিক্ষা দফতরের এক কর্তার ব্যাখ্যা, কোনও এলাকার ১০টি স্কুলকে নিয়ে একটি ‘ক্লাস্টার’ তৈরি করা হবে। তার মধ্যে যে স্কুলের পরিকাঠামো সব চেয়ে উন্নত, সেটিই হবে প্রধান স্কুল। ধরা যাক, ওই ১০টির মধ্যে কোনও একটি স্কুলে হয়তো ইংরেজির শিক্ষক নেই। সে ক্ষেত্রে অন্য স্কুলগুলির মধ্যে যেখানে ইংরেজির শিক্ষক রয়েছেন, সেখান থেকে এক শিক্ষক গিয়ে প্রথম স্কুলটিতে ইংরেজি পড়িয়ে আসবেন। একই ভাবে ওই ১০টি স্কুলের মধ্যে যেখানে ইতিহাসের শিক্ষক নেই, সেখানে ইতিহাস পড়াতে যাবেন অন্য একটি স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এই ভাবেই একটি এলাকার স্কুলগুলি একে অপরের সঙ্গে বিনিময় প্রথার মাধ্যমে নিজস্ব খামতি মেটানোর চেষ্টা করবে।

যেমন, বেলগাছিয়া-দমদম এলাকার ১০টি স্কুলকে নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ‘হাব অব লার্নিং’। তাদের মধ্যে দমদম রোড গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড হাই স্কুল ফর গার্লসের পরিকাঠামো উন্নত হওয়ায় সেটিই হয়েছে প্রধান স্কুল। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রূপশ্রী ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের পরিকাঠামো ভাল থাকায় এটিই প্রধান স্কুল। কোন স্কুলের কী খামতি আছে, তা দেখে আমরা সেই স্কুলে সেই ভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাঠাচ্ছি। আবার আমাদের স্কুলের ল্যাবরেটরি তুলনায় ভাল হওয়ায় অন্য স্কুলের পড়ুয়ারা তা ব্যবহারের জন্য আমাদের স্কুলে আসতে পারে। একসঙ্গে বেশ কিছু স্কুল মিলে পড়াশোনার সঙ্গে সম্পর্কিত নানা অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হচ্ছে।’’

যেমন, সম্প্রতি বেলগাছিয়া মনোহর অ্যাকাডেমিতে বাংলা ও ইংরেজি নিয়ে পাঠ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। গণিত সংক্রান্ত নানা প্রতিযোগিতাও হয়। ওই স্কুলের শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে এলাকার আশপাশের ৮টি স্কুলের পড়ুয়ারা এসে বাংলা এবং ইংরেজির পাঠ্যবই থেকে পাঠ করে শুনিয়েছে। অঙ্কের ফর্মুলার নানা চার্ট তৈরি করেছে তারা।। কেউ কেউ কবিতা পড়েছে। নাটকও করা হয়েছে। এই কর্মশালায় আমাদের পড়ুয়ারা যেমন উপকৃত হল, তেমনই অন্য স্কুলের পড়ুয়ারাও উপকৃত হয়েছে। এটা খুব ভাল উদ্যোগ।’’

তবে, প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলছেন, ‘‘বিনিয়ম প্রথার মাধ্যমে স্কুলগুলির সাময়িক সমস্যার সমাধান হতে পারে। কিন্তু যে সব স্কুল পরিকাঠামো, শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে, সেখানে স্থায়ী সমাধানের জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE