Advertisement
০৩ মে ২০২৪

নার্গিস নোবেলের যোগ্য নন, দাবি ইরানের

ধর্মীয় শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হওয়ায় ১৩ বার গ্রেফতার হয়েছেন নার্গিস। তার মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন পাঁচ বার। তাঁর শাস্তি, মোট ৩১ বছরের জেল ও ১৫৪ ঘা চাবুক।

ইরানের জেলবন্দি মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মহম্মদি।

ইরানের জেলবন্দি মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মহম্মদি। —ছবি : সংগৃহীত

সংবাদ সংস্থা
তেহরান শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৫৪
Share: Save:

২০২৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন ইরানের জেলবন্দি মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মহম্মদি। তার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিবাদে সরব হল ইরানের প্রশাসন। তাদের দাবি, এই পুরস্কার রাজনৈতিক ভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। প্রশাসনের সুরে সুর মিলিয়েছে ইরানের গণমাধ্যম। দাবি একই, এই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা নার্গিসের নেই। তাঁকে তাঁর দেশ, অর্থাৎ ইরানেই কেউ চেনে না।

পুরস্কার দেওয়ার সময় নোবেল কমিটি জানিয়েছিল, ইরানে মেয়েদের উপরে চলা দমন-পীড়নের প্রতিবাদের পাশাপাশি মানবাধিকার ও সকলের জন্য স্বাধীনতার দাবিতে ৫১ বছরের নার্গিসের যে নাছোড় লড়াই, তারই স্বীকৃতি এই পুরস্কার। সেই প্রেক্ষিতেই ইরানের দাবি, পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে ইরানের নিজস্ব নীতিতে নাক গলানোর চেষ্টা করছে পশ্চিমের দেশগুলি। পাশাপাশি, তারা মানবাধিকারে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টাও করছে। নার্গিস একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। মানবাধিকারের নামে তিনি ইরানের ক্ষতি চাইছেন, এমন দাবি ইরানের সরকারি গণমাধ্যমের।

ধর্মীয় শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হওয়ায় ১৩ বার গ্রেফতার হয়েছেন নার্গিস। তার মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন পাঁচ বার। তাঁর শাস্তি, মোট ৩১ বছরের জেল ও ১৫৪ ঘা চাবুক। এমনকি, নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সময়েও তিনি ইরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে বন্দি। মহিলাদের পর্দা-প্রথার অবসান, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য লড়ছেন তিনি। বলা চলে, মহিলাদের মানুষ হিসেবে অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে শামিল নার্গিস। এর পাশাপাশি ইরান থেকে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার লড়াইয়েও শামিল তিনি। মৃত্যুদণ্ড-বিরোধী আন্দোলনের জেরেই ১৬ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর। শেষ বার গ্রেফতার হন গত নভেম্বরে, এক প্রতিবাদীর স্মরণসভায় যোগ দেওয়ার পরে। তবে, তাতেও তাঁকে দমিয়ে রাখা যায়নি। পুরস্কার পেয়েছেন এই খবর জানার পরে জেল থেকেই তাঁর একটি ভয়েস রেকর্ড নোবেল কমিটির কাছে— তাতে স্পষ্ট উচ্চারিত ছিল ‘জ়ান-জ়িন্দগি-আজ়াদি’! প্রসঙ্গত, নোবেল শান্তি পুরস্কারের সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে এই স্লোগান দিয়েই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান যতই প্রতিবাদ করুক, যতই ধুয়ো তুলুক যে নার্গিসকে সে দেশে কেউ চেনে না। আদতে মানুষের জন্য লড়াই যিনি করেন, তাঁকে সাধারণ মানুষই চেনে অন্তর থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE